দেশের বেসরকারি খাতের তালিকাভুক্ত আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেডকে অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে শ্রীলংকার আমানা ব্যাংক পিএলসি। মূলত শ্রীলংকার ব্যাংকটির প্রভাবশালী শেয়ারহোল্ডার ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) গ্রুপ আইএফআইসিকে তাদের অংশীদার বানাতে চাইছে। প্রস্তাব পেলেও এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আইএফআইসি ব্যাংক। শ্রীলংকার চলমান ডলার সংকটের কারণে এ বিষয়ে ধীরে এগোতে চাইছে ব্যাংকটির পর্ষদ।
আমানা ব্যাংকের ২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বর্তমানে ব্যাংকটির ইকুইটি মূলধন ১ হাজার ৮১ কোটি শ্রীলংকান রুপি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার শর্ত পূরণে ২০১৭ সালে ব্যাংকটি রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বাড়িয়ে ১ হাজার কোটি রুপিতে উন্নীত করে। কভিড-১৯-এর কারণে শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে মূলধনের শর্ত পূরণে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকটিকে ২০২২ সালের মধ্যে এর মূলধন ২ হাজার কোটি রুপিতে উন্নীত করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ শর্ত পূরণের জন্য বর্তমানে যথোপযুক্ত বিকল্প মূল্যায়ন করছে আমানা ব্যাংকের পর্ষদ। আইএফআইসিকে দেয়া প্রস্তাবে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে তাদের ব্যাংকটির পর্ষদে যুক্ত করার পরিকল্পনার কথাও বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইএফআইসি ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, আরো বেশ কয়েক মাস আগেই আমানা ব্যাংকের অংশীদার হওয়ার জন্য আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছিল। মূলত আইডিবির মাধ্যমেই প্রস্তাবটি এসেছে। তারা চাইছে আইএফআইসিকে অংশীদার করতে। এ প্রস্তাবের খুঁটিনাটি বিভিন্ন দিক নিয়ে গত কয়েক মাস পর্যালোচনা করা হয়েছে। এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ডলার সংকট ও শ্রীলংকার নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমরা এ বিষয়ে ধীরে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) তালিকাভুক্ত আমানা ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। বর্তমানে ব্যাংকটির বাজার মূলধন ১ হাজার ৪০ কোটি রুপি। ব্যাংকটির শেয়ার সর্বশেষ ৪ রুপিতে লেনদেন হয়েছে। ২০২০ সাল শেষে আমানা ব্যাংকের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১৭ কোটি রুপি। ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ৪ দশমিক ৭৯ রুপি। ২০২০ সালে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ছিল ৪৬ কোটি রুপি।
আমানা ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডিং পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমানে ব্যাংকটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২৬০ কোটি ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ১৫৫। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৬৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে অনিবাসী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। ব্যাংকটির সবচেয়ে বেশি শেয়ার রয়েছে আইডিবির কাছে। এর মধ্যে এলবি গ্রোথ ফান্ড (লাবুয়ান) এলএলপি, যা আইডিবি গ্রুপের একটি অংশ তাদের কাছে রয়েছে ২৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ শেয়ার। আইডিবির নামে ব্যাংকটির আরো ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ইসলাম মালয়েশিয়া বারহাদের কাছে ৭ দশমিক ২২, বাংলাদেশের এবি ব্যাংক লিমিটেডের কাছে ৭ দশমিক ২২, আকবর ব্রাদার্স (প্রাইভেট) লিমিটেডের কাছে ৬ দশমিক ৩১ ও মিলেনিয়াম ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্টস পিটিই লিমিটেডের কাছে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হোসেন আহমেদ ইসমাইলের কাছে ৯ দশমিক ৯৯, মোহাম্মদ হাজি ওমরের কাছে ৮ দশমিক ৯৩ ও ফারুক কাশিমের কাছে ৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বাংলাদেশের এবি ব্যাংক লিমিটেড ও আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে শ্রীলংকার আমানা ব্যাংকের আরো আগে থেকেই ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। এ দুই ব্যাংক বাংলাদেশে আমানা ব্যাংকের করেসপন্ডিং ব্যাংক হিসেবে কাজ করছে।
এর আগে এ বছরের জুলাইতে নেপাল বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা বিনিয়োগ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় আইএফআইসি ব্যাংকের পর্ষদ। নেপালের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই এ বিনিয়োগ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৯৪ সালে উদ্যোক্তা হিসেবে নেপাল বাংলাদেশ ব্যাংকে বিনিয়োগ করেছিল আইএফআইসি ব্যাংক। নেপালের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আইএফআইসি ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে গঠন করা ব্যাংকটি ১৯৯৫ সালে নেপাল স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। নেপাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদে চেয়ারম্যান হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংকের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে এআরএম নাজমুস সাকিব দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ব্যাংকটির পর্ষদে আইএফআইসির মনোনীত পরিচালক হিসেবে রয়েছেন এম শাহ আলম সারোয়ার ও কামরুন নাহার আহমেদ।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়