আজ ২৮ মে, বিশ্ব মাসিক সচেতনতা দিবস। ২০১৪ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে দিবসটি। যেহেতু নারীদের রজঃচক্র গড়ে ২৮ দিন পর পর হয়, তাই সে প্রতীক হিসেবে দিবসটি পালনে ২৮ তারিখকেই বেছে নেয়া হয়েছে। বার্ষিক এ দিবসটি মূলত মাসিক চলাকালে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পালিত হয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় মাসিক চলাকালে পরিচ্ছন্ন থাকতে যেসব সামগ্রী প্রয়োজন হয়, দামের কারণে সেগুলোর প্রাপ্যতা সীমিত থাকে। আবার সামাজিক নানা রীতিনীতির কারণে সবসময় তারা সেগুলো ব্যবহারও করতে পারে না।
গবেষণা বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় মাসিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য ব্যবহূত পণ্যগুলো সহজলভ্য না হওয়ায় প্রতি মাসে অনেক শিক্ষার্থী বাড়িতে থাকতে বাধ্য হয়। পানি ও যথাযথ শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় ঘরের বাইরে বের হওয়া যেকোনো নারীর জন্য সমস্যাজনক।
এসবের পাশাপাশি মাসিক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা এবং যথাযথ শিক্ষারও অভাব রয়েছে। মাসিক সচেতনতা দিবসে মাসিকের সময় পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার গুরুত্ব সম্পর্কে প্রকাশ্যে আলোচনা হয়। গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়।
মূলত ২০১২ সাল থেকে মাসিক নিয়ে আলোচনার বিষয়ে নীরবতা ভাঙতে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন সামাজিক ও নারী অধিকারবিষয়ক সংগঠন। তবে বাংলাদেশের মতো দেশে এখনো নারীর জীবনের নিয়মিত এ বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা হয় না। এমনকি প্রকাশ্যে দোকান থেকে মাসিকের সময় ব্যবহূত স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতেও স্বস্তিবোধ করেন না বেশির ভাগ নারী।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের এ বিড়ম্বনায় সবচেয়ে বেশি পড়তে হয়। ক্লাস চলাকালে হুট করে মাসিক শুরু হলে নিজের কাছে যদি স্যানিটারি ন্যাপকিন না থাকে তাহলে বিপদে পড়ে যায় তারা। কেবল স্কুল-কলেজই নয়, ঘরের বাইরে বের হতে হয়—এমনসব নারীর জন্যই পিরিয়ড স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার মূল বাধা ন্যাপকিনের সহজলভ্যতা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা কর্মক্ষেত্রে যেখানে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটাতে হয় সেখানে স্যানিটারি ন্যাপকিনের সহজলভ্যতা না থাকার কারণে তাদের অধিকাংশ নারীই দীর্ঘ সময় ন্যাপকিন ব্যবহারজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন। এছাড়া দেশের অধিকাংশ নারীর মধ্যে আছে পিরিয়ডের সময় কাপড় ব্যবহারের মতো অস্বাস্থ্যকর বিষয় নিয়ে সচেতনতার অভাব।
নারীদের এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্র্যান্ড ফ্রিডমের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে ভেন্ডিং মেশিন। যা কয়েক বছর ধরে নারীদের পিরিয়ড স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়াতে অগ্রগামী ভূমিকা রাখছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনামূল্যে স্থাপন করা হয় দেশের প্রথম স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন। প্রাথমিকভাবে ১০টি ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্কালীন ১৫ হাজার নারী শিক্ষার্থীর জন্য সাশ্রয়ী দামে স্যানিটারি ন্যাপকিনের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা হয়।
এর পর থেকে বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে শতাধিক প্রতিষ্ঠানে ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে ৩৫ লাখেরও বেশি নারী পাচ্ছেন যেকোনো সময়ে সাশ্রয়ী দামে স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার সুবিধা। মাত্র ১০ টাকায় এখন যেকোনো সময়ে মেয়েরা ভেন্ডিং মেশিন থেকে ন্যাপকিন কিনতে পারেন। মেশিনে একটি ১০ টাকার নোট প্রবেশ করালে সহজেই বেরিয়ে আসে এক পিস ন্যাপকিন। ফ্রিডমের এ চমত্কার উদ্যোগ মেয়েদের জীবনে এনে দিয়েছে সাশ্রয়ী ন্যাপকিন ব্যবহারের সহজলভ্যতা।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়