সরকারের জ্বালানি বিভাগের মাধ্যমে তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি দাবি করেছে, মূল্য বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়া বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইন মেনে করতে হবে। জ্বালানি বিভাগের এই দাম বৃদ্ধির কোনও আইনি স্বীকৃতি নেই।
সোমবার (২০ জুন) দুপুরে অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম। এসময় স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, এমএম আকাশ ছাড়াও ক্যাবের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার দাবি করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রতিদিন ১০০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। জ্বালানি তেলের মূল্য না বাড়িয়ে এই অর্থের সংস্থান কীভাবে হবে জানতে চাইলে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, আমরা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা না করার বিষয়ে কথা বলছি না। আমরা বলছি সরকারের আইন মেনে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এটি করতে হবে। এজন্য বিইআরসিতে শুনানি করে দাম বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ‘দিনে ৯০ কোটি টাকা লোকসানের অজুহাতে এই দাম বাড়ানো হচ্ছে। এতে ভোক্তারা চিন্তিত। বিআরসি আইনের ২২ এবং ৩৪ ধরা মতে, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির দায়িত্ব তাদের। ২৭ ধারা মতে বিপিসি বিইআরসির লাইসেন্সি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিইআরসি এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। পেট্রোলিয়াম জাত পণ্যের দাম বিইআরসি নির্ধারণ করলে বোঝা যেত বিপিসি লিটার প্রতি কত বেশি দাম নিচ্ছে।
জ্বালানি তেলের লুণ্ঠন দূর করতে হলে বিইআরসির মাধ্যমে দাম নির্ধারণের কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন।
অধ্যাপক শামসুল আলম আরও বলেন, গত বছর ৩ অক্টোবর ডিজেল এবং কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাব উচ্চ আদালেত রিট পিটিশন দায়ের করেছে। এই মামলা শুনানি চলমান থাকাকালে আবার বিপিসি নিজেই ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়িয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বলা যায়, জ্বালানি খাতে আইনের শাসন অচল।
জ্বালানি বিভাগ এবং বিপিসির পরিবর্তে সব ধরনের জ্বালানির দাম বিইআরসির মাধ্যমে বৃদ্ধি করতে হবে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এছাড়া বিপিসির সকল হিসাব মহা হিসাব নিরীক্ষকের মাধ্যমে অডিট করাতে হবে। নিজস্ব উদ্যোগে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করাতে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্র অবৈধভাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে অভিযোগ করেন অধ্যাপক বদরুল ইমাম। তিনি বলেন, বিইআরসি থাকতে রাষ্ট্র কীভাবে আইন অমান্য করে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করে। আমরা অনেক দিন ধরে বলে আসছিলাম রাষ্ট্র আমাদের কাছ থেকে বাড়তি গ্যাসের বিল আদায় করে। এখন বিইআরসি সেটি মেনে নিয়েছে। আগে আমাদের কাছ থেকে ৭৭ ঘনমিটার গ্যাসের দাম নেওয়া হতো। এখন বিইআরসি ৬০ ঘনমিটারে নামিয়ে এনেছে।
তিনি বলেন, বিপিসির বলা উচিত তারা লুণ্ঠন করছে না।
এমএম আকাশ বলেন, স্বচ্ছ আইনের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করতে হবে। বিইআরসিতে সেই আইন রয়েছে। কিন্তু বিইআরসি কি কোন দাম নির্ধারণ করেছে। যদি না করে থাকে তাহলে বিপিসি কিভাবে দাম নির্ধারণ করে। বিপিসির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা আদালতে গেছি। আদালত তাদের প্রশ্ন তুলেছে। এর ভিত্তিতে সরকার তাদের কোন প্রশ্ন করেছে, করেনি। কারণ এটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকার যদি নিজেই নিজের আইন ভাঙ্গে তাহলে তারা একটা আইন করুক ‘সরকার যা খুশি তাই করতে পারবে।‘
বিপিসি বাস ট্রাক-মালিক অ্যাসোসিয়েশন কি না- প্রশ্ন তুলে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘বিপিসি কীভাবে আইন ভাঙে। তারা সরকারের মধ্যে আরেকটি সরকার করেছে। এখন সংবাদমাধ্যমের সরকারের কাছে জানতে চাওয়া উচিত কেন তারা আইন ভাঙছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব চারটি দাবি তোলে। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- জ্বালানি বিভাগ বা বিপিসির পরিবর্তে ডিজেল, ফার্নেসওয়েল এবং কেরোসিনের মূল্য পরিবর্তন বা সমন্বয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের শুনানির ভিত্তিতে বৈধভাবে বিইআরসি কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল দ্বারা বিপিসি'র আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তরল জ্বালানি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়াদি নিবিড় পর্যালোচনা করাতে হবে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়