বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন। পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণে কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে নতুন করে লকডাউন ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। নতুন করে আরোপ করার কথা ভাবছে আরো কয়েকটি দেশ। সংক্রমণের নতুন প্রবাহ এরই মধ্যে বৈশ্বিক পণ্য ও পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী কভিডের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া আবারো ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষক ও পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা।
এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসের যেসব ধরন শনাক্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রামক হিসেবে ধরা হচ্ছে ওমিক্রনকে। বিশ্বব্যাপী এমন এক সময়ে ধরনটির প্রাদুর্ভাব ছড়িয়েছে, যখন খ্রিস্ট ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন এগিয়ে আসছে। যদিও এ মুহূর্তে উৎসবের পরিবর্তে মহামারীর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বেশি জোর দিতে হচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকারকে।
জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে পূর্ণ লকডাউন থেকে শুরু করে নানা মাত্রায় সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোয় এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ওমিক্রন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জার্মানির স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা দেশটির সরকারের কাছে এরই মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপের আবেদন জানিয়েছেন। শুধু জার্মানি নয়, গোটা ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকা মহাদেশে ওমিক্রনে সংক্রমিতের সংখ্যা এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে জাপান এ মুহূর্তে ওমিক্রন নিয়ে মারাত্মক আতঙ্কে রয়েছে। দেশটির এক সামরিক ঘাঁটিতে এখন পর্যন্ত সংক্রমিতের সবচেয়ে বড় ক্লাস্টার শনাক্ত হয়েছে কমপক্ষে ১৮০ জনের। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য খাতেও এরই মধ্যে চাপ ফেলতে শুরু করেছে ওমিক্রনের সংক্রমণ প্রবাহ।
নিউজিল্যান্ড এরই মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলোর অন্যতম জারি করেছে। এরই মধ্যে দেশটির সীমান্ত ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে তাতেও দেশটিতে ওমিক্রনের সংক্রমণ প্রবাহ নিয়ে আতঙ্ক খুব একটা কমেনি। এর কারণ সম্পর্কে দেশটির জরুরি কভিড-১৯ মোকাবেলা বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ওমিক্রনই কভিডের সবচেয়ে সংক্রামক ধরন।
জার্মানির রবার্ট কচ ইনস্টিটিউট ফর ইনফেকশাস ডিজিজ গতকাল দেশটিতে অনতিবিলম্বে ‘সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মাত্রায়’ সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপের সুপারিশ করেছে। গতকালই দেশটির প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় নেতাদের এ নিয়ে বৈঠকে বসার কথা ছিল। দেশটিতে টিকা গ্রহণকারী ও আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদেরও সামাজিক বিধিনিষেধের আওতায় আনার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে জার্মানিতে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন আরোপের সম্ভাবনা অনেক কম।
অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সোমবার জানিয়েছেন, ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণে সম্ভাব্য যেকোনো পদক্ষেপ নিতে তিনি প্রস্তুত। পর্যটন ও আতিথেয়তাসহ ব্রিটিশ অর্থনীতির অন্যান্য খাতে
ধরনটির আঘাত এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এরই মধ্যে ওমিক্রনের আঘাতে বিপর্যস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ১০০ কোটি পাউন্ডের (১৩০ কোটি ডলার) অতিরিক্ত সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সরকার যদি ওমিক্রন প্রতিরোধে নতুন করে আরো কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করতে চায়, তাহলে তা ব্রিটিশ অর্থনীতির জন্য আরো মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে অর্থনীতি ও ব্যবসার জন্য প্রয়োজনমাফিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
ইউরোপের দেশ সুইডেন দেশটির কর্মীদের সম্ভব হলে ঘরে বসে কাজ করার (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) অনুরোধ করতে পারে। এছাড়া দেশটিতে সামাজিক বিধিনিষেধের বিষয়টিও আরো কঠোরভাবে পালন করা হতে পারে। এ বিষয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালিনা অ্যান্ডারসন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমি বুঝতে পারছি, অনেকেই আর বিষয়টিকে নিতে পারছেন না। কথাটি আমার ক্ষেত্রেও খাটে। কিন্তু আমাদের এখন ভাইরাসের নতুন ধরনের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। অর্থাৎ আমরা এখন সম্পূর্ণ নতুন এক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়