ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন স্বাগতিক ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রায় তিন সেশনেই কর্তৃত্ব করেছে ভারতীয় দল। প্রথম সেশনে ৬৪ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট হারিয়েই বাংলাদেশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারেনি।
লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে লিড নেওয়া গেলেও কাঙ্ক্ষিত প্রতিরোধ ছিল না ব্যাটে। জাকির হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নুরুল হাসানের বিদায়ে মনে হচ্ছিল লিড বুঝি শত রানও পার হচ্ছে না! কিন্তু লিটন দাসের লড়াকু ফিফটি ও তাসকিনের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ভারতকে ১৪৫ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ থেমেছে ২৩১ রানে।
৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল। দ্বিতীয় বলেই আসে প্রথম বাউন্ডারি। তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে সকালের দ্বিতীয় ওভারটি করতে আসেন অভিজ্ঞ অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এসেই প্রমাণ করেন নিজের কার্যকারিতা। শেষ বলটিতে শান্তকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আউট করেছেন। অবশ্য আগের ডেলিভারিতেও এলবিডাব্লিউর আবেদন হয়েছিল। আম্পায়ার আঙুল না তুললে ভারত রিভিউ নেয়। সাফল্য আসেনি যদিও। আগের ইনিংসে ২৪ রান করা নাজমুল হোসেন এবার ফিরেছেন ৫ রানে।
আগের ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া মুমিনুল এবারের কয়েক ওভারই টিকতে পেরেছেন। সিরাজের লেংথ বল বুঝতে না পারায় ব্যাটের কানায় বল লেগে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন ৫ রানে।
প্রথম ঘণ্টায় দুই উইকেট হারানোর পর সাকিব-জাকির মিলে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন। ২৫ রানও যোগ করেন তারা। কিন্তু শক্ত প্রতিরোধ গড়ার আগেই জুটি ভাঙে সাকিবের বাজে শট সিলেকশনে। উনাদকাটের লেংথ বলে হালকা পুশ করে ক্যাচ উঠিয়ে দিয়েছেন এক্সট্রা কাভারে। সাকিবের ক্যাচ নিয়েছেন গিল। বাংলাদেশ অধিনায়ক ৩৬ বল খেললেও ১৩ রান করতে পারেন মাত্র।
৫১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর লাঞ্চের আগে দলের ভরসা হয়ে উঠতে পারেননি অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও। অক্ষর প্যাটেলের ঘূর্ণি বল তিনি ব্যাক ফুটে ডিফেন্ড করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বল বেশি ভেতরে ঢুকে পড়ায় এলবিডাব্লিউ হতে হয় মুশফিককে। রিভিউ নিয়েও সাফল্য পাননি। ১৯ বল খেলা এই ব্যাটার ৯ রানে আউট হয়েছেন।
অভিজ্ঞদের ব্যর্থতার দিনে তখন একপ্রান্ত আগলে খেলেছেন জাকির হাসান। চট্টগ্রাম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান এই টেস্টেও প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। লিটনকে নিয়ে ৩২ রান যোগ করে ইনিংসে এগিয়ে যেতেও অবদান রাখেন তিনি। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির পরই শট খেলার তাড়নায় উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। উমেশ যাদবের বলে কাট করতে গিয়ে ডিপ থার্ডে ক্যাচ দিয়েছেন সিরাজকে। তাতে ১৩৫ বল খেলা জাকিরকে ৫১ রানে থামতে হয়েছে।
জাকিরকে থামানোর পর মেহেদী হাসান মিরাজকেও এলবিডাব্লিউ করে বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে ছাড়েন অক্ষর প্যাটেল। অবশ্য তার আগে লিটনকেও ফেরানোর সুযোগ হতাছাড়া না করলে স্বাগতিকদের অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারতো। অক্ষরের ঘূর্ণিতেই স্লিপে দুইবার ক্যাচ উঠেছিল লিটনের। কিন্তু কোহলি সেটি নিতে পারেননি।
সেই লিটন পরে জীবন কাজে লাগিয়েই লড়াকু এক ফিফটি করে লিডটাকে বাড়িয়ে নিতে ভূমিকা রেখেছেন। ক্যারিয়ারের ১৫তম ফিফটি পূরণের মুহূর্তেও তার ক্যাচ নিতে পারেননি কোহলি। অবশ্য লিড শত রান পার হতে নুরুল হাসান-লিটন দাসের আক্রমণাত্মক ৪৬ রানের জুটিই অবদান রেখেছে। নুরুলকে ৩১ রানে স্টাম্পড করিয়েছেন অক্ষর।
তার পর তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই অব্যাহত রাখেন লিটন। চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ১৯৫। তার পর দুজনের ৬০ রানের আগ্রাসী জুটি লিড আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রেখেছে। লিটনকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে জুটি ভেঙেছেন সিরাজ।
তিনবার জীবন পাওয়া লিটন শেষ পর্যন্ত ৯৮ বলে ৭৩ রানে ফিরেছেন। তার ইনিংসে ছিল ৭টি চার। লিটনকে ফেরানো গেলে শেষের প্রতিরোধও দুর্বল হয়ে পড়ে। নতুন নামা তাইজুলকে ১ রানে এলবিডাব্লিউ করেন অশ্বিন। তবে অপরপ্রান্ত থেকে পাল্টা আক্রমণে লিডটা ১৪৪ রানে নিয়ে যেতে অবদান রাখেন পেসার তাসকিন। খালেদ আহমেদ রান আউট হতেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে ২৩১ রানে। তাসকিন তখনও অপরাজিত ছিলেন ৩১ রানে
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়