মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত মাসেই ভারত সফরে আসেন। সফর চলাকালে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন তিনি। কথিত রয়েছে, ওই বৈঠকে তিনি রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনা নিয়ে আপত্তি তোলেন। কূটনৈতিক বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানাচ্ছে, আপত্তিটিকে আমলে নিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে বসেছে নয়াদিল্লিও।
পুরনো মিত্র ভারতের এ দোনোমনা ভাব টের পেয়ে ক্ষেপেছে রাশিয়াও। মস্কো এখন কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ভারতের চিরবৈরী পাকিস্তানের সঙ্গে। অবস্থা পর্যালোচনায় হিমালয় অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে আরেক দফা নাটকীয় পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। তারা বলছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর অর্থ হলো রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের দূরে সরে যাওয়া। সেক্ষেত্রে এস-৪০০-এর চালান ভারতের বদলে পাকিস্তানে চলে যাওয়াটাও বিচিত্র কিছু নয়।
মস্কো ও নয়াদিল্লির মধ্যকার মিত্রতা দীর্ঘদিনের। এ উষ্ণতার শুরু ভারতের স্বাধীনতার পর পরই। ওই সময়ের পর থেকেই আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতিতে বরাবরই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে পাশে পেয়েছে ভারত। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর সে সম্পর্কের উত্তরাধিকার বহন করেছে রাশিয়াও। দেশটি এখনো প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের সবচেয়ে বড় অংশীদার। বহির্বিশ্ব থেকে নয়াদিল্লির সংগৃহীত অস্ত্রের অর্ধেকের জোগানদাতা মস্কো। এছাড়া অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, মহাকাশ ও পরমাণু প্রযুক্তিসহ আরো অনেক ক্ষেত্রেই দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। বরাবরই দুই দেশ এ সম্পর্ককে উল্লেখ করে এসেছে ‘বিশেষ ও সুবিধাজনক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ হিসেবে।
বর্তমানে এ বন্ধুত্বে ফাটলের আশঙ্কা দেখতে পাচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। তারা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরেই এস-৪০০-এর প্রথম চালানটি ভারতে পৌঁছার কথা। কিন্তু ওয়াশিংটনের সঙ্গে কূটনৈতিক সখ্য বাড়ানোর আগ্রহ থেকে শেষ পর্যন্ত এ চুক্তি থেকে সরে আসতে পারে ভারত। সেক্ষেত্রে মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির প্রায় সাত দশকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইতিও ঘটে যেতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপমহাদেশে নতুন মিত্র হিসেবে ভারতের বৈরী পাকিস্তানকে কাছে টেনে নিতে পারে মস্কো। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সফরের মধ্য দিয়ে সে ইঙ্গিতই দেখতে পাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
এর আগে ২০১৮ সালের অক্টোবরে ভারত সফরে আসেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই সময় এস-৪০০ ক্রয়ে ৫২০ কোটি ডলারের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ভারত। এ চুক্তির অধীনে ভারতকে চার-পাঁচ রেজিমেন্ট এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স সরবরাহ করার কথা রাশিয়ার। চুক্তিটি সই হওয়ার পর থেকেই এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে এসেছে ওয়াশিংটন। এ আপত্তি সত্ত্বেও এতদিন চুক্তিটি থেকে সরে আসার কথা বিবেচনায় আনেনি নয়াদিল্লি।
অন্যদিকে গত বছরের মাঝামাঝি লাদাখ সীমান্তে চীন ও ভারতের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এরপর দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট অচলাবস্থায় দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নাটকীয় মোড় আসে। কূটনৈতিক সম্পর্কগুলো নতুন করে বিবেচনায় নিতে শুরু করে ভারত। উদ্যোগী হয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট বাঁধায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুনরুজ্জীবন ঘটে প্রায় বিস্মৃত কোয়াড জোটের।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়