ভোলা থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রামে অভিবাসন সবচেয়ে বেশি

সাল ১৯৭০, নভেম্বর মাসের ১২ তারিখ। রমজান মাস। সারা দিনই বৃষ্টি ছিল, সঙ্গে টানা বাতাস। উপকূলের ওপর দিয়ে ওই দিনটিতে ২০০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়। সৃষ্টি হয় জলোচ্ছ্বাস। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় দ্বীপজেলা ভোলাসহ উপকূলীয় অসংখ্য জনপদ। প্রাণহানি ঘটে ভোলার লক্ষাধিকসহ উপকূলের পাঁচ লাখ মানুষের। ভঙ্গুর যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ক্ষয়ক্ষতির খবরও পাওয়া যায় প্রায় এক সপ্তাহ পর।

স্বজন হারানোর স্মৃতি সেই সময়ে বেঁচে যাওয়াদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এখনো। সেদিন মুহূর্তের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় জনপদগুলোকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, মাঠঘাট এমনকি গাছের সঙ্গে ঝুলে ছিল শত শত মৃতদেহ। সেদিনের জলোচ্ছ্বাসে গৃহহীন হয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। স্বজন হারানোদের কান্নায় উপকূলের আকাশ-বাতাস ছিল ভারী।

ভোলার শরিফ মোল্লা জলোচ্ছ্বাসে স্বজন হারানোদের একজন। ওই সময় ১২ বছরের শরিফ ছিলেন পাঁচজনের পরিবারের বেঁচে যাওয়া একমাত্র সদস্য। তিনি সেদিনের ভয়াল স্মৃতির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ওই সন্ধ্যায় বাতাসের বেগ বাড়তে থাকে। রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে জলোচ্ছ্বাসের পানি ১৪ ফুট উঁচু বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গোটা এলাকা তলিয়ে দেয়। পানিতে ভেসে যায় অগণিত মানুষের মরদেহ। জলোচ্ছ্বাস গোটা জেলা তছতছ করে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে দিয়েছিল। এর মধ্যেই সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনিসহ পরিবারের আট সদস্য। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শরিফ মোল্লা ও তার দুই ভাইবোনসহ ঢাকায় চলে আসেন তাদের মা-বাবা। সেই থেকে পাঁচ সদস্যের পরিবারের ঠিকানা ঢাকা।

শরিফ মোল্লা ১৪ ফুট উঁচু পানির কথা বললেও ১২ নভেম্বরে জলোচ্ছ্বাসটি হয়েছিল ৮-১০ ফুট উচ্চতায়। কেউ গাছের ডালে, কেউ উঁচু ছাদে আশ্রয় নিয়ে কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পেলেও তিন-চারদিন অভুক্তই কাটিয়েছিলেন অনেকে। তত্কালীন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা অনেকটা দুর্বল থাকায় উপকূলের অনেক মানুষ ঝড়ের পূর্বাভাসই পায়নি। সত্তরের হারিকেনরূপী ঝড়টি উপকূলীয় ভোলা, বরিশাল, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, খুলনাসহ ১৮টি জেলায় আঘাত হানে। তবে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় ভোলাবাসীকেই। আর ওই ক্ষতিই অভিবাসনমুখী করে তোলে ভোলাবাসীকে। সাম্প্রতিক সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রামে অভিবাসন হওয়া ৩০ শতাংশ পরিবারই ভোলা ও বরিশাল জেলার।

প্রায় পাঁচ বছর আগে ভোলার লালমোহন উপজেলা থেকে ঢাকায় আসেন মুকুল হোসেন। কয়েক বছর মিরপুর দুয়ারীপাড়া বস্তিতে থেকেছেন রিকশাচালক মুকুল। ভোলায় থাকাকালে দৈনিক মজুরিতে ট্রলারে করে মাছ ধরার কাজ করতেন। তবে আয় কম হওয়ায় পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসেন তিনি। দুয়ারীপাড়ার ওই বস্তিতে মুকুল হোসেনের মতো আরো অন্তত ২০ পরিবার রয়েছে, যারা প্রত্যেকেই বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় এসেছেন। 

এই বিভাগের আরও খবর
এবার ঈদে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বে

এবার ঈদে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বে

ভোরের কাগজ
স্বাধীনতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীনতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নয়া দিগন্ত
বিআরটি প্রকল্পের ৭ ফ্লাইওভার চালু

বিআরটি প্রকল্পের ৭ ফ্লাইওভার চালু

যুগান্তর
আজ দেশে ফিরছেন মির্জা ফখরুল

আজ দেশে ফিরছেন মির্জা ফখরুল

নয়া দিগন্ত
চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারের টাকা সরানোর ঘটনায় ডিবির ৭ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত

চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারের টাকা সরানোর ঘটনায় ডিবির ৭ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত

প্রথমআলো
নাবিকদের উদ্ধারের চেষ্টায় সোমালিয়ান নেভি ও দস্যুদের মধ্যে গুলি বিনিময়

নাবিকদের উদ্ধারের চেষ্টায় সোমালিয়ান নেভি ও দস্যুদের মধ্যে গুলি বিনিময়

জনকণ্ঠ
ট্রেন্ডিং
  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া

  • অবিশ্বাস্য কীর্তিতে হাজার রানের ক্লাবে এনামুল বিজয়