করোনা মহামারির দেড় বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। এর মধ্যে ভালো খবর হলো, বৈশ্বিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবার যতটা গতি পাবে, এর আগে কোনো মন্দার পরের বছর তা এতটা গতি পায়নি। তবে এবারের পুনরুদ্ধারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বড় অর্থনীতিগুলোর প্রবৃদ্ধি যতটা হবে, উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর অতটা হবে না।
বিশ্বব্যাংকের এক ফিচার স্টোরিতে বলা হয়েছে, চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় অর্থনীতির কল্যাণে প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে। ২০২১ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রায় সব দেশের জন্য বৃদ্ধি করা হলেও অনেকেই এখনো কোভিডের সঙ্গে লড়াই করছে। অন্যদিকে এবার প্রবৃদ্ধির হার বাড়লেও প্রাক্মহামারি সময়ের পূর্বাভাসের তুলনায় জিডিপির আকার ৩ দশমিক ২ শতাংশ কম থাকবে। এ ছাড়া উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মাথাপিছু জিডিপি দীর্ঘ সময় প্রাক্মহামারি সময়ের সেরা অবস্থানের চেয়ে কম থাকবে। এদিকে বিশ্বের সবখানে মহামারি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তার প্রভাব আরও অনেক দিন অনুভূত হবে।
বাস্তবতা হলো, ২০২১ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির এক-চতুর্থাংশের জোগান দেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। বিপুল প্রণোদনার জোরে মার্কিন অর্থনীতি এখন বাড়বাড়ন্ত। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে টিকাদান কর্মসূচি জোর পাবে।
দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৮৪ সালের পর সর্বোচ্চ। চীনা অর্থনীতি তো গত বছর এত কিছু সত্ত্বেও সংকুচিত হয়নি। এ বছর দেশটির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। তারা এখন আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করছে। ফলে প্রবৃদ্ধির হার স্থিতিশীল থাকবে বলেই ধারণা।
উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ দাঁড়াতে পারে। রপ্তানির চাহিদা বৃদ্ধি ও উচ্চ পণ্যমূল্যের বদৌলতে এটি ঘটবে। তবে চীনকে বাদ দিলে এই দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৪ শতাংশ দাঁড়াবে বলে পূর্বাভাস করা হয়েছে।
করোনার লাগাতার ঢেউ, টিকাদানে ঢিমেতাল ও সরকারি সহায়তা প্রত্যাহারের কারণে এমনটি ঘটবে। মহামারি দীর্ঘ হওয়ার কারণে এই দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেই আশঙ্কা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকদের পুরোনো কাজে ফিরতে না পারা, বিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষণের ঘাটতি, বিনিয়োগ হ্রাস, ক্রমবর্ধমান ঋণ ও আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা। ২০২২ সালে এই গোষ্ঠীর দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। মূলত সরকারি সহায়তা উঠিয়ে নেওয়ার কারণে এমনটি ঘটবে বলে আশঙ্কা।
অন্যদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে টিকাদানের গতি অত্যন্ত কম বলে তাদের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ২ দশমিক ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২০ সালের সংকোচনের কথা বাদ দিলে গত দুই দশকে এই দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার কখনো এতটা কমেনি। ভঙ্গুর ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো সবচেয়ে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা অন্তত এক দশকের জন্য থমকে গেছে।
অন্যদিকে আঞ্চলিক হিসাবে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি হবে সবচেয়ে বেশি। দক্ষিণ এশিয়ায় অবশ্য করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ভারত ও নেপালে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনায় লাগাম পড়বে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের যে প্রবৃদ্ধি হবে, ২০২০ সালের সংকোচন কাটিয়ে ওঠার মতো তা যথেষ্ট নয়।
বিশ্বব্যাংকের জুন মাসের পূর্বাভাস হচ্ছে, উন্নত দেশগুলো দ্রুত টিকাদানের মাধ্যমে চলতি বছরের শেষ নাগাদ মহামারি কার্যত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে। বড় বড় উন্নয়নশীল দেশে নতুন সংক্রমণ কমে আসবে। তা সত্ত্বেও অনিশ্চয়তা কিছু থেকে যায়। মহামারি দীর্ঘায়িত হলে বা আর্থিক খাতে চাপ ও সামাজিক অস্থিরতা থাকলে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অনেক দিন চলতে পারে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়