ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মগবাজার-কমলাপুর-কুতুবখালী অংশে পিয়ারের (খুঁটি) জন্য পোর্টাল ফ্রেম নকশা করা হয়েছে। এ ধরনের পিয়ার তৈরি করা হয় দুই পাশে দুটি ‘কলাম’ ও ওপরে ‘বিম’ দিয়ে। নকশা অনুযায়ী, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পোর্টাল ফ্রেম পিয়ারের দুটি কলামের মধ্যবর্তী দূরত্ব ২৫ মিটারের কম। উড়াল সড়কটির যে গতিপথ, তাতে শাহজাহানপুর রেল ক্রসিং এলাকার অন্তত ৩০টি পিয়ারের দুই কলামের মধ্যবর্তী জায়গায় পড়েছে বিদ্যমান রেলপথ। আর উড়াল পথটির পিয়ারগুলোর যে নকশা তৈরি করা হচ্ছে, তাতে বিদ্যমান রেলপথটি সম্প্রসারণের আর কোনো সুযোগই থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে আপত্তি তোলায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মগবাজার-কুতুবখালী অংশের নির্মাণকাজ।
ঢাকার বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বিমানবন্দর-বনানী-তেজগাঁও-মগবাজার অংশে বর্তমানে নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। মগবাজার-কমলাপুর-কুতুবখালী অংশের কাজ এখনো শুরু হয়নি। প্রকল্পের এ অংশের নির্মাণকাজ শুরুর আগেই দেখা দিয়েছে নকশাগত জটিলতা।
নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটির সিংহভাগ অংশ পড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের জমিতে। কোথাও বিদ্যমান রেলপথের পাশ ঘেঁষে, আবার কোথাও রেলপথের ওপর দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে উড়াল সড়কটি। মগবাজার-কুতুবখালীতে উড়ালপথটি তৈরি করা হচ্ছে বিদ্যমান রেলপথটির ঠিক ওপরে। বিদ্যমান রেলপথটির জন্যই পোর্টাল ফ্রেম নকশায় পিয়ারগুলো তৈরি করা হচ্ছে। শাহজাহানপুর রেল ক্রসিং এলাকার অন্তত ৩০টি পিয়ার পড়তে যাচ্ছে রেলপথটির ঠিক ওপরে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম রেল সেকশন ঢাকা-টঙ্গীতে বর্তমানে দুটি ডুয়াল গেজ রেলপথ রয়েছে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তৃতীয় ও চতুর্থ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলমান। ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা মাথায় রেখে পঞ্চম ও ষষ্ঠ রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু শাহজাহানপুর এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটির নকশা যেভাবে করা হয়েছে, তাতে পঞ্চম ও ষষ্ঠ রেলপথ তৈরির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাবে না।
এক্সপ্রেসওয়েটির পিয়ারের এ নকশা জটিলতা নিয়ে চলতি বছরের ২৮ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক সভা হয়। সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সেতু কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ২৪ আগস্ট সাইট পরিদর্শন করে। পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তারা দেখেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের শিডিউল অব ডাইমেনশন অনুযায়ী, ব্রড গেজ লাইনের ন্যূনতম দূরত্ব বজায় রেখে ছয়টি লাইনের জন্য কমপক্ষে ২৫ দশমিক ৬ মিটার জায়গা প্রয়োজন হবে, যা পিয়ারের বিদ্যমান নকশা অনুযায়ী সম্ভব নয়।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে পোর্টাল ফ্রেম পিয়ারের বর্তমান নকশা পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছে এ কমিটি। পরিবর্তিত নকশায় দুই কলামের মধ্যবর্তী দূরত্ব ২৬ দশমিক ১৫ মিটার রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিটি নকশা পরিবর্তনের পরামর্শ দিলেও এখনো সমস্যাটির কোনো সমাধান হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও সেতু বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক বণিক বার্তাকে বলেন, শাহজাহানপুর রেল ক্রসিং এলাকায় কিছু পিয়ারের নকশা নিয়ে একটু জটিলতা আছে। খিলগাঁও ফ্লাইওভারের রেলগেট এলাকায় নির্মিত একটি ইউলুপ সমস্যাটিকে আরো জটিল করে দিয়েছে। তবে আমরা রেলওয়ের সঙ্গে আলোচনা করে নকশা জটিলতার বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করছি, দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। সমাধানের পর যত দ্রুত সম্ভব আমরা এ অংশে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শুরু করব।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়