সামষ্টিক অর্থনীতির সবচেয়ে বড় ঝুঁকি বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ঊর্ধ্বগতি

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে খাদ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুতে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ ছিল ৪০ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়ন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সংশোধিত বাজেটে এ বরাদ্দ আরো বাড়িয়ে করা হয় ৫০ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ভর্তুকির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট ৬৬ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পক্ষ থেকে ভর্তুকি হ্রাসের চাপ থাকলেও এ বরাদ্দ ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে টাকার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধির কথা বলছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের সময় সহায়ক প্রকাশনা হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগ থেকে ‘‌মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি’ প্রকাশ করা হয়। সেখানেই মন্ত্রণালয়ের এমন পর্যবেক্ষণ উঠে আসে। 

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সূত্র ব্যবহার করে সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আগামী অর্থবছরে ডলারের বিনিময় হার ১ টাকা বাড়লে শুধু বিদ্যুতেই ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াতে হবে ৭৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। টাকার অবমূল্যায়নে ভর্তুকির ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি সরকারের প্রকল্প ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়বে। অনেক সরকারি বৃহৎ প্রকল্প আমদানি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে সরকারের আর্থিক বোঝা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। 

টাকার বিপরীতে ডলারসহ প্রধান বৈদেশিক মুদ্রাগুলোর বিনিময় হার বেড়ে চলেছে। এতে একদিকে বেড়েছে সরকারের ঋণ পরিশোধের ব্যয়। অন্যদিকে ক্রমেই চাপ বেড়েছে রিজার্ভে। ডলারের সংকট প্রকট হয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় জ্বালানির সংস্থান করতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। তথৈবচ দশা জরুরি অন্যান্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও। সরকারের রাজস্ব আহরণেও এর নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ডলারের বিনিময় হারের ঊর্ধ্বগতিতে বেসরকারি খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও এখন এটিকেই দেখছে অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি হিসেবে। মন্ত্রণালয়ের আশঙ্কা, ডলারসহ প্রধান বৈদেশিক মুদ্রাগুলোর বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন সরকারের ঋণের বোঝাকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। একই সঙ্গে তা সরকারের আয় ও ব্যয়—দুটোর ওপরই ফেলতে যাচ্ছে মারাত্মক ও নেতিবাচক প্রভাব ।

বিনিময় হারের ওঠানামা সরকারের আর্থিক ভারসাম্য ও ঋণকে সামগ্রিক পরিমাণে প্রভাবিত করছে উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কভিড-১৯ অতিমারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, রফতানি ও রেমিট্যান্স হ্রাস এবং টাকার সাম্প্রতিক অবমূল্যায়নের ফলে আমদানি ব্যয় এবং নির্ধারিত বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। টাকার বিনিময় হারে হঠাৎ অবমূল্যায়ন হলে সরকারের ঋণ আরো বাড়তে পারে। যদিও বাংলাদেশে গত কয়েক বছর বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল, কিন্তু টাকার সাম্প্রতিক অবমূল্যায়ন বিভিন্নভাবে আর্থিক ভারসাম্য ও ঋণের সামগ্রিক পরিমাণকে প্রভাবিত করছে। বিষয়টি সরকারের রাজস্ব আয় ও ব্যয় উভয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে প্রভাবের বিষয়টি আমদানি শুল্কের সঙ্গে জড়িত। আর ব্যয়ের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রধান খাতগুলো হলো সারে দেয়া ভর্তুকি বিল, জ্বালানি তেল আমদানির জন্য বিপিসিকে দেয়া অর্থের পরিমাণ, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিদেশী অর্থায়নের অংশ (মূলধন ব্যয়) ও বিদেশী ঋণের সুদ। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত বিনিময় হারের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, অর্থবছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত টাকার বিপরীতে ইউরোর বিনিময় হার বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। জাপানি ইয়েনের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে সাড়ে ১২ শতাংশের কাছাকাছি। যদিও সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি। 

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দিনে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা। সর্বশেষ গত বুধবার আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিনিময় হার উঠে দাঁড়ায় ১০৮ টাকায়। সে হিসেবে অর্থবছরের শুরুর দিন থেকে এ পর্যন্ত মুদ্রাটির বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ১৬ শতাংশের কাছাকাছি। 

আবার এ ডলারেই সরকারের বিদেশী ঋণের সিংহভাগ পরিশোধ করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে দেশে মোট সরকারি ঋণের ৫০ শতাংশই ছিল ডলারে নেয়া। পরের অবস্থানে ছিল জাপানি ইয়েন—২১ শতাংশ। ১৫ শতাংশ ঋণ নেয়া হয়েছে ইউরোয়। 

টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়ন এ ঋণ পরিশোধের ব্যয়কে সামনের দিনগুলোয় আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে (২০২১-২২) সরকারকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ১৫০ কোটি ডলার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২১০ কোটি ডলারে। এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সামনের দিনগুলোয়ও অব্যাহত থাকবে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে হবে ২৪০ কোটি ডলার। ২০২৫-২৬-এ তা আরো বেড়ে দাঁড়াবে ২৬০ কোটি ডলারে। 

যদিও অর্থনীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ সামনের দিনগুলোয় মন্ত্রণালয়ের প্রক্ষেপণের চেয়ে আরো অনেক বেশি হওয়ার জোর আশঙ্কা রয়েছে। বৈদেশিক ঋণের এ বোঝা ক্রমেই রিজার্ভসহ সার্বিক অর্থনীতির ওপর ক্রমেই আরো ভারী হয়ে চেপে বসছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং তারল্য সংকট এড়িয়ে চলতে দক্ষ ঋণ পরিশোধ ব্যবস্থাপনা জরুরি। যদিও বৈচিত্র্যপূর্ণ অর্থায়ন উৎস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তোলার জন্য সরকারি প্রচেষ্টার ফলে এটি সহনীয় সীমার মধ্যে থাকবে বলে প্রত্যাশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশী ঋণসংক্রান্ত প্রতিবেদনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে ২০২১-২২ সাল শেষে দেশে মোট বিদেশী ঋণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৫২৩ কোটি ডলার। ডিসেম্বর শেষে বিদেশী উৎসের এ ঋণের পরিমাণ ৯ হাজার ৩৭৯ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। এর মধ্যে সরকারের বিদেশী ঋণের পরিমাণ গত অর্থবছরের শেষে ছিল ৬ হাজার ৯২৮ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৪৯ কোটি ডলারে। সে হিসেবে গত বছরের জুনে সরকারের বিদেশী ঋণের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২১ কোটি ডলার।

সরকারি ঋণে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই সরকারের ঋণের বোঝা অনেক বেড়েছে। সামনে টাকার আরো অবমূল্যায়ন আরো হলে তা আরো বাড়বে। অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বিদেশী ঋণ বড় করা হলে তা পরিশোধ করাও অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের সমস্যাটি সহজে যাচ্ছে না। এখন কথা হলো আমরা যদি রফতানি ও রেমিট্যান্স বাড়াতে পারি, তাহলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি মিলবে। কিন্তু এর মধ্যেই মুডি’স আমাদের ঋণমান অবনমন করেছে। এতে আমাদের বাণিজ্য অর্থায়নের ব্যয় আরো বেড়ে যাবে। বিদেশী বিনিয়োগ কমবে। পুঁজিবাজারেও বিদেশীদের শেয়ার কেনা কমে যাবে।’ 

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে বেসরকারি খাতে বিদেশী ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুন শেষে দেশের বেসরকারি খাতে বিদেশী ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৯৫ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস শেষে তা ২ হাজার ৪৩১ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। অর্থাৎ এ সময়ে ব্যবসায়ীদের বিদেশী ঋণ কমেছে ১৬৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৮১ কোটি ডলার কমেছে। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণ কমেছে ৩০ কোটি ডলার। 

বেসরকারি খাতে বিদেশী অর্থায়ন হ্রাস পাওয়ার পেছনে প্রধানত ডলার সংকটকেই দায়ী করছেন ব্যাংক নির্বাহীরা। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য হলো দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে ডলারের তীব্র সংকট চলছে। অনেক ব্যবসায়ী ও ব্যাংক নির্ধারিত সময়ে বিদেশী ঋণ ও এলসির অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশী অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ কমিয়ে আনতে চেয়েছে। অনুরোধ সত্ত্বেও কিছু বিদেশী প্রতিষ্ঠান বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি ঋণ নবায়ন করেনি। এ কারণে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার কমেছে। চলতি বছরও স্বল্পমেয়াদি অনেক ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হবে। বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো এসব ঋণ নবায়ন না করলে দেশে ডলার সংকট আরো তীব্র হয়ে উঠবে। পাশাপাশি বিদেশী উৎস থেকে ঋণ নেয়া ব্যবসায়ীদের বিপদ আরো বাড়বে।

হিসাব অনুযায়ী, দেশে চলতি অর্থবছরের শুরুর দিন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার। সেটি কমতে কমতে এখন ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে এসেছে। অর্থাৎ অর্থবছর শেষ হওয়ার এক মাস বাকি থাকতেই রিজার্ভের ক্ষয় ১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

এ বিষয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২২ সালের জুনের ৪১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন থেকে ক্রমান্বয়ে হ্রাসে বর্তমানে ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। একই সঙ্গে ডলারের তুলনায় টাকার মূল্যমান কমেছে। ২০২২ সালের জুনে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ছিল সাড়ে ৯৩ টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মে বিনিময় হার দাঁড়িয়েছে প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ১০ পয়সায়। বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক চেষ্টা বাজারে সাময়িক তারল্য সংকট তৈরি করে। এর প্রভাবে ব্যাংক উৎস থেকে ঘাটতি অর্থায়নে সরকারের সুদ ব্যয় বেড়ে যায়।’ 

ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপের মাত্রাকে আরো নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। আবার ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের আমদানি ব্যয় বেড়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করাও তাদের জন্য মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহেই এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক এবং ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও সৈয়দ নুরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘আগে আমরা এলসিগুলো করার সময় ডলারের বিনিময় হার যত ছিল, পরে আমাদের পেমেন্ট করতে হয়েছে আরো অনেক বেশি টাকা দরে। শুধু বিনিময় হারের কারণে আমাদের একেক জনের মূলধন ক্ষয় হয়েছে শতকোটি টাকা। ১০০ টাকা মূলধন বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যিনি ব্যবসা শুরু করেছিলেন, তার কাছ থেকে ৩০ টাকাই চলে গেছে ডলারের বিনিময় হারের কারণে। ব্যাংকের হিসাবে আমাদের দেনা ১০০ টাকা। কিন্তু আমার কাছে প্রকৃতপক্ষে আছে ৭০ টাকা। এ ৭০ টাকা দিয়ে আমি যখন আবার কাঁচামাল কিনতে যাই, আমাদের তখন দিতে হয় ১১০ টাকা। ৩০ টাকা লোকসান করছি। আবার ৩০ টাকা বেশি লাগছে। আমার পকেটে এখন সত্যিকার অর্থে মূলধন আছে ৪০ টাকা। ৪০ টাকা দিয়ে আমি শিল্প চালাব? নাকি ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করব?’ 

বেসরকারি খাতের বৃহদায়তনের বেশকিছু বৃহৎ প্রকল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদে নেয়া ঋণের বিপরীতে সরকারের সভরেন গ্যারান্টি দেয়া রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান কোনো কারণে খেলাপি হয়ে পড়লে সে দায়ও সরকারের বোঝাকে বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রয়েছে।

সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেয়া ঋণের বিপরীতে দেয়া সরকারের গ্যারান্টিও বেশ বড় অংকের। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে দেশে সরকারের গ্যারান্টিযুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকায়। কিন্তু ডলারের বিপরীতে টাকার যদি ১০ শতাংশও অবমূল্যায়ন হয়, তাহলে তা ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগামী অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান। ডলার সংকটের কারণে দেশের অনেক ঋণপত্রের (এলসি) দায় যথাসময়ে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এলসি দায় পরিশোধ করতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লাসহ ভোগ্যপণ্য আমদানি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। সরকারের মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ আমদানি করতে গেলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
এই বিভাগের আরও খবর
টানা ৩ দিন ধরে কমছে সোনার দাম

টানা ৩ দিন ধরে কমছে সোনার দাম

দৈনিক ইত্তেফাক
বোতলের সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭, খোলা ১৪৭ টাকা

বোতলের সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭, খোলা ১৪৭ টাকা

দৈনিক ইত্তেফাক
মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট না বসানোর চেষ্টা চলছে

মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট না বসানোর চেষ্টা চলছে

প্রথমআলো
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারে ব্রাজিল

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারে ব্রাজিল

বিডি প্রতিদিন
ভারতে স্বর্ণের দামে সর্বকালের রেকর্ড

ভারতে স্বর্ণের দামে সর্বকালের রেকর্ড

বিডি প্রতিদিন
বাংলাদেশে গত এক যুগে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে মধ্যপ্রাচ্যের অবদান সামান্য

বাংলাদেশে গত এক যুগে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে মধ্যপ্রাচ্যের অবদান সামান্য

বণিক বার্তা
ট্রেন্ডিং
  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া

  • অবিশ্বাস্য কীর্তিতে হাজার রানের ক্লাবে এনামুল বিজয়