দেশে চীন থেকে আমদানীকৃত পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এক সপ্তাহ ধরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহূত কাঁচামালসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীতকালীন চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি আসন্ন চীনা নববর্ষের সময়ে দেশটি থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে পাইকারদের মধ্যে মজুদপ্রবণতা দেখা দিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বাজারে এখন চীনা পণ্যের দাম বাড়ছে।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে কভিডের কারণে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটা স্থবির ছিল। নিত্যব্যবহার্য খাদ্যপণ্য ছাড়া বিলাসী খাদ্যপণ্যের বাজারও ছিল সীমিত। সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব পালন হয়েছে অনাড়ম্বরভাবে। তবে কয়েক মাস ধরে দেশে করোনাকালীন বিধিনিষেধ নেই। খুলে দেয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও। শতভাগ চালু হয়েছে প্রায় সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য। এজন্য চীন থেকে আমদানি হওয়া বিভিন্ন পণ্যের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। এরই প্রভাব দেখা যাচ্ছে পণ্যগুলোর দামে। তাছাড়া দেড় মাস পর শুরু হতে যাচ্ছে চীনা নববর্ষ। ওই সময় আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেও পাইকারি বাজারে মজুদপ্রবণতা বেড়েছে।
খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান ও পাইকারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারটিতে গত এক সপ্তাহে খাওয়ার সোডার দাম টনপ্রতি ৩৮ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার টাকায়। ওয়াশিং সোডার দাম টনপ্রতি ৩৩ হাজার থেকে বেড়ে ৪৫ হাজার টাকায়, অ্যামোনিয়া ২৮ হাজার থেকে বেড়ে ৪০ হাজার, অ্যালুমিনিয়াম পেপার প্রতি রোল ৭০ থেকে বেড়ে ১০৩, টেস্টিং সল্ট কার্টনপ্রতি (প্রতি কার্টনে ৫০ প্যাকেট) ২ হাজার ৪০০ থেকে বেড়ে ৩ হাজার, ইস্ট প্রতি পাউন্ড ১২৫ থেকে বেড়ে ১৫০ ও বার্লি টনপ্রতি ৪৫ হাজার থেকে বেড়ে ৬৯ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া চীন থেকে আমদানীকৃত আরো কয়েকশ ধরনের পণ্যের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহূত বিভিন্ন রাসায়নিক ও সহযোগী পণ্য আমদানি করা হয় চীন থেকে। খাদ্যশস্যের সরবরাহে বিভিন্ন দেশের অবদান থাকলেও খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহূত রাসায়নিক ও সহযোগী পণ্যের প্রায় শতভাগই আসে চীন থেকে। কভিডের ধাক্কা কাটিয়ে দেশের বেকারি ও হোটেল-মোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় এসব পণ্যের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। এছাড়া শীতে অনুষ্ঠান ও পার্বণ বেশি থাকায় এ সময় এমনিতেই চীনা পণ্যের চাহিদা থাকে বেশি। পণ্যগুলোর বাজারে এখন এরই প্রভাব দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া করোনার কারণে দুই বছর আমদানি কম হওয়ায় বাজারে সরবরাহ চেইনে এমনিতেই ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে সে পরিস্থিতি অনেকটাই দূর হয়েছে। চীন থেকে পণ্য আমদানির পরিমাণও প্রতিদিনই বাড়ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের মেসার্স সিকদার অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. নাজিম উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছর দেশে বিয়ে, সামাজিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠান কার্যত বন্ধ ছিল। এ বছর পরিপূর্ণভাবে শীতকালীন উৎসব হবে। যার কারণে চীনভিত্তিক আমদানি পণ্যের হঠাৎ চাহিদা সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া এক-দেড় মাস পর চীনে মাসব্যাপী ছুটি থাকবে। ফলে চীন থেকে আমদানি হওয়া প্রায় সব পণ্যের বাজারে হঠাৎ অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়