অবৈধভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে গত এক বছরে ঢুকেছেন অন্তত আট হাজার ৬৬৭ বাংলাদেশি। ইউরোপীয় সীমান্ত ও কোস্ট গার্ড সংস্থা ফ্রনটেক্সের তথ্য অনুযায়ী, এঁদের মধ্যে আট হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি ইইউতে পৌঁছেছেন অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে।
গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সাত হাজার ৫৭৪ জন বাংলাদেশি মধ্য ভূমধ্যসাগর রুটে (সাগরপথে ইতালি ও মাল্টা) ইইউতে গেছেন।
আর পূর্ব ভূমধ্যসাগর রুটে (সাইপ্রাস, গ্রিস সাগর সীমান্ত, তুরস্কের সঙ্গে গ্রিস ও বুলগেরিয়ার স্থলসীমান্ত) গেছেন ৬০৪ জন। এ ছাড়া ৪৩৭ জন গেছেন পশ্চিম বলকান রুট ধরে (পশ্চিম বলকান অঞ্চলের দেশগুলো থেকে স্থলসীমাস্ত দিয়ে গ্রিস, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি ও ক্রোয়েশিয়া)।
পথগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত বছর বাংলাদেশিরা অবৈধভাবে ইউরোপে গেছেন মূলত লিবিয়া থেকে। লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে বা মাল্টায়। ওই রুট দিয়েই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী যাচ্ছেন ইউরোপে। গত সপ্তাহে লিবিয়া থেকে ইতালিগামী একটি নৌকায় ঠাণ্ডায় জমে সাত বাংলাদেশির মৃত্যুর খবরে নতুন করে পথটি আলোচনায় এসেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস গত শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যে নৌকায় সাত বাংলাদেশি ঠাণ্ডায় মারা গেছেন, সেটিতে মোট অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন ২৮৭ জন। সেই ২৮৭ জনের মধ্যে ২৭৩ জনই ছিলেন বাংলাদেশি। অন্য ১৪ জন মিসরীয়।
ইতালি থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, জীবিত ২৮০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সাময়িকভাবে বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অবৈধ অভিবাসন চেষ্টা ও দুর্ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ দূতাবাস ইতালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। দূতাবাস অবৈধ অভিবাসনের চেষ্টার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশিরা অবৈধ অভিবাসনের জন্য আলোচনায় আসছেন। এটি স্বাভাবিক বা নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসনের ক্ষেত্রেও বড় সমস্যা সৃষ্টি করছে। ইইউয়ের স্পষ্ট অবস্থান হলো, অবৈধ বা অনিয়মিত অভিবাসীদের ফিরে আসতে হবে। অনিয়মিত অভিবাসীদের পর্যায়ক্রমে দেশে ফিরিয়ে আনতে ২৭ দেশের জোট ইইউয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) আছে। কোভিড মহামারির কারণে অনিয়মিত অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনতে কিছুটা দেরি হওয়ায় ইইউ গত বছর বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধের হুমকিও দিয়েছিল। পরে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে অনিয়মিতদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে।
ইউরোপীয় অ্যাসাইলাম এজেন্সি গত শুক্রবার হালনাগাদ এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত নবেম্বর মাসে ইইউতে বাংলাদেশের দুই হাজার ২১২ জন ‘অ্যাসাইলাম’ (আশ্রয়) চেয়েছেন। গত নবেম্বরে ইইউতে আশ্রয়প্রার্থীদের শীর্ষে ছিল আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইরাকের নাগরিকরা। তবে বাংলাদেশিদের আবেদনের হার বিগত মাসগুলোর হারের প্রায় কাছাকাছি ছিল। প্রাপ্তবয়স্ক কেউ সঙ্গে নেই—এমন অপ্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশিদের আশ্রয়ের আবেদনের হার উল্লেখযোগ্য বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়