প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির প্রতীক্ষার প্রহরের অবসান হতে চলেছে। আজ এমন এক সময়ে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছি, যখন বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মর্যাদাশীল উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে।
গতকাল বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং সম্মানীত অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুজিব বর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মালদ্বীপের ফার্স্বলেডি ফাজনা আহমেদ, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের স্ত্রী রাশিদা খানম, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দেশী-বিদেশী আমন্ত্রিত অতিথি, রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা প্রধান, সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাথাপিছু আয় সম্মানজনক ২ হাজার মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে; দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে; দেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে; মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। আর্থসামাজিক সূচকে বাংলাদেশ প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১২ বছরের নিরলস প্রচেষ্টা এবং জনগণের ঐকান্তিক পরিশ্রমের ফসল আজকের এ প্রাপ্তি।
দেশের সক্ষমতা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, আজকে বাংলাদেশ যে অবস্থানে পৌঁছেছে, সেখান থেকে তাকে সহজে অবনমন করা বা নামানো যাবে না। তার উত্কৃষ্ট উদাহরণ, আমরা এ করোনাভাইরাস মহামারীর অভিঘাত সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি এখনো দেশে-বিদেশে সক্রিয় রয়েছে। তারা নানা অপতত্পরতার মাধ্যমে এ অর্জনকে নস্যাৎ করতে চায়।
ঐক্যবদ্ধভাবে সব অপতত্পরতা প্রতিহত করে দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির পথ ধরে সামনে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন শুধু আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। পেছনে ফিরে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। সব বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে এদেশকে আমরা বঙ্গবন্ধুর শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব।
মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসব আগামী বিজয় দিবস পর্যন্ত চলবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। এ বছর আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। আমরা মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একযোগে উদযাপন করছি। ‘মুজিব চিরন্তন’—এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত আমরা দেশে-বিদেশে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আজ (গতকাল) তার সূচনাপর্ব। তবে আমাদের উৎসব ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতে থাকবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার সমন্বয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালির রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ মাতৃভাষার মর্যাদা অর্জনের যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, সে ধারাবাহিক সংগ্রামের ফসলই আমাদের স্বাধীনতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, তার ওপর শত শত বছরের পরাধীনতার গ্লানি। শোষণ-বঞ্চনা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের এ জনপদকে একটা পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার মতো কঠিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে। অসাধ্য সাধন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়