ভয়ঙ্কর দাবানলে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া, তার ফলে অস্ট্রেলিয়ার সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের বাজার ও। যেন দাবানলেরই আঁচ লাগছে। বাংলাদেশের বাজারে মসুর ডালের দাম অনেকটাই বেড়ে গেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে দুই দেশ থেকে মসুর ডাল আমদানি হয়। যার একটি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, অন্যটি কানাডা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, খুচরা বাজারে মোটা দানার মসুর ডালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা । এই ডাল মূলত অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা থেকে বাংলাদেশে আসে। বাজারেীই ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজারদরের তালিকা থেকে জানা যায়, ঢাকায় গত ১ ডিসেম্বর মোটা মসুর ডালের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি ছিল। গত বৃহস্পতিবার তা ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় ওঠে। সরু মিহি দানার মসুর ডালের দামও ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বাজারে যা ১০৫ থেকে ১২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে ।
অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলের কারণে বিশাল বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। তারা এখন ডাল বিক্রির প্রস্তাব দিচ্ছে না। আর এ কারণে পাইকারি বাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী। খাতুনগঞ্জে মোটা দানার মসুর ডাল ৬০ থেকে ৬৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর সরু দানার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকার কিছু বেশি দরে।
মসুর ডাল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর একটি। চাহিদার প্রায় অর্ধেকই আমদানি করতে হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বছরে মসুর ডালের চাহিদা ৫ লাখ টনের মতো। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মসুর ডাল আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার টন। দেশে উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার টন। ফলে সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি ছিল।
, অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলের কারণে এ বছর আবাদ বিলম্বিত হতে পারার সমূহ সম্ভাবনা। এ ছাড়া ভারতে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে আবাদ দেরিতে হয়েছে। তুরস্ক ও মিসর আমদানি বাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্ববাজারে ডালের চাহিদা বেড়েছে।
ওয়েস্টার্ন প্রডিউসারস নামের একটি ওয়েবসাইটে কানাডায় মসুর ডালের দাম নিয়ে এক প্রতিবেদনে গত মঙ্গলবার বলা হয়, সেখানে এখন প্রতি টন ডাল ৫১০ থেকে ৫২০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
শুধু মসুর ডাল নয়, ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি মুগ ডালের দাম প্রতি কেজি ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় উঠেছে। আর অ্যাংকর ডালের দাম ৫ টাকার মতো বেড়েছে। এই প্রবণতা অবশ্য গত দেড় মাসের।
সব মিলিয়ে নতুন বছরের শুরুটি ভোক্তাদের জন্য মোটেও স্বস্তির হচ্ছেনা। ২০১৯ সালের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে পেঁয়াজ, রসুন, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম চড়া ছিল। কিন্তু চাল, ডাল, তেল ও চিনির দাম বেশ কম থাকার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির হার সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে ছিল। অবশ্য এই পণ্যগুলোর দামই এখন বাড়ছে, যা মানুষের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দাম যা-ই হোক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মানুষকে কিনতে হয়। দাম বেড়ে গেলে যাদের সুযোগ আছে, বিত্ত রয়েছে, তারা নিজেদের আয় কিছুটা বাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে। যেমন রিকশাচালকেরা কিছু বাড়তি ভাড়া চান। অথবা ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তি নেন। তিনি বলেন, বিপাকে পড়ে মজুরি ও বেতননির্ভর মানুষেরা। এরা যেহেতু জীবনযাত্রার মান কমাতে পারে না, তাই সঞ্চয় ভেঙে চলার চেষ্টা করে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়