আওয়ামী লীগের ইতিহাস আর বাংলাদেশের ইতিহাস একই: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের ইতিহাস আর বাংলাদেশের ইতিহাস একই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ গঠনের মাধ্যমে আবার এই ভূখণ্ড স্বাধীনতা অর্জন করে। আমরা পাই স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে এই ভূখণ্ডের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছে এবং সাফল্য এনেছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস আর বাংলাদেশের ইতিহাস একই ইতিহাস।

আওয়ামী লীগকে আদর্শের ভিত্তিতে সুসংগঠিত হিসাবে গড়ে তুলতে সবসময় বঙ্গবন্ধু দৃষ্টি দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমে আওয়ামী মুসলিম লীগ হলেও ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দলকে গড়ে তোলার জন্য মুসলিম নামটি বাদ দেওয়া হয়।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা ও পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনাবলী বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময় ১৯টি সামরিক অভ্যুত্থান হয়। যেখানে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশ ও দেশের মানুষ। সামরিক শাসন দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয় সংবিধানকে।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের তখন কিছু লোক তার সঙ্গে জুড়ে যায়। সংবিধান ও সেনা আইন লঙ্ঘন করে যে ব্যক্তি দল গড়া শুরু করলো, তাকেই বানানো হলো গণতন্ত্রের প্রবক্তা। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য ট্র্যাজেডি। তাদের সঙ্গে অনেকেই যুক্ত হয়ে গেলো। অনেক জ্ঞানী, গুণীজন হাত মিলালো।

মুষ্টিমেয় কিছু পদলেহনকারী ক্ষমতার চাটুকারী করতে ছুটে গেলেও সাধারণ বাঙালি তা করেনি বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু সবসময় ঠিক ছিল। সত্তরের নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ২০ দলীয় জোট করা হয়েছিল। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির ২০ দলীয় জোট হলো।

স্বাধীনতা পরবর্তী নানা ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ। সেটা বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তারপর অপপ্রচার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এই ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে করা হয়। তারপরও যখন দেখলো বাংলার জনগণের মন থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যাবে না, তখন ১৫ আগস্ট চরম আঘাত হানা হয়।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া স্লোগান দেয় পঁচাত্তরের পরাজিত শক্তির। এতে এটাই প্রমাণ হয়— তার বাপ যে পাকিস্তানের দালাল ছিল, তার মাও পাকিস্তানি দালাল হিসাবেই ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ ও আদর্শগুলো একে একে মুছে ফেলেছিল। ইতিহাস মুছে ফেলেছিল। জাতির পিতার নাম মুছে ফেলেছিল। তাই এটা খুব স্বাভাবিক তারতো সেই স্লোগান দেবেই।

পাকিস্তানি সেনাদের পদলেহন করে চলাটাই বিএনপির অভ্যাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারাতো স্বাধীনতার চেতনাই বিশ্বাস করে না। স্বাধীন জাতি হিসাবে যে একটা মর্যাদা এটাই তাদের পছন্দ না। তারা পরাধীন থাকতেই পছন্দ করে। তাদের লাঠি-ঝাটাটাই তাদের পছন্দ। এটাই বাস্তবতা। এটা মনে করে এদেরকে করুণা করতে হবে। কিন্তু এরা চক্রান্তকারী ও ষড়যন্ত্রকারী সেটাও মনে রাখতে হবে।

পঁচাত্তর সালে রাষ্ট্রপতি হবার পরে জিয়াউর রহমানই গুম ও খুন শুরু করেছিল বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া এসেও আমাদের কত নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। এরশাদের আমলেও আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতিত হতে হয়েছে।

অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের পকেট থেকে সৃষ্ট দল ও অস্ত্র, চোরাচালানী এবং এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী এবং পলাতক তারেক রহমানকে আসতে দেওয়া হয় না বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কথাটাতো ঠিক না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলেছে। ২০০৭ সালে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে কারাগার থেকে মুক্তি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমায়। এটা তো দলটির নেতাদের ভুলে যাওয়ার কথা না। তাকে তো কেউ বিতাড়িত করে নাই। স্বেচ্ছায় চলে গেছে সে। তারপর সে ফিরে আসেনি। একজন রাজনৈতিক নেতার যদি ফিরে আসার সাহস না থাকে সে আবার নেতৃত্ব দেয় কীভাবে?

সেনা সমর্থিত এক এগারো’র সময়ে বাধা স্বত্বেও দেশে ফিরে আসার ঘটনা এবং পরবর্তী গ্রেফতারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি করে কারাবন্দী হতেই হবে।

বঙ্গবন্ধু হত্যা ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। জিয়াউর রহমানকেও সেইভাবে নিহত হতে হয়েছিল। তার লাশটাও কেউ পায়নি।

খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া জিয়াউর রহমানের লাশ দেখেনি বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  গুলি খাওয়া লাশ তো দেখা যায়, তারা তো দেখতে পায়নি— সে কথাটাতো একবারও স্মরণ করে না বিএনপির নেতারা। জিয়ার লাশ কোথায়? এরশাদ সাহেব একটা বাকশো নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে কি ছিল? পরবর্তীতে তার মুখেই তো আছে— ওই বাক্সে জিয়ার লাশ ছিল না। কারণ জিয়ার লাশ তারা পায়নি। লাশ কোথায় গেছে কেউ বলতে পারে না।
এই বিভাগের আরও খবর
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন নাসির উদ্দীন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন নাসির উদ্দীন

ভোরের কাগজ
ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেফতার

ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেফতার

জনকণ্ঠ
জয়কে অপহরণ মামলা : জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

জয়কে অপহরণ মামলা : জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

নয়া দিগন্ত
প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে ড. ইউনূস

প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে ড. ইউনূস

জনকণ্ঠ
গাজীপুরে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

গাজীপুরে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

বিডি প্রতিদিন
পালানোর সময় গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র গ্রেপ্তার

পালানোর সময় গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র গ্রেপ্তার

দৈনিক ইত্তেফাক
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া