আত্মস্বীকৃত ১০১ ইয়াবা কারবারির মামলার রায় আজ

কক্সবাজারের টেকনাফে প্রথম দফায় আত্মসমর্পণকারী ১০১ জনের বিরুদ্ধে করা পুলিশের দুটি মামলার রায় বুধবার (২৩ নভেম্বর) ঘোষণা করবেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল। সব ঠিক থাকলে দুপুরে মামলা দুটির রায় ঘোষণা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।

এ মামলায় এরই মধ্যে ১৭ জন কারাগারে থাকলেও পলাতক ৮৪ জন। পলাতকদের মধ্যে মোহাম্মদ হোছাইন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

টেকনাফ থানার ওসি আবদুল হালিম জানিয়েছেন, মোহাম্মদ হোছাইন আত্মসমর্পণকারীদের একজন। তার বিরুদ্ধে অন্য একটি হত্যা মামলা থাকায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে আত্মসমর্পণকারীদের যাদের জামিন বাতিল হয়েছে–এ সংক্রান্ত আদালতের আদেশ হাতে পাননি তিনি। আদেশ পাওয়ার পর তাদের গ্রেফতার করা হবে।

তবে আদালতের সবশেষ ধার্য দিন অনুপস্থিত থাকায় ৮৪ জনের জামিন বাতিল ঘোষণা করেন আদালত। এর মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনও পলাতক ৮৩ জন। পলাতকদের মধ্যে অনেক জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালী রয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছেন: সাবেক সংসদ সদস্য আব্দু রহমান বদির চার ভাই আব্দুল আমিন, আব্দু শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সাল রহমান, ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু, চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ ও বড় ভাই আব্দু রহমান, বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদের ছেলে দিদার মিয়া, টেকনাফ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের এনামুল হক এনাম মেম্বার প্রমুখ।

টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সরওয়ার কামাল বলেন, গত ১৭ নভেম্বর থেকে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত রয়েছেন। এ কারণে তিনি যতদিন অনুপস্থিত থাকবেন, ততদিন প্যানেল চেয়ারম্যান জহির আহমেদ দায়িত্ব পালন করবেন। তবে এক মাসের অধিক সময় যদি অনুপস্থিত থাকেন তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, ধার্য দিনেই এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। ওই দিন কারাগারে থাকা আসামিদের আদালতে হাজির করা হবে। তাদের উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হবে রায়। ইয়াবা কারবারি হিসেবে এরা সবাই আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

এজাহারের বিবরণমতে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ সৈকতের নিকটবর্তী এলাকায় ইয়াবা ও অস্ত্রসহ একদল ইয়াবা কারবারি অবস্থান নেয়ার খবরে পুলিশ অভিযান চালায়। ওই সময় ১০২ জন মাদক কারবারি আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ওইদিন টেকনাফ সদরের টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি ও গডফাদার সাড়ে ৩ লাখ পিস ইয়াবা, ৩০টি দেশীয় বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিনই আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনকে আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়। বাদী হয়ে মামলাটি করেন টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় পরিদর্শক এবিএমএস দোহাকে। মামলা করার দিনই আদালতের মাধ্যমে সব আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১০২ জন আসামির মধ্যে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্ন ফারাহর আদালতে ১০১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরবর্তী সময়ে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সব আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার চার্জ গঠন করেন। বিচার শেষে ১৫ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

এর মধ্যে মামলায় সাজা হওয়ার খবরে পলাতক হন ৮৪ জন। এ পরিস্থিতি মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।

কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, এই ১০১ জন ইয়াবা কারবারির সর্বোচ্চ সাজা হওয়া জরুরি। এরা সবাই চিহ্নিত ইয়াবা গডফাদার এবং আত্মস্বীকৃত। এদের যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড না দিলে ইয়াবা কারবারিরা উৎসাহ পাবে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, ইয়াবা কারবারিদের জন্য এ মামলার রায় হতে পারে শিক্ষণীয়। কেননা, এরা সবাই আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি। তাদের সবার প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া জরুরি।

এদিকে এ মামলায় ৮৩ জন পলাতক থাকলেও বুধবার রায় ঘোষণা সময় অনেকেই উপস্থিত থাকতে আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার তথ্য পাওয়া গেছে।

কারাগারে থাকা ১৮ আসামি হলেন: নুরুল হুদা, শাহ আলম, আব্দুর রহমান, ফরিদ আলম, মাহবুব আলম, রশিদ আহমেদ, মোহাম্মদ তৈয়ব, জাফর আলম, মোহাম্মদ হাশেম ওরফে আংকু, আবু তৈয়ব, আলী নেওয়াজ, মোহাম্মদ আইয়ুব, কামাল হোসেন, নুরুল বশর ওরফে কালাভাই, আব্দুল করিম ওরফে করিম মাঝি, দিল মোহাম্মদ, মো. সাকের মিয়া ওরফে সাকের মাঝি ও মোহাম্মদ হোছাইন।
এই বিভাগের আরও খবর
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন নাসির উদ্দীন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন নাসির উদ্দীন

ভোরের কাগজ
ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেফতার

ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেফতার

জনকণ্ঠ
জয়কে অপহরণ মামলা : জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

জয়কে অপহরণ মামলা : জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

নয়া দিগন্ত
প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে ড. ইউনূস

প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে ড. ইউনূস

জনকণ্ঠ
গাজীপুরে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

গাজীপুরে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

বিডি প্রতিদিন
পালানোর সময় গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র গ্রেপ্তার

পালানোর সময় গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র গ্রেপ্তার

দৈনিক ইত্তেফাক
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া