টি২০ সিরিজে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হলো বাংলাদেশ। শুক্রবার প্রথম ম্যাচে লড়াই করলেও গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে অতিথি দলের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে স্বাগতিকরা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ৭ উইকেটে মাত্র ১০৮ রান, যা বাবর আজমের দল মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে তুলে নেয় ১১ বল বাকি থাকতেই।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ১০ ওভারে তুলেছে ৩ উইকেটে ৬৪ রান। দলের সামনে তখন দেড়শর সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছিল। কিন্তু এবার শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ করতে পারে ৪৪ রান! যা কিনা টি২০-তে শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহের রেকর্ড। এ ১০ ওভারের সময় স্বাগতিক দলের ব্যাটাররা মাত্র দুটি বাউন্ডারি হাঁকাতে সমর্থ হয়! এটা প্রথম ম্যাচের সম্পূর্ণ বিপরীতে, যখন শেষ ১০ ওভার থেকে বাংলাদেশ তুলেছিল ৮৭ রান, যাতে ছিল সাতটি ছক্কা আর একটি চারের মার।
শোচনীয় ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। টানা দুই হারের পর আগামীকাল সিরিজের শেষ ম্যাচটি এখন রূপ নিল আনুষ্ঠানিকতায়। যদিও ম্যাচটিতে হারলে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেতে পারে বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলনায়ক মাহমুদউল্লাহ দুষলেন ব্যাটিংকেই। তিনি বলেন, শুরুটা আমরা ভালোই করেছিলাম। আফিফ ও শান্ত মাঝের সময়টায় খুব ভালো ব্যাট করেছে। আমি ও শান্ত চেষ্টা করছিলাম একটা জুটি গড়ে তুলতে। তবে শেষ কিছু ওভার আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের মতো দলের জন্য ১৫-১৬ ওভার পর্যন্ত একজন সেট ব্যাটসম্যান ক্রিজে থাকা জরুরি, যেন শেষ কয়েক ওভারে ঝড় তোলা যায়। আজ (গতকাল) আমরা তা করতে পারিনি।
এ রান দিয়ে পাকিস্তানকে আটকানো কঠিন। ক্যাচ মিসের কারণে কাজটি আরো কঠিন হয়ে ওঠে। স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে ফখর জামানের সহজ ক্যাচ ছাড়েন সাইফ হাসান। পরে আমিনুলের বলেই রিজওয়ানের সহজতম ক্যাচ নিতে পারেননি তাসকিন আহমেদ।
ক্যাচ ড্রপ নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, আমি জানি না কেন এমন হচ্ছে। ছেলেরা অনুশীলনে অনেক কাজ করছে, নিয়মিত অনেক ক্যাচ নিচ্ছে। অনুশীলনে সম্ভব সবকিছুই করছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ম্যাচে আমরা সুযোগ হাতছাড়া করছি।
দলের বোলিং নিয়ে মাহমুদউল্লাহর মূল্যায়ন, আমি মনে করি, পাঁচ-ছয় মাস ধরে আমাদের বোলিং ছিল অবিশ্বাস্য; পেস ও স্পিন উভয় বিভাগই। এখন আমাদের ব্যাটিং ইউনিটকে ভালো পারফর্ম করতে হবে।
১০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেই হোঁচট খায় পাকিস্তান। ১২ রানের মাথায় ওপেনার বাবর আজমকে বোল্ড করেন মুস্তাফিজ। কিন্তু এরপর বাংলাদেশকে আর কোনো সুযোগই দিলেন না ফখর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৭৮ বলে ৮৫ রানের জুটিতে তারা পাকিস্তানকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। এ পথে ফখর তুলে নেন টি২০ ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক। দুজনের ৮৬ রানের জুটি ভাঙে যখন পাকিস্তান জয় থেকে মাত্র ১২ রান দূরে। লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে হিট করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাইফ হাসানের হাতে ধরা পড়েন রিজওয়ান। ৪৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করেন রিজওয়ান।
এরপর হায়দার আলীকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ফখর। ৫১ বলে ৫৭ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন তিনি। তিন ছক্কা ও দুটি চারে সাজান ইনিংসটি। হায়দার ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজ ও আমিনুল একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের ওপেনার সাইফ হাসানের রানের খাতাই খোলা হয়নি। শাহিন আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। নাইম শেখের দৌড়ও অল্পতে শেষ। আগের ম্যাচে করেন এক রান, গতকাল করলেন দুই। দলীয় ৫ রানে দুই টপ অর্ডারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে নাজমুল হোসেন শান্ত ও আফিফ হোসেন বাংলাদেশকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। বোর্ডে যখন ৫১ রান, তখন আফিফ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রিজওয়ানকে। শাদাব খানের শিকার হওয়ার আগে ২১ বলে ২০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মাহমুদউল্লাহ ১৫ বলে ১২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন। দুর্দান্ত খেলা শান্তকে দলীয় ৮২ রানের মাথায় ফিরিয়ে শাদাব খান রানের চাকা স্লো করেন। ৩৪ বলে ৪০ রান করেন শান্ত।
এরপর বাকিরা শুধু আসা-যাওয়া করেন। তাতে দলের সংগ্রহ বিস্ময়করভাবেই ১০৮ রানে আটকে গেল। পাকিস্তানের হয়ে শাহিন আফ্রিদি ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ২টি ও শাদাব ৪ ওভারে ২২ রানে ২টি উইকেট নেন।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়