গ্যাসের পর এবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসছে। জুলাই মাসে বাড়ানো হতে পারে বিদ্যুতের দাম। তবে কত বাড়বে তা নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) পর্যালোচনায় বসছে খুব শিগগিরই। বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে গণশুনানি হলেও খুচরা কোম্পানিগুলোও দাম বাড়ানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে কমিশনের একজন সদস্য জানিয়েছেন।
বিদ্যুতের দাম বাড়াতে গত মাসেই গণশুনানি সম্পন্ন করেছে বিইআরসি। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিইআরসি’র কারিগরি কমিটি সুপারিশও করেছে। বিইআরসি’র টেকনিক্যাল কমিটি ২ দশমিক ৯৯ টাকা বাড়ানোর সুপারিশ করে। অর্থাৎ প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে ওই কমিটি। নিয়ম অনুযায়ী শুনানির পরবর্তী তিন মাসের মধ্যেই দাম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিইআরসি’র সদস্য মোহাম্মদ বজলুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী শুনানির পরবর্তী তিন মাসের মধ্যেই দাম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কমিশন পর্যালোচনা করবে। পোস্ট হেয়ারিংয়ের কাগজপত্র জমা পড়েছে।
ন্যূনতম বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কমিশন চেষ্টা করবে। তবে কত বাড়বে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ এটা কমিশনের পর্যালোচনা সভার পর ঠিক করা হবে।
গত ১৮ই মে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর বিষয়ে শুনানি হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতর দাম বাড়ানোর দিকেই এগোচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোক্তা সংগঠনগুলো বলছে, এই মুহূর্তে দাম বাড়ানো হলে তা জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কোনোভাবে দাম বাড়ানো যৌক্তিক হবে না। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর শুনানিতে অংশ নিয়ে গ্রাহকরা দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করেন। শুনানিতে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকার ভর্তুকি দিতে চায় কিনা। বিদ্যুৎ খাতে সরকারের বিদ্যমান ভর্তুকি রয়েছে, সরকার তা অব্যাহত রাখতে চায় কিনা, তা জানা দরকার।
পাইকারিভাবে বিদ্যুতের দাম ৩ টাকা ৩৯ পয়সা বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৬ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। এতদিন সরকার ৩ টাকা ৩৯ পয়সা ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তাব গ্রহণ করলে সরকারের আর ভর্তুকি দেয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাব উপদেষ্টা জানতে চান, সরকার ভর্তুকি দিতে চায় কিনা।
শামসুল আলম জানতে চান, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাইকারি বিদ্যুতে আর্থিক ঘাটতি প্রায় ৩০ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। বিদ্যমান পাইকারি মূল্য হার ৫ টাকা ১৭ পয়সা। মূল্য হার ঘাটতি বিবেচনায় নিয়ে পাইকারি বিদ্যুতের রাজস্ব চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে এবং মূল্য হার ৮ টাকা ৫৮ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ঘাটতি সমন্বয়ে সরকারি ভর্তুকি বিবেচনা করা হয়নি। তার মানে যখন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তৈরি করে, তখন সরকার ভর্তুকি দিতে রাজি হয়নি? সরকার কি ভর্তুকি দিতে সম্মত না?
শুনানিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানিয়েছেন, বিদ্যুতের পাইকারি দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা প্রমাণের দায়িত্ব বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের। সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ ও ন্যায় সঙ্গতভাবে আদেশ দেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাইকারি দাম ঘোষণা হলে খুচরার ওপর প্রভাব পড়বে। তাদের কোনো প্রস্তাব আমরা পাইনি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বর্তমান দর ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৫৮ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। বিপিডিবির এই প্রস্তাব গ্যাসের বর্তমান দর বিবেচনায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি হলে ৯.১৪ টাকা এবং ১২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলে ৯.২৭ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটি ২ দশমিক ৯৯ টাকা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। অর্থাৎ প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়