কভিড-১৯-এর প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বিপুল পরিমাণ শ্রমিক। তাদের এ আপত্কালে সহায়তা হিসেবে নগদ অর্থ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি এ উদ্যোগে হাত বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। নীতিমালার আওতায় সমন্বিত ওই কর্মসূচিতে তহবিল রয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। এখন পর্যন্ত এ তহবিলের অর্থছাড়ের হার দশমিক ১ শতাংশ।
২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথম কভিড-১৯-এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর সাধারণ ছুটির নামে অঘোষিত লকডাউনে অর্থনীতি কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। এপ্রিল থেকে জুন—এ সময়ে কার্যাদেশের অভাবে অনেক কারখানা সাময়িক ও স্থায়ী বন্ধ হয়ে যায়। কর্মচ্যুত হন অনেক শ্রমিক। একদিকে করোনা অন্যদিকে বেকারত্ব, জীবন ও জীবিকার টানাপড়েনে বিপর্যস্ত শ্রমিকদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে আগ্রহী হন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের পক্ষে গত বছরের ৭ অক্টোবর একটি নীতিমালা জারি করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। রফতানিমুখী পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের শ্রমিকদের মাসে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেয়া হবে, এমন বিধান রেখে জারি হয় নীতিমালা। ‘রফতানিমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের কর্মহীন হয়ে পড়া ও দুস্থ শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা-২০২০’ শীর্ষক ওই নীতিমালাটি অবিলম্বে কার্যকরের ঘোষণাও দেয়া হয়।
নীতিমালায় বলা হয়, এ কার্যক্রমের আওতায় নির্বাচিত প্রত্যেক শ্রমিককে মাসিক ৩ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেয়া হবে। একজন শ্রমিক সর্বোচ্চ তিন মাস এ নগদ সহায়তা পেতে পারেন। তবে নির্বাচিত শ্রমিক এ তিন মাসের মধ্যে পুনরায় পূর্বতন কারখানায় বা অন্য কোথাও নতুন কর্মে নিযুক্ত হলে ওই মাস থেকে আর এ নগদ সহায়তা প্রাপ্য হবেন না। এ কর্মসূচিতে অর্থায়নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মান সরকারের পাশাপাশি অংশ নেয় বাংলাদেশ সরকার।
গত মাসে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট: মুভিং ফরোয়ার্ড কানেক্টিভিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস টু স্ট্রেনদেন কম্পিটিটিভনেস’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। সেখানে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত কভিড-১৯-এর রেসপন্স কর্মসূচি ও অর্থছাড়ের পরিমাণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অর্থসহায়তার প্রায় দুই ডজন কর্মসূচির পাশাপাশি পোশাক এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতে কর্মহীনদের সহায়তার অর্থছাড়ের বিশ্লেষণও উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোশাক এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতে কর্মহীনদের সহায়তার পরিমাণ ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ডলারে যার পরিমাণ উল্লেখ রয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ। ছাড়ের ক্ষেত্রে উল্লেখ রয়েছে দশমিক ১ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গতকাল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল লতিফ খান এনডিসি বণিক বার্তাকে বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৩১ জন শ্রমিককে সহায়তা দেয়া গেছে। টাকা আছে। ধারাবাহিকভাবে দেয়া হবে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। বেকার হলেই শ্রমিকরা টাকা পাবেন।
সূত্র জানিয়েছে, কর্মসূচিটির আওতায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৩১ জন শ্রমিককে ৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। আবেদন জমা পরেছিল সাড়ে ১২ হাজার। আবেদনে নাম থাকা অনেক শ্রমিকের জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল ছিল। এ ধরনের ভুলত্রুটি সংশোধনে কয়েক দফায় যাচাই-বাছাই হয়। সর্বশেষ ৬ হাজার ৩১ জন চূড়ান্ত হন সহায়তার জন্য। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর—এ তিন মাস ৬ হাজার ৩১ জন কর্মহীন ছিলেন নিশ্চিত হয়ে তাদের সহায়তা দেয়া হয়েছে।
৬ হাজার ৩১ জনের মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি পোশাক শিল্প মালিক সংগঠন বিজিএমইএর সদস্য কারখানার। বাকিরা পোশাক খাতের আরেক সংগঠন বিকেএমইএর সদস্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের সংগঠন এলএফএমইএবির সদস্য কারখানার শ্রমিক।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়