দেশের কৃষি খাত এখন অনেকটাই এগিয়েছে। শস্যের ফলনশীলতা বেড়েছে অনেক। খাদ্য উৎপাদনও হয় বেশি। একই সঙ্গে এগিয়েছে শস্যের বহুমুখীকরণও। খাদ্যশস্যের বার্ষিক উৎপাদন এখন স্বাধীনতা-পরবর্তীকালের তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি। সাফল্য এসেছে ফল ও সবজি উৎপাদনেও। কৃষির এ অর্জনে কৃতিত্বের প্রধান দাবিদার ধরা হয় কৃষকদেরই। অন্যদিকে কৃষকদের এ অর্জনকে সম্ভব করার ক্ষেত্রে বড় সহায়ক ভূমিকা রেখেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
স্বাধীনতার আগে দেশে সম্প্রসারণ কার্যক্রম ছিল অনেকটাই বিচ্ছিন্ন ধরনের। বিভিন্ন ফসলের জাত ও কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত ছিল একাধিক প্রতিষ্ঠান। ফলে সম্প্রসারণ কার্যক্রমে এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল। একই কৃষকের কাছে একাধিক সম্প্রসারণ কার্যক্রম ও বার্তা নিয়ে যেত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মাঠ পর্যায়ে এর নেতিবাচক প্রভাবও পড়ছিল।
এ অবস্থা বজায় থাকে দীর্ঘদিন। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন আসতে শুরু করে ডিএই গঠনের পর। কৃষি সম্প্রসারণে নিয়োজিত ছয়টি সংস্থাকে একত্র করে প্রতিষ্ঠানটি গঠন করা হয় ১৯৮২ সালে।
বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক পর্যায়ের শীর্ষ সারিতে। সাফল্য আসছে ফল ও অন্যান্য কৃষিজ পণ্য উৎপাদনেও। এক্ষেত্রে কৃষকের পাশাপাশি কৃতিত্বের অন্যতম বড় দাবিদার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ কর্মীরা। খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আরো নানাভাবে দেশে কৃষি খাতের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রেখেছেন তারা। কৃষিজ উপকরণের প্রাপ্যতা, জমির গুণগত মান ধরে রাখা, প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়া, কৃষকের স্বার্থ রক্ষা ও প্রশিক্ষণ, কৃষিপণ্যের দামের নিশ্চয়তাসহ নানা ক্ষেত্রেই ডিএইর অবদান রয়েছে।
মোটা দাগে ডিএইর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো—ফসলের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কৃষিজ পণ্যের সহজলভ্যতা ও সরবরাহ বাড়ানো, কৃষি ভূসম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও সংরক্ষণ, কর্মব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্বের উন্নয়ন এবং কৃষিভিত্তিক কারিগরি শিক্ষার বাস্তবায়ন। ফসলের টেকসই ও লাভজনক উৎপাদন নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়তই এ-সংক্রান্ত নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে সংস্থাটি। প্রয়াস চালানো হচ্ছে দক্ষ, ফলপ্রসূ, বিকেন্দ্রীকৃত, এলাকানির্ভর, চাহিদাভিত্তিক ও সমন্বিত কৃষি সম্প্রসারণ সেবা নিশ্চিতের। একই সঙ্গে জোর দেয়া হচ্ছে কৃষকের প্রযুক্তি জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানোয়।
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কৃষকদের জন্য নীতিসহায়তামূলক নানা পদক্ষেপ নেয় সরকার। কৃষকের সঙ্গে এসব নীতিসহায়তার যোগসূত্র স্থাপনে একমাত্র মাধ্যম হলেন ডিএইর সম্প্রসারণ কর্মীরা। তাদের হাত ধরেই কৃষকের চাহিদা সম্পর্কে জানতে পারছে সরকার। আবার সরকারি দিকনির্দেশনাও তাদের মাধ্যমেই পৌঁছাচ্ছে কৃষকের কাছে। এর ধারাবাহিকতায় টেকসই হচ্ছে কৃষি উৎপাদন। নিশ্চিত হচ্ছে খাদ্যনিরাপত্তা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিএইর কর্মীরা প্রধানত দুটি কাজে দায়বদ্ধ। এর একটি হলো নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন। অন্যটি কৃষকদের সচেতন করার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক তৈরি। এছাড়া ফসল আবাদে নানা ধরনের পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীরা। উচ্চফলনশীল শস্যের নতুন জাত ও আবাদের পদ্ধতি সম্পর্কিত প্রায় সব তথ্যই কৃষকরা তাদের কাছে পাচ্ছেন। জানতে পারছেন মাটির গুণাগুণ, সার, কীটনাশক ও বীজ ব্যবহার এবং উৎপাদিত শস্যের বাজারজাতের তথ্য।
ক্যাটালিস্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চফলনশীল জাত ও মাটির গুণাগুণ সম্পর্কিত তথ্যের জন্য সম্প্রসারণ কর্মীদের ওপর নির্ভর করে থাকেন প্রায় ৩৫ শতাংশ কৃষক। প্রায় ২০-২৫ শতাংশ কৃষক ডিএইর সম্প্রসারণ কর্মীদের কাছ থেকে বীজ ও আবাদ পদ্ধতির তথ্য নিচ্ছেন। সেচ ও সারের ব্যবহার সম্পর্কিত তথ্য নিচ্ছেন ১২-১৬ শতাংশ।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়