রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি ও ছিনতাই করা মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে ফের মার্কেটে বিক্রি করতো কয়েকটি চক্র। এমন চারটি চক্রের মূলহোতাসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকার গুলিস্তান, শনির আখড়া, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৯০০টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দেশি ও বিদেশি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- হাফিজুর রহমান, রনি আহমেদ ইমন, জসিম উদ্দিন, জামাল উদ্দিন, আবুল মাতুব্বর, আহম্মদ আলী, কামাল, বাপ্পি, আবিদ হোসেন সনু, রবিন ভূঁইয়া, আরিফুল হোসেন, ইব্রাহিম মিয়া, সুজন, দেলোয়ার, আব্দুর রহমান, রাজু, জিহাদ হোসেন, মুনাইম, রাজু ও রফিক। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব’র আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ এই চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে চোরাই ও ছিনতাইকৃত বিভিন্ন আধুনিক মডেলের এনড্রয়েড মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলিস্তান, শনির আখড়া, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা মূলত ৪টি চক্রে বিভক্ত হয়ে ৫-৬ বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মোবাইল চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তারা মোবাইল চুরি, ছিনতাই ও আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের কারিগর। চক্রটি চোরাইকৃত মোবাইল ফোন বিক্রির জন্য বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ করে থাকে।
গ্রেপ্তারকৃত আব্দুর রহমান, রবিন ভূঁইয়া ও হাফিজুর রহমান মোবাইল ছিনতাই করে পরবর্তীতে চক্রের মূলহোতা রাজু, সুজন আবুল মাতুব্বরসহ অন্যদের নিকট স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দেয়। এছাড়াও তারা অন্যান্য ছিনতাইকারির নিকট থেকে ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে থাকে। গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ার এবং আবুল মাতুব্বর মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের অন্যতম কারিগর। তারা কযেক সেকেন্ডের মধ্যেই ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ারের নেতৃত্বাধীন চক্রটি গুলিস্তান এলাকায় সক্রিয়। এ চক্রের নিকট হতে ২৯১টি স্মার্ট ফোন এবং ১৭৯টি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আরিফুলের নেতৃত্বাধীন চক্রটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় সক্রিয়। এ চক্রের নিকট হতে ১০৬টি স্মার্ট ফোন এবং ৫৯টি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আবুল মাতুব্বর নেতৃত্বাধীন চক্রটি মোহাম্মদপুর এলাকায় সক্রিয়। এ চক্রের নিকট হতে ৯১টি স্মার্ট ফোন এবং ২৪টি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ইমনের নেতৃত্বাধীন চক্রটি খিলগাঁও এলাকায় সক্রিয়। এ চক্রের নিকট হতে ৫৪টি স্মার্ট ফোন এবং ৭৯টি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়। চুরি ও ছিনতাইকৃত মোবাইল বিক্রির সময় তারা ক্রেতাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে আইএমইআই পরিবর্তনের নিশ্চয়তা প্রদান করে। পাশাপাশি তারা মোবাইলের কেসিং, ডিসপ্লে ও পরিবর্তন করে ফেলে। গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেরা সকলেই চোরাইকৃত মোবাইলের পরিবির্তত আইএমইআই নম্বরের ফোন সেট ব্যবহার করে থাকে। এই চক্রটি ২০ হাজারের অধিক মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে বিক্রি করেছে বলে জানায়। ব্র্যান্ড এবং কোয়ালিটি ভেদে এসব মোবাইলের দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ভালো মানের মোবাইলগুলো তারা মেরামত করার দোকানে বিক্রি করে থাকে। অন্যান্য মোবাইল ফোনগুলো বিভিন্ন মার্কেটের সম্মুখে ভ্রাম্যমাণ টেবিলে করে বিক্রয় করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এই সকল ফোন বিভিন্ন অপরাধীরা ক্রয় করে বিভিন্ন গুরুতর অপরাধকর্মে ব্যবহার করে পরবর্তীতে ফেলে দেয়।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়