ডেনিমের জন্ম ডেনিমের বিশ্ববাজার

বিশ্বখ্যাত নৃতাত্ত্বিক ও দার্শনিক ক্লদ লেভি স্ত্রস জিন্স প্যান্ট-সংক্রান্ত প্রচুর চিঠি পেতেন। কারণ ডেনিম জিন্সের জন্য বিখ্যাত আমেরিকান ক্লথিং ব্র্যান্ড লেভি স্ত্রস অ্যান্ড কোম্পানির সঙ্গে নামের মিল। এ কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতার নামও লেভি স্ত্রস।

অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের তথ্যানুসারে, ২০২০ সালে ডেনিম জিন্সের মোট বাজার ছিল ৫ হাজার ৬২০ কোটি ডলার। কম্পাউন্ড অ্যানুয়াল গ্রোথ রেট (সিএজিআর) ফর্মুলা অনুযায়ী ৪ দশমিক ২ শতাংশ হারে বেড়ে ডেনিম জিন্সের বাজার ২০২১-২০৩০ সালের মধ্যে ৮ হাজার ৮১০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে। স্ট্যাটিস্টার পূর্বাভাস অনুসারে, ২০৩০ সালের মধ্যে ডেনিম জিন্সের বৈশ্বিক খুচরা বাজারের আকার হবে ৭ হাজার কোটি ডলার এবং মোট বাজারের পরিমাণ হবে ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে ডেনিম জিন্সের বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল ৭ হাজার ৭৬৭ কোটি ডলার। এ সংস্থার পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৩-২০৩০ সালের মধ্যে সিএজিআর ফর্মুলা অনুযায়ী ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হারে ডেনিম জিন্সের বৈশ্বিক বাজার বাড়বে। ভেরিফায়েড মার্কেট রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে ডেনিম জিন্সের মোট বাজারের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার। এ গবেষণা সংস্থার পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৩-৩০ সালের মধ্যে সিএজিআর ফর্মুলা অনুযায়ী ডেনিম জিন্সের বৈশ্বিক বাজার ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ হারে বেড়ে ১১ হাজার ৮২৮ কোটি ডলারে উন্নীত হবে। অর্থাৎ, প্রায় প্রতিটি গবেষণায়ই সারা বিশ্বে ডেনিম জিন্সের বিপুল জনপ্রিয়তার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

স্ট্যাটিস্টার তথ্যানুসারে, বিশ্বে ডেনিমের শীর্ষ রফতানিকারক দেশ চীন। দেশটির রফতানি করা ডেনিমে কটনের পরিমাণ ৮৫ শতাংশের কম থাকে। এ ধরনের ডেনিম সবচেয়ে বেশি আমদানি করে কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম। অন্যদিকে, অন্তত ৮৫ শতাংশ কটন আছে, এমন ডেনিম আমদানিতে শীর্ষে আছে তিউনিসিয়া।

সারা বিশ্বে ডেনিম জিন্সের বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর অন্যতম লেভি স্ত্রস। কোম্পানিটির বরাত দিয়ে স্ট্যাটিস্টা উল্লেখ করেছে, ২০২২ সালে লেভি স্ত্রস ৬১৭ কোটি ডলারের ডেনিম জিন্স বিক্রি করেছে। ২০২১ সালে কনটুর ব্র্যান্ডের বিক্রির পরিমাণ ছিল ২৫০ কোটি ডলার।

ডেনিম জিন্সের বৈশ্বিক বাজার কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। জিন্সের ফিটিং, মূল্য, ব্যবহারকারী, ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল ও অঞ্চল অনুযায়ী ভাগ করে এর বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষণ করা হয়। ফিটিংয়ের দিক থেকে জিন্সকে স্লিম ফিট, রেগুলার ফিট, স্কিনি ফিট, রিল্যাক্সড ফিট ইত্যাদি ভাগ করা হয়। মূল্যের দিক থেকে এটি মাস ও প্রিমিয়াম এ দুটি ভাগে বিভক্ত। ব্যবহারকারী অনুযায়ী নারী, পুরুষ ও শিশুদের জন্য আলাদা ভাগ আছে। ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের ক্ষেত্রে জিন্সের ভাগগুলো হলো হাইপারমার্কেট ও সুপারমার্কেট, কনভেনিয়েন্স ক্লথিং স্টোর, স্পেশালটি স্টোর, অনলাইন সেলস চ্যানেল ইত্যাদি। অঞ্চল ভিত্তিতে ডেনিম জিন্সের বাজার উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া-প্যাসিফিক, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাজুড়ে বিস্তৃত। অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, নারী ও পুরুষ সাধারণত রেগুলার ফিট জিন্স বেশি পছন্দ করে। এ গবেষণা সংস্থার তথ্যানুসারে, ২০২০ সালে বৈশ্বিক ডেনিম জিন্সের বাজারে রেগুলার ফিট জিন্সের অবদান ছিল ৯১৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার। ২০৩০ সালের মধ্যে এ পরিমাণ সিএজিআর ফর্মুলা অনুযায়ী ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বেড়ে ১ হাজার ৫৩৭ কোটি ডলারে উন্নীত হবে।

জিন্স মানে তো এক বিশেষ ডিজাইনের প্যান্ট বা ট্রাউজার, তবে জিন্স আর ব্লু জিন্স বা নীল জিন্স সমার্থক হয়ে গেছে। জিন্স ডেনিম নামের এক বিশেষ ধরনের কাপড় থেকে তৈরি। ডেনিমের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হচ্ছে ইন্ডিগো ডেনিম। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটা ডেনিম কাপড়কে প্রাকৃতিক নীল ব্যবহার করে রঙিন করা কাপড়। আর আমাদের দেশে যা ডেনিম, তাই জিন্স। কাপড় আর সেই কাপড়ে তৈরি প্যান্টের বিশেষ ডিজাইন নিয়ে আমাদের ভেদ নেই।

ডেনিম নামটি এসেছে ফরাসি শহর ‘দে নিমেজ’-এর নাম থেকে। প্রচলিত আছে যে এ শহরেই প্রথম ডেনিম কাপড় তৈরি হয়েছিল। যদিও আমেরিকান জিন্স তৈরি হয় ইউএস ডেনিম থেকেই। জিন্স নামটি এসেছে ইতালির জেনোয়া শহর থেকে, এ শহরে সুতি কাপড়ের ফুল প্যান্টকে জিন নামে ডাকা হয়। ডেনিম থেকে জিন্স প্যান্টের জন্ম হয়েছিল ১৮৭৩ সালের ২০ মে। এদিন আমেরিকান ক্লথিং ব্র্যান্ড লেভি স্ত্রস অ্যান্ড কোম্পানির মালিক লেভি স্ত্রস এবং নেভাডার দর্জি জ্যাকব ডেভিস জিন্স প্যান্টের পেটেন্ট নিয়ে নেন। সে হিসেবে বলা যায়, ১৮৭৩ সালের ২০ মে ছিল জিন্সের আনুষ্ঠানিক জন্মদিবস। লেভি স্ত্রস ও জ্যাকব ডেভিসের গল্পে যাওয়ার আগে জিন্স নিয়ে কিছু চমকপ্রদ তথ্য দেখে নেয়া যেতে পারে।

গ্লোবাল লাইফস্টাইল মনিটর ২০০৮ সালে কিছু দেশে একটি জরিপ চালায়। এতে দেখা যায় দুনিয়ায় মানুষ সপ্তাহে গড়ে ৩ দশমিক ৫ দিন জিন্স পরে। এর মধ্যে জার্মানরাই সবচেয়ে বেশি জিন্স পরে, সপ্তাহে ৫ দশমিক ২ দিন এবং একজন মানুষ গড়ে ৮ দশমিক ৬ জোড়া জিন্সের মালিক। জিন্স ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৬২ শতাংশ জানিয়েছে, তারা জিন্স প্যান্ট পরতে ভালোবাসেন। জিন্স ভালোবাসা এ মানুষের বেশির ভাগই ব্রাজিল ও কলম্বিয়ার। আর ভারতের মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে, তারা জিন্স ভালোবাসে (বাংলাদেশে জিন্স পরিধানকারীদের নিয়ে কোনো জরিপ হয়নি, তবে তরুণদের কাছে জিন্সের জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত)। উল্টোভাবেও একটা হিসাব আছে, যেমন কোনো দেশের কত সংখ্যক মানুষের কোনো জিন্স প্যান্ট নেই। রাশিয়ায় মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষের জিন্স নেই, মালয়েশিয়ায় তা ২৯ শতাংশ।

নীল জিন্স নীল কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে কতজন কী উত্তর দেবেন, কে জানে! জিন্স নিয়ে গবেষণা করা একটি দল একবার লন্ডনে একদল মানুষকে প্রশ্নটি করেছিল। কিন্তু কেউই সেভাবে উত্তর দিতে পারেনি। আবার অন্য অনেক বিশ্লেষক দেখেছেন, মানুষ বলে জিন্স আরামদায়ক তাই পরে। কিন্তু জিন্সের চেয়ে অনেক আরামদায়ক কাপড় তো দুনিয়ায় আছে। আর জিন্সের মূল বৈশিষ্ট্য তো এর মজবুতি।

মানুষ কেন জিন্স পরে? এ প্রশ্নের জবাবে ৩৯ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে, তারা ডেনিম কাপড়ের গুণাগুণের কারণে জিন্স পরে। ২২ শতাংশ জানিয়েছে, সুলভ দামের কথা। তবে জিন্স ফ্যাশনেবল, তাই পরে এমন কথা বলেছে খুব কম মানুষ। জিন্সের বিকাশে খুব ভালো ভূমিকা ছিল সুপারমার্কেটগুলোর। প্রাইমার্কের মতো প্রতিষ্ঠান জিন্সের প্রসারে ভূমিকা রেখেছে।

জিন্সের মতো আর কোনো পোশাক দুনিয়াজুড়ে এমনভাবে গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা পেয়েছে এমনটা খুঁজে পাওয়া কঠিন। আমেরিকান পশ্চিমের এই ক্ল্যাসিক প্রতীক এখন দুনিয়াজুড়ে নারী-পুরুষের ওয়্যারড্রোবে জায়গা করে নিয়েছে।

কাউবয়রা না হয় জিন্স পরে, কিন্তু তারপর সুপারমডেল, কৃষক, শ্রমিক, প্রেসিডেন্ট থেকে গৃহবধূ সবাই কেন জিন্স পরা শুরু করেছে?

মানুষ কেন জিন্স পরে? এর জবাব বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে দেবেন। কারো কাছে জিন্স আরামদায়ক, টেকসই ও সহজ পোশাক। আবার কারো কাছে সেক্সি। তবে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট কাজ হয়নি বলেই মনে করেন ‘ব্লু জিন্স’ গ্রন্থের লেখক, নৃতাত্ত্বিক ড্যানি মিলার। ফিলিপাইন থেকে তুরস্ক, ভারত থেকে ব্রাজিল—মিলার যেখানেই গেছেন সেখানেই তিনি বিমান থেকে নেমে তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া প্রথম ১০০ জনকে পর্যবেক্ষণ করেন। এবং প্রায় সবখানেই তিনি দেখেছেন অর্ধেক মানুষই জিন্স পরিহিত। তার মতে, চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার গ্রামাঞ্চল ছাড়া সবখানেই জিন্সের প্রভাব দেখা যায়।

জিন্সের সাফল্যের পেছনে এর সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও বস্তুগত গঠন উভয়ই ভূমিকা রেখেছে। উনিশ শতকে আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর খনি ও খামারের শ্রমিকদের কর্মস্থলের পোশাক হিসেবে জিন্স প্যান্টের ডিজাইন করা হয়েছিল। নেভাডার দর্জি জ্যাকব ডেভিসকে স্থানীয় এক শক্তপোক্ত গড়নের কাঠুরের জন্য এক জোড়া প্যান্ট তৈরি করতে বলা হয়েছিল। কাঠুরের চাহিদা ছিল তার প্যান্ট পরে যেন সে তার কাজ করতে পারে এবং প্যান্টটা যেন টেকসই হয়। জ্যাকব মূলত তাঁবু, ঘোড়ার জন্য কম্বল ও ওয়াগনের কভার তৈরি করতেন। প্যান্টের মজবুতি বৃদ্ধির জন্য জ্যাকব এতে পকেট ও ফ্লাইজে তামার রিভেট যুক্ত করেন। জ্যাকবের তৈরি করা ডিজাইন স্থানীয়দের বেশ মনে ধরে এবং শিগগিরই আরো অনেকে সে প্যান্ট তৈরির অর্ডার দিতে শুরু করে। শুরু হলো ইতিহাস।

ডেভিস তার পণ্যের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎটা বুঝতে পারছিলেন, কিন্তু সেটা পেটেন্ট করার সামর্থ্য তার ছিল না। তিনি তার ডেনিম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সান ফ্রান্সিসকোর লেভি স্ত্রসকে সাহায্যের জন্য চিঠি লিখলেন, ‘প্যান্টের রহস্য হচ্ছে, সেগুলোর পকেটে আমি যে রিভিটগুলো (পেরেক সদৃশ) যুক্ত করেছি। এত চাহিদা যে আমি প্যান্ট তৈরি করে কুলিয়ে উঠতে পারছি না... আমার প্রতিবেশীরা এ সাফল্যে আমাকে ঈর্ষা করছেন।’ এরপর লেভি স্ত্রস কোম্পানির মালিক লেভি স্ত্রস ও জ্যাকব মিলে ডেনিম জিন্সের পেটেন্ট নিয়ে নেন। লেভি স্ত্রস জার্মানি থেকে নিউইয়র্কে এসেছিলেন ১৮৫১ সালে। নিউইয়র্কে তার বড় ভাইয়ের শুকনো খাবারের একটা দোকান ছিল। লেভি স্ত্রস সেই দোকানে কাজ শুরু করেন। এরপর ১৮৫৩ সালে পশ্চিমাঞ্চলে গোল্ড রাশের খবর পেয়ে লেভি তাদের পরিবারের দোকানের শাখা খুলতে সান ফ্রান্সিসকো চলে যান। সেখানে খাবারের সঙ্গে তিনি সুতি কাপড়ও বিক্রি করতেন। এখানেই দর্জি জ্যাকব ডেভিস তার একজন খরিদ্দার হয়ে উঠেছিলেন।

লেভি’সের পেটেন্ট করা ট্রাউজার দুটো কাপড় থেকে তৈরি হতো— কটন ডাক ও ডেনিম। ‘ডেনিম: ফ্রম কাউবয়েজ টু ক্যাটওয়াক’ গ্রন্থের লেখক পল ট্রাংকা বলেছেন, লেভি’স শুরুতেই বুঝে গিয়েছিল ডেনিম কাপড়ের জিন্সটাই বিক্রি হবে। ডেনিম কাপড়টা আরামদায়ক, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নরম হয়ে যায় এবং প্রাকৃতিক নীল রঙ জিন্সকে একটা বিশেষ পরিচিতি তৈরি করে দিয়েছিল।

প্রাকৃতিক নীল সুতি কাপড়ের সুতার মধ্যে ঢুকে যায় না, বরং প্রতিটি সুতার বাইরে অবস্থান করে। ধীরে ধীরে রঙের এ কণাগুলো খসে পড়তে থাকে এবং একসময় কাপড়টা ফ্যাকাশে হয়ে অনন্য এক চরিত্র ধারণ করে। ডেনিম জিন্স কেন এত বিক্রি হয়? পল ট্রাংকার উত্তর হচ্ছে, ‘কারণ বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডেনিম বদলে যায় এবং যেভাবে এটা পরা হয়, তাতে মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রতিফলিত করে।’ মলিন হয়ে যাওয়ার বৈশিষ্ট্যের কারণে ডেনিম ধোয়াহীনভাবেই বিক্রি হতো। বিশ শতকের শুরুর দিকে শ্রমিকরা বুঝতে শুরু করেন, তারা আরো আরামদায়ক ফিটিংয়ের জন্য জিন্স প্যান্টকে সংকুচিত করতে পারেন।

ড্যানি মিলার মনে করেন, জিন্স হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে ব্যক্তিগত পোশাক। তবে জিন্সের বিস্ফোরণ যখন হয়েছিল, তখন মানুষ এত ব্যক্তিগত স্টাইল হিসেবে একে বিবেচনা করত না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে জিন্স শুধু আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় ব্যবহার হতো। আর পুবের রাজ্যগুলোয় জিন্স ছিল এক রোমান্টিক পোশাক, যা কেবল কাউবয়দের সঙ্গে যায়, পোশাকটা আমেরিকান কিন্তু একই সঙ্গে গ্রাম্য ও শ্রমজীবীদের পোশাক। তবে পুবের ধনীরা তাদের প্রতিদিনের জীবনে একঘেয়ে উঠলে খামারে গিয়ে কাউবয় সাজত এবং জিন্স পরাটা ছিল বেশ উত্তেজনাকর এক অভিজ্ঞতা। লেভি স্ত্রস অ্যান্ড কো.-এর মহাফেজখানার কর্মকর্তা ও ঐতিহাসিক লিন ডাউনি বলেন, ‘জিন্স ছিল এমন একটা পোশাক, যা আমেরিকান পশ্চিমকে উপস্থাপন করত। এটা ছিল এক জাদুকরী ব্যাপার।’

আমেরিকানরা যখন জিন্সকে ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে পরতে শুরু করল, তখন সেটা ছিল একটা বিদ্রোহের প্রতীক। ১৯৫৩ সালে মারলন ব্রান্ডোর ছবি দ্য ওয়াইল্ড ওয়ান এবং দুই বছর পরে জেমস ডিনের রেবেল উইদাউট আ কজ সিনেমায় এ দ্রোহের প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল। জিন্সের জনপ্রিয়তার জন্য জেমস ডিনের বিরাট কৃতিত্ব আছে। রেবেল উইদাউট আ কজ সিনেমায় তিনি টি-শার্ট, জ্যাকেট ও জিন্স পরে হাজির হয়েছিলেন, যা তৎক্ষণাৎ তরুণদের মধ্যে আলোড়ন তোলে এবং সবাই এ গেটআপে চলতে শুরু করে। সে আমলে ইন্টারনেট ছিল না, টেলিভিশনও কম ছিল। সে আমলে নায়ক-নায়িকাদের ফ্যাশন তরুণদের মধ্যে এখনকার চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব রাখত। ডিনের লেদার জ্যাকেট আর নীল জিন্স একটা নতুন বিদ্রোহের বার্তা ঘোষণা করেছিল। পিতার মতো ৯টা থেকে ৫টার চাকরি ডিন চাননি। তার চাওয়া ছিল রোমাঞ্চ, যেমনটা ছিল কাউবয়দের জীবন। কাউবয়দের জিন্স পরে নায়ক ডিন সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন।

ব্রান্ডো, ডিন, এলভিস প্রিসলির পাশাপাশি নারীদের পক্ষ থেকে অভিনেত্রী মেরিলিন মনরোরও ভূমিকা ছিল জিন্সকে জনপ্রিয় করতে। তিনি তার অন্যতম সেরা ছবি দ্য মিসফিটসে জিন্স পরেছিলেন।

ডাউনি বলেন, ‘আপনি যদি ১৯৫৩ সালে ১৫ বছর বয়সের এক কিশোর হতেন, তাহলে আপনিও মারলন ব্রান্ডো হতে চাইতেন। হলিউডের কস্টিউম ডিজাইনাররা সব ব্যাড বয়দের ডেনিম পরিয়ে দিয়েছিল। ডিন ও ব্রান্ডো পর্দার বাইরেও জিন্স পরতেন। তারা একটা প্রতি-সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। একদল তরুণ যুদ্ধ থেকে ফিরে যুক্তরাষ্ট্রে বাইকে করে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে, সংসার-সন্তানে তাদের আগ্রহ ছিল না। তারা যুক্তরাষ্ট্রের এস্টাবলিশমেন্টকে থোড়াই কেয়ার করত, তারা কারো অনুগত ছিল না এবং তারা জিন্স পরত।’ বিভিন্ন এলাকায় স্কুলে জিন্স প্যান্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, এতে কিশোররা আরো আগ্রহ সহকারে জিন্সকে গ্রহণ করে নিয়েছিল। আমেরিকার বাইরেও বিভিন্ন অঞ্চলে জিন্স ছড়িয়ে পড়ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপ ও জাপানে আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলের অনেক শ্রমজীবী তরুণ বিভিন্ন ধরনের কাজ করত। ছুটির দিনে নিজেদের আত্মপরিচয় হিসেবে তারা জিন্স পরে ঘুরে বেড়াত। এলভিস প্রিসলি সবসময়ই জিন্স পরেছেন। বাবার মতো হতে না চাওয়া আমেরিকান তরুণরা জিন্স পরাকে নিয়েছিলেন প্রথম বিদ্রোহ হিসেবে। এ প্রসঙ্গে বর্তমান লেখকের প্রত্যক্ষ করা একটা অভিজ্ঞতা যুক্ত করা যায়। এ সহস্রাব্দের শুরুতে বাংলাদেশের এক মফস্বলের হাই স্কুলে সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী পিতা ছেলেকে (বর্তমান লেখকের বন্ধু) জিন্স প্যান্ট পরতে দিতেন না। অন্যদিকে, একই স্কুলে নির্দিষ্ট রঙেরই জিন্স পরে যাওয়ায় লেখককে মাঝে মাঝেই শিক্ষকদের টিপ্পনী শুনতে হতো। কারণ হাই স্কুলে জিন্স রীতিবিরুদ্ধ।

জিন্স প্যান্ট একটা সহজ, সুখী, উৎফুল্ল আমেরিকান জীবনকে উপস্থাপন করত, যা দেখে অন্য অঞ্চলের মানুষও জিন্সের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। ষাটের দশকে আমেরিকার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যেও জিন্সের সংস্কৃতির বিকাশ দেখা যায়। যুদ্ধের পর শ্রমিকরা নানা দুর্দশায় পড়েছিলেন, সঙ্গে ছিল বর্ণবাদ। ছাত্ররা নিপীড়িত শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি জানাতে জিন্স পরে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল।

জিন্স পোশাকের দিক থেকে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে এক কাতারে নিয়ে এসেছিল। কারণ জিন্স দামে সস্তা, টেকসই, নতুন-পুরনো দুই ধরনের চেহারাই আছে, বেশি ধোয়ার দরকার হতো না কিংবা ইস্ত্রি করতে হতো না। অন্যদিকে, জিন্স প্যান্ট শরীরে সহজে ফিট হয়ে যেত। এ ফিট হওয়াটা নারীদের ফ্যাশনে গুরুত্বপূর্ণ, তাই তারা সহজেই জিন্সকে গ্রহণ করেছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের দশকে সব ধরনের তারুণ্যে সব সাবকালচার—রকাবিলি, হিপ্পি, পাংক সবাই নিজেদের মতো বিভিন্ন ডিজাইনের জিন্স ব্যবহার করেছে। আজকের দিনে জিন্সের আবেদন নিয়ে গবেষকদের দুটি মত আছে। একদল মনে করে, জিন্স এখন মৌলিক, সাধারণ, আরামদায়ক পোশাকের প্রতীক; কিন্তু আরেক দল এখনো মনে করে যে জিন্স তারুণ্যের পোশাক। ট্রাংকা শেষোক্ত মতের অনুসারী। তিনি বুড়ো বয়সে জিন্স পরাকে স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে পারেন না। কুখ্যাত জুটি—জর্জ বুশ ও টনি ব্লেয়ার তাদের প্রথম সামিটের মিটিংয়ে ডেনিম পরে গিয়েছিলেন। এক বিবৃতিতে তারা এ বিষয়ে বলেছিলেন, ‘উই আর রেগুলার গাইজ’; কিন্তু তাদের এ বিবৃতি ট্রাংকা এত সহজে মেনে নেননি। তার মতে, বুশ আর ব্লেয়ারকে সেদিন ডেনিম জিন্সে গর্দভের মতো লাগছিল। 

জিন্সের ব্যাপারে পিউরিটান পশ্চিমারা চেষ্টা করেন একটা জিন্স যতদিন না ধুয়ে পরা যায়। আর এটা বলাও অনাচার হবে না যে সত্যিই পরিষ্কার থাকার এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে জিন্সের।

২০১১ সালে ইউনিভার্সিটি অব অ্যালবার্টার মাইক্রোবায়োলজির ছাত্র জশ লে এক জোড়া ডেনিম জিন্স না ধুয়ে ১৫ মাস ব্যবহার করেছিলেন। জশ সে জিন্স জোড়ায় ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ নির্ণয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করেন। এরপর সে জিন্স ধুয়ে আবার পরীক্ষা করা হয়। জশ আশ্চর্য হয়ে দেখেন যে জিন্স ধোয়া ও ধোয়ার আগের ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ প্রায় সমান। এ অনানুষ্ঠানিক পরীক্ষায় জশের সঙ্গে ছিলেন টেক্সটাইল সায়েন্সের অধ্যাপক র‍্যাচেল ম্যাককুইন। র‍্যাচেলের কথায়, ‘অন্তত আমাদের এ পরীক্ষায় দেখা গেছে জিন্স নিয়মিত না ধুলেও তাতে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যায় না।’

তিন বছর এবং প্রতিদিন একটা জিন্স প্যান্টই পরেছিলেন অ্যারিজোনার খনি শ্রমিক হোমার ক্যাম্পবেল। কেবল রোববারগুলো বাদে। জিন্স কেন শ্রমিকদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, সেটা হয়তো এ টেকসই বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই অনেকটা বোঝা যায়। ১৯২০ সালে হোমার তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে লেভি স্ত্রস অ্যান্ড কোম্পানিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তবে এ চিঠিতে তিনি যা লিখেছিলেন, তাতে আরো বড় চমক আছে। তিন বছর নিয়মিত ব্যবহারের পর তার জিন্সটি ছিঁড়ে গিয়েছিল এবং এটাই ছিল চিঠি লেখার কারণ। এর আগেও তিনি লেভি স্ত্রসের জিন্স ব্যবহার করেছিলেন এবং সেগুলো আরো বেশিদিন টিকে ছিল। তিনি ৩০ বছর ধরে লেভি স্ত্রসের জিন্স ব্যবহার করেছেন এবং ১৯১৭ সালে অ্যারিজোনা থেকে কেনা জিন্সটাই সবচেয়ে কম টিকেছে, মাত্র তিন বছর! তাই তিনি লেভি স্ত্রস কোম্পানির ফ্যাব্রিক বিভাগের প্রধানের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে জিন্সটা ছিঁড়ে যাওয়ার পেছনে তার কোনো ত্রুটি ছিল, নাকি দোষটা কাপড়ের। উল্লেখ্য, চিঠির সঙ্গে হোমার সে ছেঁড়া জিন্সটাও পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

জেমস সুলিভান জিন্সকে বলেছেন ‘আমেরিকার ইউনিফর্ম’। উনিশ শতকে শ্রমজীবীদের পোশাক থেকে জিন্স আজ এ রকম মর্যাদায় অধিষ্ঠিত।

মুম্বাই বিখ্যাত বলিউডের জন্য। বলিউডের সিনেমায় নাচ-গান বিশেষ স্থান দখল করে আছে শুরু থেকেই, সঙ্গে থাকে নায়ক-নায়িকাদের পোশাক। বলিউডের নায়ক এবং কিছু পুরুষ পার্শ্বচরিত্র ডেনিম জিন্স প্যান্ট ও জ্যাকেট পরতে শুরু করেন সত্তরের দশকের মাঝামাঝি। এ দশকের শেষভাগে নায়িকারাও ডেনিম জিন্স প্যান্ট পরা শুরু করেন। তবে সে সময় চরিত্র ও লোকেশনের সঙ্গে নায়ক-নায়িকাদের জিন্স পরাটা সেভাবে মানাত না। এরপর ধীরে ধীরে ভারতীয় সমাজে, এমনকি মধ্যবিত্তের মধ্যেও জিন্সের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে। বলিউডে এ সময় প্রেমের ছবির চেয়ে শহরের নিম্নবর্গের মানুষের জীবন, ন্যায়বিচারের ছবি গুরুত্ব পেতে শুরু করে। অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্রর মতো নায়করা গুণ্ডা থেকে নায়ক হয়ে উঠছিলেন সিনেমার কাহিনীতে। ভারতে পুরুষদের ক্ষেত্রে জিন্সের গ্রহণযোগ্যতা যতটা সহজ হয়েছে, মেয়েদের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। উচ্চবিত্ত মেয়েদের পরনে জিন্স সহজ হয়ে উঠলেও নিম্নবর্গের জন্য তা ছিল না। মেয়েদের জিন্স পরা নিয়ে যে ভারতীয় সমাজে দ্বন্দ্বটা এখনো যায়নি, সেটা গত কয়েক বছরের কিছু খবরেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভারতের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েদের জিন্স পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। বিজেপিঘেঁষা অনেক নেতা মেয়েদের জন্য জিন্সকে ভিনদেশী পোশাক হিসেবে সমালোচনা করেছেন।

বলিউডে জিন্স প্যান্টের ভালো ব্র্যান্ডিংও হয়। ২০০৬ সালে ‘ধুম টু’ সিনেমার গানে হৃতিক রোশনের ছেঁড়া জিন্স তরুণদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। দরদ এ ডিসকো গানে শাহরুখকে পুল থেকে শুধু ডিঅ্যান্ডজি ব্র্যান্ডের একটা জিন্স পরে উঠতে দেখা গিয়েছিল। র‍্যাঙ্গলার জিন্সের বিজ্ঞাপনে জন আব্রাহামের শরীরী আবেদনকে ভালোই ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ২০০৮ সালে লেভি জিন্সের প্রচারণার জন্য অক্ষয় কুমার পেয়েছিলেন ১৫ লাখ ডলার!

সত্তরের দশকে বিক্ষিপ্তভাবে শুরু হলেও ডেনিম এখন বলিউডের নায়ক-নায়িকাদের মূল পোশাক। পুরনো দিনে নারী ও পুরুষের পোশাকের ভিন্নতার ধারণা নায়িকাদের ক্ষেত্রে ডেনিম পরায় কিছু সংস্কার জিইয়ে রেখেছিল, যা এখন আর নেই, বলা ভালো অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে। গুরুগম্ভীর পরিস্থিতি থেকে যৌনতাময় দৃশ্য—সবখানেই ডেনিম জিন্সের সরব উপস্থিতি। সব ধরনের জিন্সই—স্টোন-ওয়াশড, স্ট্রেসড, ডিসট্রেসড এখন বলিউডে দেখা যায়। বলিউডে জিন্সের মাধ্যমে নায়কের শরীরকে আধুনিক, মুক্ত একই সঙ্গে ভারতীয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। অন্যদিকে, ডেনিম জিন্সের বিখ্যাত পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো গত কয়েক দশকে ভারতের বাজারে চলে আসায় সেগুলো সহজলভ্য হয়ে গেছে। ফলে বলিউডে জিন্সের কদর আরো বেড়েছে। বলিউডে জিন্সের উপস্থাপনা এবং ভারতীয় বাজারে জিন্সের লভ্যতা সমান্তরালেই বেড়েছে।
এই বিভাগের আরও খবর
টোল আদায়ে দেড় হাজার কোটির মাইলফলকে পদ্মা সেতু

টোল আদায়ে দেড় হাজার কোটির মাইলফলকে পদ্মা সেতু

বাংলা ট্রিবিউন
টানা ৩ দিন ধরে কমছে সোনার দাম

টানা ৩ দিন ধরে কমছে সোনার দাম

দৈনিক ইত্তেফাক
বোতলের সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭, খোলা ১৪৭ টাকা

বোতলের সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭, খোলা ১৪৭ টাকা

দৈনিক ইত্তেফাক
মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট না বসানোর চেষ্টা চলছে

মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট না বসানোর চেষ্টা চলছে

প্রথমআলো
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারে ব্রাজিল

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারে ব্রাজিল

বিডি প্রতিদিন
ভারতে স্বর্ণের দামে সর্বকালের রেকর্ড

ভারতে স্বর্ণের দামে সর্বকালের রেকর্ড

বিডি প্রতিদিন
ট্রেন্ডিং
  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া

  • অবিশ্বাস্য কীর্তিতে হাজার রানের ক্লাবে এনামুল বিজয়