ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়নে ১৭৮ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি

ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত মহাসড়কটি দুপাশে ধীরগতির গাড়ি চলাচলের জন্য আলাদা লেনসহ চার লেনে উন্নীত করছে সরকার। মহাসড়কটির উন্নয়নে গতকাল ১৭৮ কোটি ডলার অর্থায়ন অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ২১০ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কটির উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারকে ধাপে ধাপে (মাল্টিট্রান্স ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি বা এমএফএফ) এ অর্থ দেবে সংস্থাটি। প্রথম ধাপে দেয়া হবে ৪০ কোটি ডলার। গতকাল এডিবি এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সড়ক নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক বাণিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যে ঢাকা-সিলেট করিডোরে এ বিনিয়োগ করা হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে এডিবি। এতে বলা হয়েছে, মহাসড়কটির উন্নয়নকাজ শেষ হলে তা ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি নতুন রুটে পরিণত হবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আখাউড়া, শেওলা ও তামাবিল স্থলবন্দর হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় তিনটি প্রদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হবে। ভুটান ও মিয়ানমারের সঙ্গেও বাণিজ্যের দ্বার উন্মোচন করবে এ করিডোর। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সরকার যে অর্থনৈতিক করিডোর তৈরির পরিকল্পনা করছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

এডিবির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ট্রান্সপোর্ট স্পেশালিস্ট সাতোমি সাকাগুচিকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রফতানি খাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি একটি শক্তিশালী অবস্থানে চলে এসেছে ও সামনে রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা। দেশের অর্থনীতির এ প্রবৃদ্ধিকে ধরে রাখতে যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।

সাতোমি সাকাগুচি বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রোগ্রামের অংশ। করিডোরটির উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হলে পরিবহন ব্যয় কমবে। প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে এ প্রকল্প।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুমোদিত হয়। প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। ২১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কে আটটি ফ্লাইওভার, ১৩টি ওভারপাস, পাঁচটি রেল ওভারপাস, ৬৯টি ব্রিজ, ১০টি আন্ডারপাস, তিনটি ইন্টারচেঞ্জ, দুটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সঙ্গে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফুটপাতও থাকবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। দুই পাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেনসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কাজটি ছয়টি প্যাকেজে ভাগ করেছে সওজ অধিদপ্তর। ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা (কাঁচপুর)-নরসিংদী অংশটিকে রাখা হয়েছে প্যাকেজ-১-এ। একইভাবে প্যাকেজ-২-এ নরসিংদী-ভৈরবের ৩৩ কিলোমিটার, প্যাকেজ-৩-এ সরাইল-বুধন্তীপুরের ৩৫ কিলোমিটার, প্যাকেজ-৪-এ বুধন্তীপুর-বাহুবলের ২৮ কিলোমিটার, প্যাকেজ-৫-এ বাহুবল-শেরপুর সেতুর ৩৫ কিলোমিটার ও প্যাকেজ-৬-এ রাখা হয়েছে শেরপুর থেকে পীর হাবিবুর রহমান চত্বরের ৩৬ কিলোমিটার অংশ।

এর মধ্যে গত ২৯ এপ্রিল প্রথম প্যাকেজে থাকা ঢাকা-নরসিংদী অংশের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে সওজ অধিদপ্তর। ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কের পাশাপাশি ২৭টি কালভার্ট, পাঁচটি সেতু, একটি ফ্লাইওভার ও দুটি ওভারপাস নির্মাণ করা হবে এ প্যাকেজের মাধ্যমে। ‘এক ধাপ দুই খাম’ পদ্ধতিতে দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ১৪ জুন। প্যাকেজ-১-এর কাজটিকে আবার দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম লটে কাঁচপুর থেকে সোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণসহ রক্ষণাবেক্ষণ এবং দ্বিতীয় লটে সোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে নরসিংদী বিসিক পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো লট দুটির যেকোনো একটি কিংবা দুটিতেই দরপত্র দাখিল করতে পারবেন।

আনুষঙ্গিক অবকাঠামোসহ মহাসড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদার সময় পাবেন চার বছর। নির্মাণকাজ শেষ করার পরের এক বছর ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড। এ সময়ের মধ্যে সড়কে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে ঠিকাদারকে নিজ খরচে তা ঠিক করে দিতে হবে। ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু হবে ছয় বছরের পারফরম্যান্স বেজড মেইনটেন্যান্স কাজ। মহাসড়কটি নির্মাণের পর সব মিলিয়ে সাত বছর রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে ঠিকাদারকেই। মহাসড়কটির প্রত্যেকটি প্যাকেজের ক্ষেত্রেই একই নিয়ম অনুসরণের কথা জানিয়েছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

সবকিছু পরিকল্পনামতো এগোলে আগামী বছরের প্রথম দিকেই মহাসড়কটির নির্মাণকাজ আমরা শুরুর প্রত্যাশার কথা বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করিম।
এই বিভাগের আরও খবর
এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে: ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান

এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে: ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান

প্রথমআলো
ব্যাংকের ওপর আস্থা কমায় টাকা না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে মানুষ

ব্যাংকের ওপর আস্থা কমায় টাকা না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে মানুষ

কালের কণ্ঠ
বিদ্যুৎ নিয়ে আদানির সাথে হওয়া চুক্তি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

বিদ্যুৎ নিয়ে আদানির সাথে হওয়া চুক্তি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

নয়া দিগন্ত
প্রাইম ব্যাংক ও সেবা ডট এক্সওয়াইজেডের মধ্যে চুক্তি সই

প্রাইম ব্যাংক ও সেবা ডট এক্সওয়াইজেডের মধ্যে চুক্তি সই

বাংলা ট্রিবিউন
ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু

ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু

বাংলা ট্রিবিউন
ভারতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম, কেজি উঠেছে ৭০–৮০ রুপিতে

ভারতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম, কেজি উঠেছে ৭০–৮০ রুপিতে

প্রথমআলো
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া