নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শুরু থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি কভিড-১৯-এর টিকা গ্রহণের পরও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তারপরও মহামারীর শুরুতে দেশের মানুষ যতটুকু সচেতন ছিলেন, এ বছরের শুরুতে এসে তার অনেকটাই কমে গেছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা সবচেয়ে কম দেখা যাচ্ছে। আশঙ্কার কথা হলো, দেশে করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে তরুণরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আর নতুন আক্রান্তদের বেশির ভাগের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে আইসিইউ সুবিধার।
গতকাল রাজধানীর শ্যামলীতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে ওয়ান স্টপ টিবি সেন্টার উদ্বোধনকালে এমন তথ্যই দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, ‘গত দুই মাস আমরা স্বস্তিতে ছিলাম। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সামনে বড় সমস্যায় পড়তে যাচ্ছি। নতুন করে এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই তরুণ। যাদের বেশির ভাগের জন্যই আইসিইউ প্রয়োজন পড়ে।’ চলমান করোনা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হওয়ায় সরকার আবারো কঠোর স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন মনিটর করতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গতকাল তথ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনার বিষয়টি জানানো হয়েছে।
করোনার এবারের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কড়াকড়ি আরোপ করে গতকালই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ প্রজ্ঞাপন দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার গত কয়েক মাসের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংক্রমণের হার রোধের জন্য সবক্ষেত্রে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ পরিস্থিতিতে সবার মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি মনিটরিংয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এদিকে, কয়েকদিন ধরেই সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে হাজারের বেশি। এ সংখ্যা গতকাল নতুন মাত্রা পেয়েছে। এদিন ১ হাজার ১৫৯ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। দৈনিক রোগী শনাক্তের এ সংখ্যা গত ৭৪ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ সময় আরো ১৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। একদিনে মৃতের এ সংখ্যা গত সাত সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশে কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারের দেয়া করোনাবিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, এর আগে সর্বশেষ গত ৩০ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৩৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। গতকালের চেয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল গত ২৪ জানুয়ারি। সেদিন মোট ২০ জন করোনা রোগী মারা গিয়েছিলেন। তিন সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দৈনিক নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার তুলনায় শনাক্তের হার গত ৪ জানুয়ারির পর গতকাল ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। গতকাল শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশে।
গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৭২টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে ১৬ হাজার ২০৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৫ জনে। গতকাল পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩২ লাখ ৬০ হাজার ৭৬১টি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ লাখ ৩ হাজার ৭৯০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৮ জন করোনা রোগী মারা যাওয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫৪৫ জনে। মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৮০ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়