তুরস্কে আজ রবিবার প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। দেশটির প্রবল ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের জন্য এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় লড়াই। কারণ এবার তাকে মোকাবেলা করতে একজোট হয়েছে সবগুলো বিরোধী দল।
এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারগলু শুক্রবার তার সমর্থকদের যে সমাবেশটিতে হাজির হয়েছিলেন, তাতে তার দুই পাশে ছিলেন অনেকগুলো রাজনৈতিক দল থেকে আসা মিত্ররা। তুরস্কের রাজনীতিতে অনেক দিন এমনটা ঘটেনি। আংকারায় তখন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমেছে। তার মধ্যেই সেই সমাবেশে কিলিচদারগলু ঘোষণা করলেন, তিনি দেশে ‘শান্তি ও গণতন্ত্র’ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন।
অন্যদিকে যাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তিনি ভোটারদের আহ্বান জানাচ্ছেন, ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সেই এরদোয়ান বলছেন, বহু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তুরস্কের মাথা উঁচু রেখেছেন তিনি।
চ্যালেঞ্জগুলোর একটি ছিল অর্থনীতি, যার ওপর দিয়ে দুই অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি এবং ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্পের মতো বহু ঝড়-ঝাপটা বয়ে গেছে। তুরস্কের এবারের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময় এ দুটিই ছিল প্রধান ইস্যু।
কামাল কিলিচদারগলুর বয়স এখন ৭৪ এবং তাকে একজন মৃদুভাষী লোক হিসেবেই মনে করা হয়। কিন্তু শুক্রবারের সমাবেশে তিনি এক জোরালো বক্তৃতা দিয়েছেন আগত জনতার উদ্দেশে। তার সমর্থকরা মনে করছেন, গত দুই দশক ধরে এরদোয়ান পার্লামেন্টের পরিবর্তে নিজের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন এবং সেই ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য এবারই সবচেয়ে বড় সুযোগ উপস্থিত।
কামাল কিলিচদারগলুর বয়স এখন ৭৪ এবং তাকে একজন মৃদুভাষী লোক হিসেবেই মনে করা হয়। কিন্তু শুক্রবারের সমাবেশে তিনি এক জোরালো বক্তৃতা দিয়েছেন আগত জনতার উদ্দেশে। তার সমর্থকরা মনে করছেন, গত দুই দশক ধরে এরদোয়ান পার্লামেন্টের পরিবর্তে নিজের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন এবং সেই ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য এবারই সবচেয়ে বড় সুযোগ উপস্থিত।
জনমত জরিপগুলোতে দেখা যায়, সামান্য ব্যবধানে হলেও তাতে এগিয়ে আছেন কিলিচদারগলুই। তার সমর্থকরা এখন এ স্বপ্ন দেখার সাহস করছেন যে তিনি হয়তো ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে সরাসরি নির্বাচিত হবেন, দ্বিতীয় দফা ভোটাভুটির আর দরকার হবে না।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে টিভি সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, হেরে গেলে তিনি কী করবেন? জবাবে এরদোয়ান বললেন, ‘এটা একটা অর্থহীন প্রশ্ন, কিন্তু তার সরকার গণতান্ত্রিকভাবেই ক্ষমতায় এসেছে। আমাদের দেশ যদি মত পরিবর্তন করে, তাহলে আমরা ঠিক তাই করব যা গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন।’
এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন ৫০ লাখ নতুন ভোটার। তাদের একজন হলেন ফিরাত। তিনি বলছেন, এটা দেখে তিনি খুবই খুশি যে মধ্যবাম রিপাবলিকান পিপলস পার্টির প্রধানের সঙ্গে একই মঞ্চে এবার রক্ষণশীল এবং জাতীয়তাবাদীদের দেখা যাচ্ছে।
এখানে ছিলেন জাতীয়তাবাদী এবং ছয়দলীয় জোটের একমাত্র নারী নেত্রী মেরাল আকসেনার, আরো ছিলেন ইসলামপন্থী ফেলিসিটি পার্টির নেতা তেমেল কারামোল্লাওলু।
কিলিচদারগলুর দল মূলত ধর্মনিরপেক্ষ, কিন্তু তিনি হিজাব পরেন এমন নারীদের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দিতে অনেক পরিশ্রম করেছেন।
ভোটের আগে উত্তেজনা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে আংকারায় তার শেষ দুটি সমাবেশে কিলিচদারগলু বুলেটপ্রুফ পোশাক পরে মঞ্চে ওঠেন। এ ভোটযুদ্ধ হয়ে উঠেছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট পদের জন্য চারজন প্রার্থীর একজন মুহাররেম ইন্স বৃহস্পতিবার ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তার অভিযোগ, সামাজিক মাধ্যমে তাকে লক্ষ্য করে ভুয়া যৌন ভিডিও ছেড়ে ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে।
বিরোধীরা এসব ভিডিওর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করলে ক্রেমলিন থেকে এক বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়। অন্যদিকে এরদোয়ান, যিনি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছেন, তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘পুতিনকে আক্রমণ করলে তা তিনি ভালোভাবে নেবেন না।’
এরদোয়ানের সমাবেশগুলোতে নীল, কমলা ও সাদা রঙের একে পার্টির পতাকা নিয়ে বহু লোক আসেন। এসব সমাবেশে আগতরা একে পার্টিকে পুরোপুরি সমর্থন করেন বলেই মনে হয়। সবুজ জ্যাকেট পরে মঞ্চে ওঠা এরদোয়ান তার বক্তৃতায় বলেন, ‘আমরা স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাসপাতাল বানিয়েছি। শহরগুলোর চেহারা বদলে দিয়েছি, আমাদের নিজস্ব তেল ও গ্যাস আহরণ করেছি।’
প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরদোয়ানের কৌশল ছিল এটাই—বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প এবং প্রবৃদ্ধি অর্জন। বড় শহরগুলোতে তার চিহ্ন দেখা যায়, যদিও সিনক্যানের মতো ছোট শহরে ততটা নয়।
এরদোয়ানের একে পার্টির পক্ষে এখনো জোরালো সমর্থন আছে, তবে তিনি জাতীয়তাবাদী এমএইচপি এবং তার পিপলস এলায়েন্সের ছোট ছোট দলগুলোর সমর্থনের ওপরও নির্ভরশীল। তার সমর্থনের সব বড় উৎস হচ্ছে রক্ষণশীল বা জাতীয় তুর্করা। তা ছাড়া এরদোয়ান তার বক্তৃতায় পশ্চিমা বিশ্ব এবং এলজিবিটি, অর্থাৎ পুরুষ ও নারী সমকামী এবং ট্রান্সজেন্ডারদের বিরুদ্ধেও আক্রমণ শাণিয়ে থাকেন।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়