দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারছেন না বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ঝালকাঠীতে লঞ্চে অগ্নিদ্বগ্ধরা। হতাহত হয়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলেও ওই দৃশ্য চোখে ভাসছে সব সময়। ঘুমের মধ্যেও আঁতকে ওঠেন তারা। আগুনে পুড়ে মৃত্যুর বীভৎস দৃশ্য কাছ থেকে দেখে মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন অনেকে। শিশুসহ নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েও প্রাণে বেঁচে গেছেন অনেকে।
এদিকে, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে ঢাকা থেকে আগত ৭ বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকের সেবায় ক্রমেই সুস্থ হয়ে উঠছেন দ্বগ্ধরা। আইসিউতেও চিকিৎসাধীন ৩ জনের অবস্থারও উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে কোনো কোনো দগ্ধ রোগী প্রয়োজনীয় ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। রোগীদের সব চাহিদা পূরণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক।
ঢাকা থেকে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ঝালকাঠীর কাঁঠালিয়ার নিজ বাড়ি যাচ্ছিলেন আফজাল হোসেন। ঝালকাঠী শহর ছাড়িয়ে অভিযান লঞ্চটি যখন সুগন্ধা নদী অতিক্রম করছিলো তখন ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণ হয়। ওই সময় প্রাণে বাঁচতে লঞ্চের তৃতীয় তলায় ওঠেন তিনি। কোন উপায়ান্তর না পেয়ে তিনি নদীতে ঝাঁপ দেন। এর আগে প্রাণে বাঁচতে শিশু ও নারীদের আকুতি এখনও চোখে ভাসছে তার। ওই দুঃসহ স্মৃতি কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না আফজাল।
একইভাবে পরিবারের ৪ সদস্য নিয়ে অভিযান লঞ্চের তৃতীয় তলার কেবিনে বরগুনায় যাচ্ছিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মো. বাইজিদ। রাতে লঞ্চের নিচতলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চিৎকার-আহাজারিতে ঘুম ভেঙে যায় তাদের। আগুন বাড়তে থাকলে কোনো উপায় না দেখে লঞ্চের সামনে গিয়ে শিশু ভাতিজাকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। পানির গভীর থেকে কোনোমতে উপরে ভেসে উঠে তীরে শিশুটিকে রেখে ফের লঞ্চের কাছে গিয়ে ভাবিকে লাফ দিতে বলেন তিনি। লাফ দিয়ে পা ভেঙে যাওয়া ভাবীকে নদীর তীরে রেখে ফের লঞ্চে উঠে ভাবীর বৃদ্ধ মাকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাইজিদ।
তাদের মতো অনেক যাত্রী বেঁচে গেলেও দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারছেন না তারা। কীভাবে বেঁচে গেছেন তাও বলতে পারছেন না। ওই দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, ওই লঞ্চে দগ্ধ রোগীদের মধ্যে ৩৭ জন রবিবার সকাল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলো শেবাচিম হাসপাতালে। ঢাকা থেকে আগত ৭ জন বার্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিবিড়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের। এতে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন তারা। তাদের চিকিৎসায় খুশি রোগীরা। তবে কেউ কেউ প্রয়োজনীয় ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
ঢাকার বার্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের প্রধান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুরুল আলম জানান, চিকিৎসাধীন ৩৭ জন রোগীর সবার অবস্থা স্থিতিশীল এবং আশঙ্কামুক্ত। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। কেউ চিকিৎসা বঞ্চিত হবেন না এবং তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানান তিনি।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়