গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অবনতি হয় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির। রাজধানীর অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে সাধারণ এলাকায়ও বেড়ে যায় খুন-খারাবি ও চুরি-ডাকাতি।
গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অবনতি হয় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির। রাজধানীর অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে সাধারণ এলাকায়ও বেড়ে যায় খুন-খারাবি ও চুরি-ডাকাতি। সামাজিক এ অস্থিরতা এখনো কাটিয়ে ওঠা যায়নি। প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি-ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীবাসী অতিরিক্ত সচেতন হয়েছে বাসা ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদারে। বিক্রি বেড়েছে তালা-চাবির। রাজধানীর তালার দোকান ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
জুরাইনের বাসিন্দা হালিমা আক্তার জানান, গত সোমবার সকালে বাসায় তালা দিয়ে সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যান। দুপুর ১২টার পর প্রতিবেশীর ফোনে জানতে পারেন তালা ভেঙে বাসায় ডাকাতি হয়েছে। খোয়া গেছে স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা। ডাকাতির ঘটনার জন্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহৃত দুর্বল তালার কথা জানিয়েছেন তিনি।
যাত্রাবাড়ীতে গতকাল সকালে তালা কিনতে এসেছেন শনির আখড়ার বাসিন্দা লিয়াকত আলী। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাসায় একটি তালা ব্যবহার করছি। তবে আরো বেশি নিরাপত্তা দিতে নতুন তালা নিতে এসেছি। ইদানীং আমাদের এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়েছে।’
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে কথা হয় তালা বিক্রেতাদের সঙ্গে। কারওয়ান বাজারের তালা-চাবি ব্যবসায়ী মো. ইশতিয়াক হাসান আনাস বলেন, ‘সম্প্রতি তালা-চাবি বিক্রি দুই-আড়াই গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। আগে যদি দিনে তালা বিক্রি হতো ১০টা, এখন বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫টা।’
তালা বিক্রি দ্বিগুণ হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি জানান, ক্রেতারা এসে বলেন, ‘ভালো তালা দিন।’ কেউ বলেন, তার বাসায় চুরি হয়েছে। আবার কেউ জানান, পাশের বাসায় চুরি হয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানোর অংশ হিসেবে তারা ভালো তালা খুঁজছেন।
একই কথা বলেছেন কারওয়ান বাজারের আরেক তালা বিক্রেতা মো. ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘তুলনামূলক তালা-চাবির বিক্রি বেড়েছে। এটা হওয়ার কারণ হলো রাজধানীর অনেক এলাকায় এখন চুরি-ডাকাতি বেড়ে গেছে। এক এলাকায় চুরি হলে এটা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে যায়। তখন মানুষ আসে আরো ভালো, আরো নিরাপত্তা দিতে পারে এমন তালার খোঁজে।’
তালা-চাবি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে ৫০০ টাকার বেশি দামের তালা তুলনামূলক ভালো। তবে হাজার টাকার ওপরের তালা চোরদের পক্ষে ভাঙা কঠিন। বাসা কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তালা কেনার আগে সেটা কতটা নিরাপত্তা দিতে পারে, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তালা বিক্রেতারা।
চিটাগাং রোডের তালা ব্যবসায়ী আল আমিন খান বলেন, ‘বাসাবাড়িতে লাগানোর জন্য ভারত ও চায়নার তালা পাওয়া যায়। সবচেয়ে ভালো ভারতের আলীগড়ের তালা। চায়না তালাও ভালো। তবে বর্তমানে কোথাও কোথাও ভারতীয় তালা-চাবির সংকট দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এটা ঠিক হয়ে যাবে।’
চুরি-ডাকাতির আতঙ্ক নগরবাসীর সুষ্ঠু জীবন ধারণে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি অসুস্থ নগরীর প্রতি দিকনির্দেশ করে বলে মন্তব্য করেছেন নগরবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘আমরা সুন্দর নগরীর কথা বলি। সবার আগে নিরাপদ নগরী প্রয়োজন। নগরবাসী যদি চুরি-ডাকাতির আতঙ্কে সবসময় জড়োসড়ো থাকে তাহলে সেটা কোনোভাবে সুস্থ-সুন্দর শহর দাবি করা যাবে না।’
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়