কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নগরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। এছাড়া বিজিবি ও সেনাবাহিনী তৎপর রয়েছে মাঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে মাঠে রয়েছে ২০টি টিম। তবে কঠোর লকডাউনের মধ্যে সরকারি নির্দেশে শিল্প কলকারখানা ও গার্মেন্ট খোলা থাকায় পরিবহন সঙ্কটের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা।
এদিন সকালে নগরের চাষাড়ায় একটি গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকবাহী একটি বাস আটকে দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান ফারুক ওই বাস থেকে শ্রমিকদের নামিয়ে দিয়ে হেঁটে প্রতিষ্ঠানে যাবার নির্দেশ দিলে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ওই সময় ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এছাড়া বেলা সোয়া ১১টার সময় নগরের চাষাড়া এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহানের নেতৃত্বে সেনা বাহিনীর একটি দল অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন তল্লাশি করে। ওই সময় তারা যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করেন এবং বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। তারা জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হওয়া মানুষের মুখে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করেন। সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন মেজর মাশকুর রহমান ও ক্যাপ্টেন আরেফিন সিদ্দিকী।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ২০টি টিম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী, সেনা বাহিনী ও বিজিবির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।
এছাড়া সকাল থেকেই নগরের গুরুত্বপর্ণ পয়েন্ট চাষাড়া গোলচত্বর এলাকায় পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায়। তাদের সহায়তা করেন আনসার সদস্য, বিভিন্ন কলেজের রোভার স্কাউটের সদস্য এবং রেড ক্রিসেন্টর সদস্যরা।
নারায়ণগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে সেনাবাহিনীর ৫টি দল ও ৩ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ২০ টিম ও জেলা পুলিশের ৩১টিম কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য রোভার স্কাউট ও রেড ক্রিসেন্টের সেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সকাল থেকে শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের মন্ডলপাড়া, ২ নম্বর রেলগেট, চাষাড়া চত্ত্বর, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখসহ কয়েকটি স্থানে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া অন্যান্য সড়ক-মহাসড়কগুলোতেও রয়েছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল। সেন্ট্রাল খেয়াঘাট, চাষাড়া চত্ত্বরসহ কয়েকটি স্থানে রয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
সদর উপজেলার সৈয়দপুরের ফকিরবাড়ির জাকির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তিনি চাকরি করেন সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলির নীট কনসার্ন নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায়। ফকিরবাড়ি থেকে দ্বিগুণ ভাড়ায় শহরের ডিআইটি আসতে ইজিবাইকে ওঠেন। পুলিশি বাধায় অর্ধেক রাস্তায় নেমে যেতে হয়। বাকি পথ হেঁটে এসে ডিআইটি থেকে কারখানার বাসে ওঠেন। তবে সেই বাস থামিয়ে দেওয়া হয় চাষাড়ায়। একই স্থানে সেন্সিবল গার্মেন্টসের যাত্রীবাহী তিনটি বাস থামিয়ে প্রায় দেড়শ’ শ্রমিককে নামিয়ে দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, 'আমাদের ফ্যাক্টরি খোলা রাখছে কিন্তু গাড়িগুলো কেন বন্ধ রাখলো? সব যখন বন্ধ তাহলে ফ্যাক্টরিও বন্ধ করে দিক। আমাদের এইভাবে হয়রানি করার কোনো মানে নেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, লকডাউনের নামে আমাগো মতো গরীবরে যেন কষ্ট না দেয়।'
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়