নিবন্ধনের ঝুঁকিতে চলে যাচ্ছে গণঅধিকার পরিষদ। দলটি কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ায় কে এই দলের আসল নেতা তা নিয়ে সংশয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলটির আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুর- দুই নেতার বিরোধ শেষ পর্যন্ত ভাঙনের দিকে ঠেলে দেয়ায় দলটির অস্তিত্ব নিয়ে এখন সংশয়ে অনেকেই।
গত ৪ জুলাই রেজা কিবরিয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর এক চিঠিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদনে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের সব দলিলাদি উপেক্ষা করতে বলেন। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, গত ১ জুলাই দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও দপ্তর সম্পাদক শাকিলুজ্জামানের সই করা প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে তার বহিষ্কারের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। দলের আহ্বায়ক হিসেবে অন্যায়ভাবে তিনি বহিষ্কৃত হতে পারেন না।
চিঠিতে তিনি সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের জমা দেয়া সব দলিল উপেক্ষা করার জন্য সিইসিকে অনুরোধ করেন। আবার রেজা কিবরিয়াকে বহিষ্কারের বিষয়ে অবহিত করে তার কোন দলিলাদী ও আবেদন গ্রহণ না করতে ইসিতে আবেদন করেন সদস্য সচিব নূর। পক্ষে-বিপক্ষে চিঠি পাওয়ার পর দলটিকে নিবন্ধন দেয়া যাবে কিনা তা নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করছে ইসি।
এদিকে আগামী দুদিনের মধ্যে রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত প্রিতম-জামান টাওয়ারে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে ভবন কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার বিকালে জমির মালিকের পক্ষে মো. রাশিদুল আজিম মিয়া সংস্থাটির সদস্যসচিব নুরুল হক নূরকে নোটিস দেন।
ইসির দল নিবন্ধন কমিটির আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, নিবন্ধন পাওয়ার আগেই দলটির কার্যনিবাহী কমিটির বিভক্তি ও অফিস ছাড়ার নোটিসে গণঅধিকার পরিষদের আদৌ নিবন্ধন দেয়া যাবে কিনা তা নিয়ে আবারো যাচাই-বাছাই করা হবে।
আগামীকাল সোমবার বিকাল ৩টায় গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়াকে দলটির সদস্য সচিব ও দপ্তর সম্পাদককে সঙ্গে নিয়ে ইসির ‘রাজনৈতিক দলের তথ্য পুনঃযাচাই কমিটি’র সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে। ইসির পক্ষ থেকে দলটির অফিসসহ সব কিছু পুনঃযাচাই বাছাই করা হবে। সব মিলিয়ে ইসির নিবন্ধন যাচাই বাছাই কমিটির অনেকেই মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদের নিবন্ধন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
ইসির উপসচিব মো. আব্দুস সালামের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন গঠিত নির্ধারিত কমিটি ‘গণঅধিকার পরিষদ’ নামের রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কার্যকারিতা এবং অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত তথ্য আগামী ১০ জুলাই পুনঃযাচাই করবে। ওই সময়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্তসহ উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো। এছাড়া দলটির কার্যালয় ছাড়ার নোটিসের পর নিবন্ধনের আগে দলটির অফিস যাচাই-বাছাই করবে ইসি।
তিনি বলেন, আবেদনের সময় কমিটির যে ফর্ম ছিল সে অনুযায়ী কমিটি এখনো আছে কিনা, দলটির মধ্যকার কোনো বিরোধ যা প্রকাশ্যে এসেছে, আহ্বায়ককে বাহিষ্কারসহ অন্যান্য জটিলতা তা কতটা সত্য এবং আদৌ নিবন্ধনের সময় দেয়া অফিসের ঠিকানা সঠিক কিনা এসব আবারো যাচাই বাছাই করা হবে।
তাছাড়া দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া অভিযোগ করেছেন, অন্যায়ভাবে তাকে বহিষ্কার করেছেন সদস্য সচিব নূর। তিনি সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের জমা দেয়া সব দলিল উপেক্ষা করতে সিইসিকে অনুরোধ করে চিঠি দেন। সে প্রেক্ষিতে দলটির কাগজপত্র আবারো যাচাই বাছাই করা হবে। কেননা, নিবন্ধনের আগেই যদি আহ্বায়ক, সদস্য সচিব এভাবে পাল্টাপাল্টি একে অপরকে বহিষ্কার করতে থাকে তাহলে দলটির অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য ১০৮টি দল আবেদন জমা দেয়। নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে এসব আবেদন থেকে মাত্র ১২টি দলকে চূড়ান্ত করে সেই সব দলের দলীয় কার্যালয়সহ অন্যান্য তথ্য যাচাই করছে। গণঅধিকার পরিষদ এই ১২টি দলের মধ্যে রয়েছে। দলটির বিষয়ে এরইমধ্যে দুই দফা যাচাই করা হয়েছে। আবারো হবে।
এদিকে গণঅধিকার পরিষদের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, শীর্ষ দুই পদধারীর মতবিরোধের কারণে আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াকে বহিষ্কার করে যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করেছে এক পক্ষ। এরই প্রেক্ষিতে রেজা কিবরিয়ার দল পাল্টা বহিষ্কার করেছে নূরের পক্ষকে। নুরুল হক ও মো. রাশেদ খানকে গণঅধিকার পরিষদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন বহিষ্কৃত আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়