নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। জেলার সব কয়টি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। এতে জেলার ১০ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যা কবলিত এলাকায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গবাদি পশুখাদ্যের।
এদিকে গতকাল রোববার বিকেলে জেলার মোহনগঞ্জের রাজিবপুর গ্রামে পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গবাদিপশুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে পানিতে পড়ে মারা যান তিনি।
এরই মধ্যে বন্যার পানিতে নেত্রকোনা-কলমাকান্দা, নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জের রেলপথসহ জেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে বিদ্যুৎহীন সাত উপজেলা। জেলার হাওর উপজেলা খালিয়াজুরীতে বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও তাদের চিকিত্সা সেবা দিতে কাজ করছেন সেনাবাহিনী। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। খালিয়াজুরী সদর ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং সহায়-সম্পদ নিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের জন্য শুকনা খাবার সরবরাহ করা্ হচ্ছে।
খালিয়াজুরী উপজেলায় ৭০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্না নিয়ে বিপাকে আছেন তারা। দুর্গত পরিবারগুলো সহায়-সম্পদ ও গবাদিপশু নিয়ে ৫২টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এ উপজেলার বেশিরভাগ সরকারি অফিস, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের নিচতলায় কোমড় পানি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অফিসে ও হাসপাতাল ভবনে রাতযাপন করছেন। রোববার সকাল থেকে ১০৪ জন সেনাসদস্য উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ কাজে সহায়তা শুরু করেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলার ১০টি উপজেলার ৬২টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। এই পর্যন্ত বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য ৩২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাতে প্রায় এক লাখ পাঁচ হাজার ৯৩৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে থাকা বানভাসি অনেকেই প্রশাসন থেকে ত্রান সহায়তা না পাওয়ায় অভিযোগ করেছেন। কাছাকাছি কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে এবং উঁচু কোনো স্থানে। আবার অনেকেই তাদের গবাদি পশু রেখেছেন সড়কের উপর নির্মিত ব্রীজে।
প্রশাসনের পক্ষ বানবাসির মানুষের মাঝে নগদ টাকা, শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হলেও প্রশাসনের এই সহায়তা অনেকের কাছেই পৌঁছেনি বলে জানান দুর্গতরা।
জেলার বারহাট্টা উপজেলার বন্যা দুর্গতদের মাঝে সহায়তা ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি বারহাট্টার কান্দাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, সিকেপি উচ্চ বিদ্যালয়ে ত্রান বিতরণ করেন এবং গবাদি পশু মালিকদের মাঝে গো-খাদ্য বিতরণ করেছেন।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়