ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই উজবেক রেফারি রিসকুল্লায়েভকে ঘিরে ধরলেন তপু বর্মণরা। প্রশ্নবিদ্ধ এক ম্যাচ পরিচালনার অভিযোগে রেফারির কাছে কৈফিয়ত চাইতে গেলেন স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনও। কোচ ও ফুটবলারদের থামাতে সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালদ্বীপের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে প্রবেশ করলেন। গ্যালারি থেকে হাজার হাজার দর্শক চিৎকার করে রেফারির বিচার চাইতে লাগলেন। ‘ভুয়া, ভুয়া’ কোরাসে চারপাশ কাঁপিয়ে তুললেন। কিন্তু ততোক্ষণে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। ট্র্যাজিক এক গল্প লিখে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। বিতর্কিত এক পেনাল্টি গোলে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিশ্চিত করে নিয়েছে নেপাল।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের অলিখিত সেমিফাইনালে বাংলাদেশ- নেপাল ম্যাচে উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুখী হবে এতে কোনো সন্দেহ ছিল না। বাংলাদেশি দর্শকরা ভুভুজেলা আর ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সেই উত্তেজনাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল বহুগুণে। চারদিকের গ্যালারিতে হাজারও বাংলাদেশি সমর্থক নেপালের জন্য ছিল ভীতির কারণ। বিশেষ করে সুমন রেজার গোলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার পর। ম্যাচের নবম মিনিটে সেট পিস থেকে গোল করে বাংলাদেশ। ডি বক্সের বাম দিকে রাকিবকে ফাউল করায় ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন রেফারি। জামালের নেওয়া শটে নেপালের ডিফেন্ডারের মাথা ছুঁয়ে বল ডি বক্সে এলে অনেকটা লাফিয়ে হেডে গোল করেন সুমন রেজা। অনুশীলনে সেট-পিসে গোল করার জন্য বেশ জোর দিয়েছিলেন কোচ অস্কার। তারই সুফল ছিল এই গোল। বাংলাদেশ ১-০ গোলের এই ব্যবধান ম্যাচের ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ধরে রাখে। এমনকি ৭৯ মিনিটে আনিসুর রহমান জিকোর লাল কার্ডের পরও ডিফেন্সে দুরন্ত ছিল বাংলাদেশ। ডি বক্সের বাইরে গিয়ে হ্যান্ডবল করায় লাল কার্ড দেখেন জিকো।
ম্যাচজুড়ে অনেক বিতর্কিত সিদ্ধান্তই দিয়েছেন রেফারি। কিন্তু ৮৮তম মিনিটে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেলেন। ডি বক্সের ভিতরে বিশ্বনাথের বিপক্ষে বিতর্কিত এক ফাউলের সিদ্ধান্ত দিয়ে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। গোল করে নেপালকে সমতায় ফেরান অঞ্জন বিস্তা। এই একটা গোল ‘স্পিরিট অব ফুটবল’টাই শেষ করে দেয়। এমনকি ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নেপালের কোচ আবদুল্লাহ আল মুতাইরিও বললেন, ‘আমি ঠিক নিশ্চিত নই ওটা পেনাল্টি ছিল কি না। তবে রেফারির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।’ নেপাল সম্মান জানাতেই পারে। সিদ্ধান্তটা তাদের অনুকূলেই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ কীভাবে মেনে নিবে এসব! শত প্রতিবাদেও কাজ হয়নি। ম্যাচে কিংবা ম্যাচের পরও প্রতিবাদী ছিল ফুটবলার ও দর্শকরা। ড্রেসিং রুমে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফুটবলাররা।
বড় দুঃখ ছিল বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মনে। অভিমান ছিল ফুটবলারদের ওপর। ক্ষোভ ছিল ফুটবলের সঙ্গে জড়িত সবার প্রতি। এই দুঃখ, এই অভিমান, এই ক্ষোভ ছিল স্বতঃসিদ্ধ। কতদিন অপেক্ষা করা যায়! আজ হয়নি তো কাল হবে। কাল হয়নি তো পরশু হবে। কিন্তু এ যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কেটে গেল! ফুটবলের মানুষরা গোমড়া মুখে বসে থাকেন। জনসমক্ষে প্রাণ খুলে হাসতে পারেন না। সফলতা নেই যে! কত এসএ গেমস গেল, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ গেল, দ্বিপক্ষীয় আর ট্রাই নেশন্স কাপ গেল! কই, ফুটবলের উঠোনে আনন্দের জোয়ার উঠেনি। ১৬ বছর ধরে সাফের ফাইনাল খেলার অপেক্ষায় থেকে গেল।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়