বরিশাল সিটিতে ভোটের মাঠে বিএনপির নেতারা

জিয়াউল হক মাসুম। তিনি বরিশাল নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যসচিব। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এরই মধ্যে ওই ওয়ার্ডে তিনি তার নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করেছেন বেশ ঘটা করে। 

সেখানে চলছে উঠান বৈঠক আর কর্মী সমাবেশ। বরিশাল বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার বিষয়টি জানালেও নগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবিরের ওয়ার্ডে এমন চিত্রই দেখা যায়। যদিও মাসুমের দাবি, তিনি ওয়ার্ড বিএনপির পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান খান ফারুক।

তবে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীরা জানালেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, মীর জাহিদের ঘনিষ্ঠজন মাসুম। তিনিই (মীর জাহিদ) মাসুমকে ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যসচিব বানিয়েছেন। আর এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মীর জাহিদ। তার কাউন্সিলর পদ যাতে হাতছাড়া না হয় সে জন্য ঘনিষ্ঠজন মাসুমকে প্রার্থী করেছেন। আর মাসুমের পক্ষে ভোটও চাইছেন তিনি।

তবে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির বলেন, দলের কঠোর নির্দেশ হলো- এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে না। এ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে বহিষ্কারসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অসত্য।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩০টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো শক্ত প্রার্থী বিএনপিতে রয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন নেতা-নেত্রী রয়েছেন, যারা একাধিকবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

সেই তালিকায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির, যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাফ মাহমুদ সিকদার, জিয়াউদ্দিন সিকদার, কে এম শহীদুল্লাহ, হুমায়ুন কবির। আরো আছেন সেলিম হাওলাদার, হাবিবুর রহমান টিপু, ফিরোজ মাহমুদ, আ ন ম সাইফুল আহসান আজিমসহ অনেক নেতা। যারা বেশ কয়েকবার বিপুল ভোটের ব্যবধানে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

দলটির শক্ত প্রার্থী হিসেবে ভোটের আলোচনায় এরাসহ রয়েছে বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতার নাম। মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে থাকার কারণে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসারে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই তাদের।

তবে দল অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিলেও নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতা। এদের মধ্যে কয়েকজন সরাসরি বিএনপির কোনো কমিটিতে না থাকলেও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত।

নির্বাচনে থাকছেন যারা
সরাসরি বিএনপির কোনো কমিটিতে না থাকলেও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত রয়েছেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান টিপু, সাবেক কমিটির সহসভাপতি হুমায়ুন কবির, সাবেক সহসভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ, সদস্য মাইনুল হক, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম, মো. সেলিম হাওলাদার এবং মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাবের আব্দুল্লাহ সাদি।

আরো আছেন সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জাহানারা বেগম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সদস্যসচিব জিয়াউল হক মাসুম, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে হুমায়ন কবির, ৭ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিনা বেগম ও ১০ নম্বর  সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে রাশিদা পারভীন।

ইতিমধ্যেই ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মাইনুল হক। তিনি মহানগর বিএনপির সাবেক কমিটির সদস্য ছিলেন জানিয়ে বলেন, আমাদের তো চিঠি দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে কেউ নিষেধ করেনি। চিঠি পেলে প্রত্যাহার করে নেব।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। তবে বর্তমানে বিএনপির কোনো কমিটিতে নেই তিনি।

এ প্রসঙ্গে ফিরোজ বলেন, এবারও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করব। মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করেছি। ভোটাররা চাইলে অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকব।

কাউন্সিলর পদ দলীয় নয়
সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু কাউন্সিলর পদে নির্বাচন না করতে দল থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি দলীয় নেতাকর্মীদের।

এমনটি জানিয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম বলেন, ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এবারও নির্বাচন করবেন তিনি। তবে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পেলে তখন বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আমিনুল ইসলাম আমিন। তিনি নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ চায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান টিপু মনে করেন, দলের সিদ্ধান্ত মেয়র পদের জন্য প্রযোজ্য। কেননা কাউন্সিলর নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয় না। তাই এবারও ৬ নম্বর ওয়ার্ডেই লড়বেন ওয়ার্ডটির সাবেক এ কাউন্সিলর।

দলের চেয়ে জনগণ বড়
নগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পাঁচবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর মো. সেলিম হাওলাদার মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। মো. সেলিম বলেন, বিএনপি করি ঠিকই। সাধারণ মানুষের জন্য আমি নির্বাচন করব। দল যদি আমাকে বহিষ্কার করে, তাতে আমার আপত্তি নেই। কারণ আমি সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি। সব দলের নেতাকর্মীরাই আমাকে ভোট দেন।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা মাঠ ছাড়ব না। সংরক্ষিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মজিদা বোরহান জানান, তিনি নির্বাচনে থাকবেন।
এই বিভাগের আরও খবর
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন নাসির উদ্দীন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন নাসির উদ্দীন

ভোরের কাগজ
ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেফতার

ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেফতার

জনকণ্ঠ
জয়কে অপহরণ মামলা : জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

জয়কে অপহরণ মামলা : জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

নয়া দিগন্ত
প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে ড. ইউনূস

প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে ড. ইউনূস

জনকণ্ঠ
গাজীপুরে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

গাজীপুরে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

বিডি প্রতিদিন
পালানোর সময় গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র গ্রেপ্তার

পালানোর সময় গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র গ্রেপ্তার

দৈনিক ইত্তেফাক
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া