অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন গত বছরের মে মাসে। দায়িত্ব নেয়ার পর পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নেয়া সংস্কারমূলক পদক্ষেপসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা বলেছে বণিক বার্তা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহেদী হাসান রাহাত
দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পাঁচ মাস পর পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কী করতে চেয়েছিলেন এবং কতটুকু করতে পেরেছেন সেটি আপনার কাছ থেকে জানতে চাই।
কভিড-১৯ অতিমারী এত দ্রুত চলে যাবে বলে মনে হয় না। এ কারণে আমরা কিন্তু একদিনও অফিস ফাঁকি দিইনি। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই সেই সময় কাজ করেছেন। গত বছর বাজার যে অবস্থায় চলে গিয়েছিল সেখান থেকে ভালো হওয়া ছাড়া আর কোনো সুযোগ ছিল না। সেই সময় আমরা চিন্তা করে দেখলাম সুশাসন নিয়ে কাজ করার এটিই সঠিক সময়। কারণ একটা সময় গিয়ে সুশাসন নিয়ে কাজ করাটা কঠিন হয়ে যেতে পারে। এটা চিন্তা করেই আমরা সুশাসনের বিষয়ে গুরুত্ব দিই এবং আগের কমিশন যেসব আইনকানুন করে গিয়েছিল সেগুলোকে যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিই। এক বছর পাঁচ মাসে আমাদের হয়তো আরো অনেক কিছুই করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু অন্যান্য অফিস বন্ধ থাকার কারণে অনেক কিছুই করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অনেকেই এখন পুঁজিবাজারকে অতিমূল্যায়িত বলছেন। কিন্তু আমরা যতটুকু পিছিয়েছি সেটিই তো এখনো পূরণ করতে পারিনি। সামনে এগোনো তো অনেক দূরে। আমরা এখন সেদিকেই এগোতে শুরু করব।
সামনের দিনগুলোতে পুঁজিবাজার নিয়ে কমিশনের পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাই।
আমাদের নিজেদের আয়ত্তের মধ্যে থাকলে অনেক কিছুই আমরা করে ফেলতে পারতাম। যেমন তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) আমরা পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের আওতায় নিয়ে এসেছি। সামনের বছর এটি ভালো রূপ নেবে। ডিএসইর অটোমেশন হয়ে যাওয়ার পর আমাদের ট্রেকগুলো যদি নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (ওএমএস) চলে আসতে পারে তাহলে বাজার আরো অনেক বড় হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন যে সফটওয়্যার দিয়ে কাজ করি সেটি দিয়ে আমরা বাজার বড় করতে পারছি না। আমাদের মেইন বোর্ড, এসএমই বোর্ড, অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড, ট্রেজারি বন্ড এগুলোর লেনদেন করার জন্য যে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা তৈরি করা দরকার সেটি আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। শুধু তা-ই নয়, পুরো পুঁজিবাজার, ইন্টারমিডিয়ারিজ ও কোম্পানিগুলোকে আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে চাই। আগামী এক-দুই বছর কিংবা আমাদের মেয়াদে এটি করে যেতে পারব বলে আশা করছি। এটি বাস্তবায়িত হলে আইনকানুন পরিপালন ও সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপরেখার আমাদের অংশের কাজটি আমরা করতে পারব। ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএবি) সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে আমরা ভুল তথ্য নিয়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) সময় নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরির বিষয়টি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। এখন আর আগের মতো ভুল তথ্য দিয়ে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। দিলেও আমাদের কাছে সেটি ধরা পড়বে। ফলে পর্যায়ক্রমে আমরা অনেক সংস্কার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পেরেছি। আমি বলব না যে আমরা পুরোপুরি করতে পেরেছি। তবে আপনারাও নিশ্চয় একমত হবেন যে আমরা অনেকখানি করতে সক্ষম হয়েছি। বাকিটুকুও সামনে করে ফেলব। অনেকেই আমাদের সমালোচনা করবে, বাধাবিপত্তি আসবে, কিন্তু সেগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে আমাদের বিবেকের কাছে যেটি সঠিক মনে হয় সেটিই করছি।
আপনি পুঁজিবাজারকে বড় করার কথা বলছেন। এজন্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে হবে। আর সেটি করতে হলে বাজারে নতুন নতুন পণ্য এবং আরো অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ার সরবরাহ করতে হবে। দেশী-বিদেশী অনেক ভালো কোম্পানিই বর্তমানে পুঁজিবাজারের বাইরে রয়েছে। এদের তালিকাভুক্তির জন্য আপনি কী উদ্যোগ গ্রহণ করবেন জানতে চাই?
গত বছরে আমরা যে আইপিওগুলো অনুমোদন দিয়েছি সেগুলোর আবেদন আরো আগে থেকেই করা ছিল। এখন যে আইপিওগুলো আসবে সেগুলো মানসম্পন্ন হবে। কারণ এখন সবাই জানে যে চাইলেই আমরা সবাইকে আইপিও দিচ্ছি না। যাচাই-বাছাই করে যাদের দীর্ঘমেয়াদে টেকসই ব্যবসায়িক সক্ষমতা রয়েছে তাদেরই আইপিও অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। আবার যাদের তহবিল সংগ্রহ করা প্রয়োজন কিন্তু ব্যবসায় ঝুঁকিও রয়েছে এমন কোম্পানিকে আমরা স্মল ক্যাপ প্লাটফর্মের জন্য অনুমোদন দিচ্ছি। এক্ষেত্রে আমরা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকির মুখে ফেলছি না। বরং কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর যাদের ঝুঁকি বহনের সক্ষমতা রয়েছে তাদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। এ কোম্পানিগুলো যদি ভালোভাবে ব্যবসা করে সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় মূলধন অর্জন করতে পারে তাহলে তারা পরবর্তী সময়ে মূল মার্কেটে আসতে পারবে। আর যেসব কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য ভালো নয়, যাদের ব্যবসা টেকসই হবে না সেগুলো বাতিল করে দিচ্ছি। সামনের দিনগুলোতে আপনারা কম পান কিন্তু ভালো আইপিও পাবেন। এখন অনেক ভালো কোম্পানি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। জুন ও সেপ্টেম্বর ক্লোজিংয়ের আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সামনে অনেক কোম্পানিই আবেদন করবে। ছয় মাসের মধ্যেই আপনারা ব্যাংক-বীমাসহ বেশকিছু ভালো আইপিও দেখতে পাবেন।
দেশে ভালো ব্যবসা করছে এমন অনেক বহুজাতিক কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারের বাইরে রয়ে গেছে। এসব কোম্পানিকে বাধ্যতামূলকভাবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য কোনো উদ্যোগ নেবেন কি?
আমরা তাদের বরাবরই পুঁজিবাজারে আসার জন্য উৎসাহিত করছি। হয়তো আগামী ছয় মাসের মধ্যে এক-দুটি বহুজাতিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার উদ্যোগ নিতে পারে। বাকিগুলোও আশা করছি চলে আসবে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সুশাসন মেনে চলে। তাই তারা যদি কোনো বাজারে দেখে যে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে তখন সেখানে যেতে চায় না। এজন্য আমরা সুশাসনকে গুরুত্ব দিচ্ছি। বহুজাতিকরা যদি দেখে যে এখানে সুশাসন রয়েছে তখন তারা চলে আসবে। এ বছরের শেষ থেকে আগামী বছরের মধ্যে আশা করছি বেশকিছু বহুজাতিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে চলে আসবে।
আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর বেশকিছু কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনাদের বিশদ পরিকল্পনা কী জানতে চাই।
আমরা তিন ধরনের কোম্পানিকে চিহ্নিত করেছি। যারা ভালো ব্যবসা করছে, বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ দিচ্ছে তাদের আমরা স্বাগত জানাই। তাদের যেকোনো প্রয়োজনে আমরা সহযোগিতা করছি। কিছু কোম্পানি রয়েছে যারা মোটামুটিভাবে চলছে কিন্তু পর্ষদ বা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা রয়েছে, উৎপাদনের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে এমন কোম্পানিগুলোকে আমরা নার্সিং করে, হিউম্যান ক্যাপিটাল দিয়ে সহায়তা করছি। এতে ভালো ফলও পাওয়া যাচ্ছে। আরেক শ্রেণীর কোম্পানি রয়েছে যেগুলোর ব্যবসা বন্ধ, লোকসানে রয়েছে, উদ্যোক্তারা দেশের বাইরে চলে গেছেন কিংবা তাদের পাওয়া যাচ্ছে না, অনেকে আবার দেশ থেকে বিদেশে অর্থ নিয়ে গেছেন এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে আমরা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের পুঁজিবাজার ভালো রিটার্ন দিচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকাশনায়ও বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সর্বোচ্চ রিটার্নের বিষয়টি উঠে এসেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমছে। এর কারণ কী?
দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগের চিত্রটিকে আমি পরিবর্তনশীল হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই। কখনো বেড়েছে আবার কখনো কমেছে। এটার একটি ভালো দিকও রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে যে আমাদের পুঁজিবাজার থেকে নাকি কোনো লাভই নেয়া যায় না। বিভিন্ন সামিট, কনফারেন্স ও রোড শোতে বিদেশীদের সঙ্গে যখন আমাদের কথা হয়েছে তারা বলেছে আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে কোনো কিছু আনতে পারি না। তো এখন তো তারা বিক্রি করে তাদের দেশে মুনাফা নিয়ে যেতে পারছে। আমরা এ বিষয়ই বিদেশীদের কাছে তুলে ধরতে চাই যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফা করা যায় এবং সেটি তাদের দেশে নিয়ে যাওয়া যায়। পুঁজিবাজারে বিদেশীদের বিনিয়োগের পরিমাণ খুব বেশি ছিল না। এখন যেহেতু তারা আমাদের বাজার থেকে মুনাফা নিয়ে যেতে পারছে আশা করছি সামনে হয়তো তারা নতুন করে বিনিয়োগে আসবে। হয়তো আমরা বর্তমানে একটি পরীক্ষামূলক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
এরই মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডে রোড শো করেছে বিএসইসি। সামনের মাসে যুক্তরাজ্যে রোড শো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আপনারা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পেয়েছেন?
দেখুন বিনিয়োগকারী বলতে কিন্তু আমরা শুধু পুঁজিবাজারকে বোঝাই না। বিদেশে বিভিন্ন রোড শোতে কিন্তু আমরা পুঁজিবাজার নিয়ে অল্প কথা বলেছি। সেখানে আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের কথা বলেছি। আপনি দেখেন আমাদের রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোতে কোনো প্লট খালি নেই। অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গা কীভাবে বরাদ্দ হয়ে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগের জন্য জাপান, চীন, কোরিয়াসহ বিদেশীদের আগ্রহ বাড়ছে। ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে আমাদের এখানে ব্যবসা স্থানান্তর হচ্ছে। অর্থনীতি যখন উন্নত হবে তখন স্বাভাবিকভাবেই পুঁজিবাজারের প্রতিও বিদেশীদের আগ্রহ বাড়বে। আমাদের কাজ হলো সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভালো রিটার্ন দেয় এমন একটি পুঁজিবাজার গড়ে তোলা। এরই মধ্যে আমরা এমার্জিং মার্কেটের অনেক শর্ত পূরণ করে ফেলেছি। আশা করছি আমাদের মেয়াদের মধ্যেই ফ্রন্টিয়ার থেকে এমার্জিং মার্কেটে উন্নীত হতে পারব।
আপনি বিএসইসিতে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজ যেমন বিভিন্ন ধরনের বন্ডের বাজার প্রসারে কাজ করছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই সিকিউরিটাইজেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো প্রকল্পে সাধারণ জনগণকে সম্পৃক্ত করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশেও এ ধরনের প্রকল্পের ক্ষেত্রে সিকিউরিটাইজেশন করা সম্ভব হবে কি?
নিশ্চয়ই সম্ভব। আমাদের মিউনিসিপ্যাল বন্ড আসছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। তাদের বেশকিছু প্রকল্প পুঁজিবাজারের মাধ্যমে আসবে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষ, মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে আমরা বলেছি যে সরকারের রাজস্বের অর্থ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে সিরিয়াল পাওয়ার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এতে আমরা পিছিয়ে পড়ব। সারা বিশ্বে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কেউ সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকে না। পুঁজিবাজারের মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সেগুলো বাস্তবায়ন করে। আমাদেরও তা-ই করতে হবে। সরকার তার সক্ষমতা অনুযায়ী যতটুকু পারে করবে। বাকিটা পুঁজিবাজার থেকে, জনগণ থেকে নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন আকাশছোঁয়া। কিন্তু উনি একা কতটুকু করবেন? আমাদের সবাইকে তার পেছনে থেকে কাজ করতে হবে।
আপনি সুশাসন নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সুশাসন না থাকার কারণে এরই মধ্যে দুবার পুঁজিবাজারে ধস হয়েছে। সেকেন্ডারি মার্কেটে সুশাসন নিশ্চিতের জন্য আপনি কী উদ্যোগ নিয়েছেন?
আমরা চেষ্টা করছি সুশাসন নিশ্চিত করার। পাশাপাশি আমি বিনিয়োগ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই। বিনিয়োগকারীদের এ বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। কারো প্ররোচনায়, কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের ভিত্তিতে শেয়ার কেনাবেচা থেকে দূরে থাকতে হবে। আরেক শ্রেণীর বিনিয়োগকারী রয়েছেন যারা মানুষের কথায় প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেয়। অথচ দেখেন যারা প্যানিক ছড়িয়েছে তারাই কিন্তু পরে সেই শেয়ার কিনে নিচ্ছে। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সাবধান থাকতে হবে। আরেকটি বিষয় আমি বলতে চাই সেকেন্ডারি মার্কেটে কিন্তু প্রতিদিন লাভ হবে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি দুটোই থাকবে। পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যবসা নেই যেখানে শুধু লাভ হবে। তাহলে সবাই সেই ব্যবসাই করত। আমার অনুরোধ থাকবে বিনিয়োগকারীদের প্রতি তারা যেন নিজেদের জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে বিনিয়োগ করেন। অধৈর্য হয়ে কিংবা প্যানিক হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়াটা বোকামি হবে।
সপ্তাহখানেক ধরেই পুঁজিবাজারে কিছুটা ছন্দপতন দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রেও কি বিনিয়োগকারীরা প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে বলে মনে হয়?
আসলে তা না। পুঁজিবাজার টানা অনেকদিন ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এখন কেউ কেউ স্বাভাবিকভাবেই মুনাফা তুলে নিতে চাইবেন। আমাদের এখানে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যকে অনুকরণ করে শেয়ার কেনাবেচার করার প্রবণতা রয়েছে। তারা যদি দেখেন যে কেউ বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন তখন অন্যরা বিক্রি করতে শুরু করেন। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হয়। তাছাড়া কোনো পুঁজিবাজারে ৩-৪ হাজার পয়েন্ট বাড়লে সেক্ষেত্রে দুই-তিনশ পয়েন্ট সংশোধন হতেই পারে। এটি স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে প্যানিক হওয়ার কিছু নেই।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়