পর্যটকদের অনলাইনভিত্তিক নানা রকম সেবা দিতে ২০১৬ সালে পাকিস্তানের পাঁচ তরুণ মিলে শুরু করেছিলেন ফাইন্ড মাই অ্যাডভেঞ্চার নামের স্টার্টআপ। তার এক বছর পর বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে গোযায়ান শুরু করেছিলেন তরুণ উদ্যোক্তা রিদওয়ান হাফিজ। পাঁচ বছর পর সেই গোযায়ানই কিনে নিল পাকিস্তানের ফাইন্ড মাই অ্যাডভেঞ্চারকে।
চার মাস আলাপ–আলোচনার পর গত মাসের মাঝামাঝি পাকিস্তানি স্টার্টআপ কোম্পানিটি কেনার চূড়ান্ত চুক্তি করে বাংলাদেশি গোযায়ান। ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার বা ৩০ কোটি টাকায় অধিগ্রহণ করা পাকিস্তানি স্টার্টআপটি এখন গোযায়ান নামেই পরিচালিত হবে। শুরু থেকে ফাইন্ড মাই অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান কার্যালয় ছিল করাচি। গোযায়ান কিনে নেওয়ায় এখন সেটির প্রধান কার্যালয় হচ্ছে ঢাকায়। তবে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে করা হয়েছে পরিচালন কার্যালয়।
২০১৭ সালে যাত্রা শুরুর দুই বছর পর সিঙ্গাপুরে নিবন্ধন নেয় গোযায়ান। পাকিস্তানি স্টার্টআপ কিনতে বাংলাদেশ থেকে কোনো অর্থ বিদেশে নেননি রিদওয়ান হাফিজ। এ ক্ষেত্রে গোযায়ানের ব্যবসা সম্প্রসারণে বিনিয়োগ করেছে স্টার্টআপ খাতে বিশ্বের অন্যতম বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডিএসটি গ্লোবাল। সঙ্গে রয়েছে নরডস্টার পার্টনার্স ও পেব্যাকের প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্সান্ডার রিটওয়েগার।
গোযায়ানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিদওয়ান হাফিজ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গোযায়ানকে বৈশ্বিক কোম্পানি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছিলাম। পাকিস্তানের বাজার সম্ভাবনাময় হওয়ায় সেখানেই আমরা প্রথম বিনিয়োগ করলাম। ফাইন্ড মাই অ্যাডভেঞ্চার কেনার পর বিশ্বের ৫ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে সেবা দেওয়ার সুযোগ পাবে গোযায়ান।’ তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রথম স্টার্টআপ হিসেবে বিদেশি কোনো স্টার্টআপকে কিনে নিল গোযায়ান। এটি গোযায়ানের জন্য অনেক বড় গর্বের বিষয়।
পাকিস্তানি স্টার্টআপ কেনার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিচার–বিশ্লেষণ করেছে গোযায়ান। এ বিষয়ে রিদওয়ান হাফিজ বলেন, বাংলাদেশের মতো পাকিস্তানের মানুষের হাতে কেবল ইন্টারনেট পৌঁছাতে শুরু করেছে। তাতে দেশটির মানুষের মধ্যে ভ্রমণের জন্য ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা নেওয়ার আগ্রহ বাড়ছে। আবার পাকিস্তানের স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপক হারে বেড়েছে। ব্যবসা বাড়াতে এ সুযোগই নিয়েছে গোযায়ান।
পাকিস্তানের তরুণ হাবিব মালিক, খাজা রাজা আব্বাস, কমিল নাকভি, শহজাব নাকভি ও সৈয়দ হায়দার রাজা গড়ে তুলেছিলেন ফাইন্ড মাই অ্যাডভেঞ্চার। এখন পর্যন্ত স্টার্টআপটি ৪০ হাজার পর্যটককে সেবা দিয়েছে। গোযায়ানের রিদওয়ান জানালেন, গত বছর ফাইন্ড মাই অ্যাডভেঞ্চার ১৩ লাখ মার্কিন ডলারের ব্যবসা করেছে। বর্তমানে ২৪ জন কর্মী কাজ করলেও জুনে এ সংখ্যাটি বেড়ে ৫০ হবে।
গোযায়ান রিদওয়ান হাফিজের দ্বিতীয় স্টার্টআপ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ার সময় আহসানউল্লাহ হলে থাকতে প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আহসানউল্লাহ হলের ৩৪৭ নম্বর রুম থেকে বন্ধু সুমিত সাহার সঙ্গে ১৩ বছর আগে শুরু করেন ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি ‘অ্যানালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেড’। এটি দেশের অন্যতম বড় ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের ছয়টি দেশে নিজেদের সম্প্রসারিত করেছে।
গোযায়ান গত বছর ২২ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে। বর্তমানে তারা উড়োজাহাজ ও বাসের টিকিট, হোটেল বুকিং, ট্যুর গাইড ও ভ্রমণ ঋণের সেবা দেয়। মাসে সাত লাখ মানুষ গোযায়ানের ওয়েবসাইটে ঢুঁ দেন। তার মধ্যে প্রায় দুই লাখ সেবা নেন। বর্তমানে স্টার্টআপটির কর্মীর সংখ্যা ৮০।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়