বাস-লঞ্চের ভাড়া বাড়াতে তৎপর মালিকরা

নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বৃহস্পতিবার ফের শুরু হচ্ছে বিধিনিষেধ। আগের মতোই বাস, ট্রেন ও লঞ্চের জন্য দেয়া হয়েছে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ। বাংলাদেশ রেলওয়ে এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে ১৫ জানুয়ারি থেকে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের। বাসে কবে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন শুরু হবে, তা ঠিক হবে আজ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে। অন্যদিকে বাসের সঙ্গে সমন্বয় করে লঞ্চেও অর্ধেক যাত্রী পরিবহন শুরুর কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে ট্রেনের ভাড়া না বাড়লেও বাস ও লঞ্চের ভাড়া বাড়াতে তৎপর হয়ে উঠেছেন মালিকরা।

বাস ও লঞ্চের অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখতে হবে, বিপরীতে যাত্রীদের গুনতে হবে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া—করোনার কারণে এমন নিয়ম প্রথম চালু হয়েছিল ২০২০ সালের জুনে। দ্বিতীয় দফায় একই নিয়ম করা হয়েছিল গত বছরের এপ্রিলে। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যখন তৃতীয়বারের মতো গণপরিবহনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তখন আবারো আগের মতো বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করেছেন পরিবহন মালিকরা। অন্যদিকে সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, আগের দুই দফায় বাড়তি ভাড়া নিলেও বাসে ও লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। আর যেহেতু জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে মাস দেড়েক আগেই বাস ও লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, তাই আরেক দফা ভাড়া বাড়ানো কোনোভাবেই যুক্তিসংগত হবে না। একই ধরনের কথা বলছে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও।

দেশে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সড়ক পরিবহন খাত। করোনার কারণে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এবারো ভাড়া বাড়াতে তৎপর হয়ে উঠেছেন সড়ক পরিবহন মালিকরা। বাসে কবে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন শুরু করা হবে এবং অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের বিপরীতে ভাড়া বাড়ানো হবে কিনা, তা ঠিক করতে আজ দুপুরে বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তবে ৫০-৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো না হলে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে বাস চালানো কোনোভাবেই সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ। তিনি বলেন, কালকের (আজ বুধবার) সভায় বিষয়গুলো আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাব।

অন্যদিকে সভার আলোচ্যসূচিতে ভাড়া বৃদ্ধির ইস্যুটি থাকবে কিনা, তা নিশ্চিত না করলেও বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার জানিয়েছেন, সামগ্রিক বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তারা পরিবহন মালিকদের ডেকেছেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, করোনার বিস্তার রোধের লক্ষ্যে জনসমাগম সীমিত করতে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশনা এসেছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

এদিকে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর দাবি করা হবে কিনা, বিআরটিএর সঙ্গে বাস মালিকদের বৈঠক পর্যবেক্ষণ করে তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমদ বণিক বার্তাকে বলেন, করোনা মহামারীর কারণে দুই বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের ব্যবসায় মন্দা চলছে। আমরা এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছি না। এমন অবস্থায় লঞ্চের ভাড়া না বাড়িয়ে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন আমাদের জন্য পরিস্থিতিকে আরো কঠিন করে তুলবে। তবে আমরা এখনই ভাড়া বাড়ানোর দাবি করছি না। বাস ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হলে আমরাও লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর দাবি করব।

অন্যান্য গণপরিবহনের মতো লঞ্চেও অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এজন্য আজ লঞ্চ মালিকদের নিয়ে একটি সভা ডেকেছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক বণিক বার্তাকে বলেন, গণপরিবহনে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা নৌযান মালিকদের ডেকেছি। তাদের সঙ্গে সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে ভাড়া বাড়ানোর বিষয় নিয়ে নৌযান মালিকদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করা হবে না বলে এ সময় জানান তিনি।

করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেও জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছু খোলা রেখে কেবল গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্তটি কাগুজে সিদ্ধান্তে পরিণত হবে এবং এ অজুহাতে আবারো ভাড়া বাড়ানো হলে তা সাধারণ মানুষের জীবন বিষিয়ে তুলবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ২০২১ সালে দেশের গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশনায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলেও রাজধানীর বাসে কোথাও কোথাও ১০০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া আদায়ের নজির আমাদের সামনে আছে। তাছাড়া রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহনের সংকট রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে যাত্রীদের বাদুড়ঝোলা হয়ে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হয়। জীবন-জীবিকা সবকিছু স্বাভাবিক রাখার এমন চিত্র সামনে রেখে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত কখনো বাস্তবায়ন করা যাবে না।
এই বিভাগের আরও খবর
কাতারের আমিরের নামে ঢাকায় পার্ক ও সড়কের নামকরণ

কাতারের আমিরের নামে ঢাকায় পার্ক ও সড়কের নামকরণ

দৈনিক ইত্তেফাক
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন : দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটি

ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন : দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটি

নয়া দিগন্ত
১৯৬০ সালের সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহে কেমন ছিল ঢাকার জীবনযাত্রা

১৯৬০ সালের সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহে কেমন ছিল ঢাকার জীবনযাত্রা

প্রথমআলো
থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, স্বাক্ষরিত হবে যেসব চুক্তি

থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, স্বাক্ষরিত হবে যেসব চুক্তি

কালের কণ্ঠ
তীব্র গরমে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট গ্রামাঞ্চলের মানুষ

তীব্র গরমে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট গ্রামাঞ্চলের মানুষ

জনকণ্ঠ
আরো ৭২ ঘণ্টার তাপদাহের সতর্কতা জারি

আরো ৭২ ঘণ্টার তাপদাহের সতর্কতা জারি

নয়া দিগন্ত
ট্রেন্ডিং
  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া

  • অবিশ্বাস্য কীর্তিতে হাজার রানের ক্লাবে এনামুল বিজয়