দেশে জ্বালানি আমদানি ও বিপণন করার একমাত্র ক্ষমতা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি)। বিপিসি তাদের নিজস্ব পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমদানি করা বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি বিক্রি করে দেশের বিভিন্ন খাতে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এসএওসিএল) ও এলপিজি। এর মধ্যে পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও যমুনা অয়েল দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এ পাঁচ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি বিক্রি করেছে পদ্মা অয়েল। পরে ধারাবাহিকভাবে মেঘনা, যমুনা, এসএওসিএল ও এলপিজি জ্বালানি বিক্রিতে অবদান রেখেছে।
বিপিসির তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, এসএওসিএল ও এলপিজির মাধ্যমে রেকর্ড ৭৩ লাখ ৪১ হাজার ৫২০ টন জ্বালানি বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ডিজেল ৪৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮৩ টন, ফার্নেস অয়েল ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭০২, পেট্রল ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫৫৬, অকটেন ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫৭, জেট ফুয়েল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৫, কেরোসিন ৭৭ হাজার ৪৮৭, বিটুমিন ৫৭ হাজার ৭২৯, লুব অয়েল ১৬ হাজার ১৭৩, এলপিজি ১৫ হাজার ২১৫, জেবিও ৯ হাজার ৭৬৩ টন বিক্রি হয়েছে।
আলোচ্য হিসাব বছরে বিপিসির জ্বালানি বিক্রির মধ্যে পদ্মা অয়েল বিক্রি করেছে ২৬ লাখ ৯০ হাজার ১২২ টন বা ৩৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মেঘনা অয়েল, ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৪২১ টন বা ৩৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা যমুনা অয়েল বিক্রি করেছে ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৬০৯ টন বা ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এছাড়া এসএওসিএল ৮৫ হাজার ৭৬৫ টন বা ১ দশমিত ১৭ শতাংশ ও এলপিজি বিক্রি করেছে ৩ হাজার ৬০৩ টন বা দশমিক শূন্য ৪৯ শতাংশ।
কোম্পনিভিত্তিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অকটেন, পেট্রল, কেরোসিন, ডিজেল, এলওডি, ফার্নেস অয়েল, জেবিও, লুব অয়েল, এলপিজি ও বিটুমিনসহ নয়টি জ্বালানি কমবেশি বিক্রি করে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও এসএওসিএল। অন্যদিকে এলডিও, জেট এ-১, এসবিপি, এমটিটি, মেরিন ফুয়েল ও গ্রিজের বেশির ভাগই বিক্রি করে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটিড।
পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিপিসি থেকে আমাদের যে চাহিদাপত্র থাকে সে হিসেবে আমরা জ্বালানি সংগ্রহ করে বিক্রি করি। আমাদের কোম্পানি বিপিসির বিপণন বা মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান। সমাপ্ত অর্থবছরে আমরা বিপিসির ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ জ্বালানি বিক্রি করেছি। ২০২১-২২ অর্থবছরেও পদ্মা অয়েল ভালো অবস্থানে ছিল। আমাদের বিক্রি বাড়ার কারণ আমাদের মার্কেটিং পরিকল্পনা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা। সামনে কীভাবে বিপিসির জ্বালানি বিক্রি আরো বাড়ানো যায় সে বিষয়ে পদ্মা অয়েল সবসময় কাজ করছে।’
সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে পদ্মা অয়েল জ্বালানি বিক্রি করেছে ২৬ লাখ ৯০ হাজার ১২২ টন বা ৩৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করেছিল ২৫ লাখ ৪ হাজার ১০৪ টন বা ৩৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিক্রির হার ছিল ৩৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। মূলত জেট ফুয়েল বিক্রিতে একক আধিপত্য থাকায় পদ্মা অয়েল জ্বালানি বিক্রিতে শীর্ষস্থানে আছে বলে মনে করছেন বিপিসির কর্মকর্তারা। এদিকে দুই বছর আগেও জ্বালানি বিক্রিতে শীর্ষে ছিল মেঘনা পেট্রোলিয়াম। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটি জ্বালানি বিক্রি করে ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৪২১ টন বা ৩৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ২০২১-২২ হিসাব বছরে বিক্রি করেছিল ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৩ টন বা ৩৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০২০-২১ হিসাব বছরে বিক্রির হার ছিল রেকর্ড ৩৭ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এছাড়া যমুনা অয়েল সর্বশেষ হিসাব বছরে জ্বালানি বিক্রি করেছে ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৬০৯ টন বা ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ২০২১-২২ ও ২০২০-২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটির জ্বালানি বিক্রির হার ছিল যথাক্রমে ২৬ দশমিক ৯৭ ও ২৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
সমাপ্ত হিসাব বছরে চারটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিপিসি ডিজেল বিক্রি করে ৪৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮৩ টন। বছরের ব্যবধানে ডিজিল বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৭৮৩ টন। এর মধ্যে পদ্মা অয়েল ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৮ টন, মেঘনা ১৯ লাখ ১৮ হাজার ১২৭ বা ৩৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যমুনা ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৯ ও এসএওসিএল বিক্রি করেছে ২২ হাজার ৪০৯ টন। অকটেন বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫৭ টন। এর মধ্যে পদ্মা ১ লাখ ৪০ হাজার ৯২৮, মেঘনা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫২ ও যমুনা ১ লাখ ৫ হাজার ১৭৭ টন বিক্রি করেছে। পেট্রল বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫৫৬ টন। এর মধ্যে পদ্মা ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭০২, মেঘনা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫৭৮ ও যমুনা অয়েল বিক্রি করেছে ১ লাখ ৪০ হাজার ২৭৬ টন। ফার্নেস অয়েল বিক্রি হয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭০২ টন। এর মধ্যে পদ্মা ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৬৬, মেঘনা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ২১৮, যমুনা ২ লাখ ১৩ হাজার ৭০৯ ও এসএওসিএল বিক্রি করেছে ৪৫ হাজার ৮০৯ টন। কেরোসিন বিক্রি হয়েছে ৭৭ হাজার ৪৮৭ টন। এর মধ্যে পদ্মা অয়েল ৩০ হাজার ১২৯, মেঘনা ২৫ হাজার ২৬ ও যমুনা অয়েল বিক্রি করে ২২ হাজার ৩৩২ টন। বিটুমিন বিক্রি হয়েছে ৫৭ হাজার ৭২৯ টন। এর মধ্যে পদ্মা ১৩ হাজার ১৬৯, মেঘনা ১৭ হাজার ৮৩০, যমুনা ১৩ হাজার ৭০ ও এসএওসিএল ১৩ হাজার ৬৬০ টন। এছাড়া এলপিজি ১৫ হাজার ২১৫ টন, লুব অয়েল ১৬ হাজার ১৭৩, জেবিও ৯ হাজার ৭৬৩ ও এলওডি বিক্রি হয়েছে ৩১০ টন।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়