সরবরাহ কম থাকায় বাজারে রেকর্ড দামে চাল কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমদানি বাড়ানো হয়েছে কয়েক দফা। এ সময় সরকারের অভ্যন্তরীণ ধান ও চাল সংগ্রহে নেতিবাচক সংবাদ এসেছে। সদ্যসমাপ্ত বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।
মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গত ৩১ আগস্ট বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। এ মৌসুমে মোট ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ টন ধান ও চাল সংগ্রহ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ লাখ ৮৫ হাজার টন।
গত বছরও বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি খাদ্য অধিদপ্তর। যদিও এ বছর সে তুলনায় সংগ্রহ বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চালের এ ঊর্ধ্বমুখী দামের বাজারে সরকারের সংগ্রহ কর্মসূচির ব্যর্থতা কিছুটা চিন্তার বিষয়। কারণ সরকারি গুদামে চালের মজুত কমে গেলে বাজারে তার প্রভাব পড়ে, চালের দাম বেড়ে যায়। সেই পরিস্থিতি এড়াতে বেশি বেশি সরকারের চাল সংগ্রহ করা প্রয়োজন। আমদানির মাধ্যমে সেটা সাময়িক পূরণ হলেও তা স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান নয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন বলছে, সমাপ্ত বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ছয় লাখ টন। যেখানে সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ টন। এছাড়া ১২ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এসেছে ১০ লাখ ৬০ হাজার ৪১২ টন। অন্যদিকে দেড় লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় মিলেছে ৮৫ হাজার ৫১৬ টন।
এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ধানের ক্ষেত্রে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেক পূরণ করতে পারিনি। তবে চালের সংগ্রহ ভালো হয়েছে। আমরা বেশি কেনার জন্য এ বছর দাম বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু তারপরও বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় সংগ্রহ পুরোটা হয়নি।
ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা বলেন, চালের ক্ষেত্রে কিন্তু অবস্থাটা ভালো। খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি আমাদের ১০ লাখ টন চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করেছিল। কিন্তু পরে আমরা আরও এক লাখ ৩৫ হাজার টন কেনার আলাদা লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলাম। ওই ১০ লাখ টন আমরা অতিক্রম করেছি। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হয়নি।
এদিকে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তর থেকে আরও সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছিল মন্ত্রণালয়ের কাছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাতে সাড়া দেয়নি। কারণ এক দফা সময় বাড়িয়ে দিয়েই সংগ্রহ কার্যক্রমের শেষ সময় ছিল ৩১ আগস্ট।
এ বিষয়ে সচিব বলেন, যে মিলাররা মে থেকে চার মাসে চাল দেয়নি, তারা আগামী সাতদিনে কতো চাল দেবে? এ জন্য সময় বাড়ানো হয়নি। সরকারের চাল কেনা শেষ হলে বাজারে চালের সরবরাহ বাড়বে।
যদিও বেশি বেশি চাল সংগ্রহের জন্য এ বছর বোরোতে ধান-চালের দাম বেশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছিল সরকার। যেখানে গত বছর (২০২০) বোরো মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা কেজি দরে আতপ চাল কেনা হয়েছে, সেখানে এবার ২৭ টাকায় ধান, ৪০ টাকায় সিদ্ধ চাল ও ৩৯ টাকা কেজি দরে আতপ চাল কেনা হয়েছে। তারপরও সংগ্রহ হয়নি পুরোটা।
এদিকে ধান ও চাল সংগ্রহ ব্যর্থতার কারণ হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ধানের দাম সরকার বাড়িয়ে নির্ধারণ করলেও সংগ্রহের সময় বাজারে দাম আরও বেশি ছিল। পাশাপাশি নানা ধরনের জটিলতায় সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে কৃষকের আগ্রহ কম।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়