কাতার বিশ্বকাপের স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মরক্কোকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। এ জয়ে তৃতীয় হয়ে আসর শেষ করল লুকা মদ্রিচের দল। শনিবার আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে মর্যাদার লড়াইয়ে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ম্যাচটা অবশ্য বেশ জমে উঠেছিল। সপ্তম মিনিটেই ক্রোয়াটদের ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন ইয়োস্কো গাভারদিওল। দুই মিনিটের মধ্যে মরক্কোকে ১-১ এ সমতায় ফেরান আশরাফ দারি।
এরপর ভালই আধিপত্য দেখাচ্ছিল ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের দল। কিন্তু ৪২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে দারুণ এক গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে ২-১ এ এগিয়ে দেন উইঙ্গার মিসলাভ অরসিচ। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে একাধিকবার জোরালো আক্রমণে উঠলেও আর গোলের দেখা পায়নি মরক্কো। ১৯৯৮ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়ার ২৪ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে তৃতীয় হলো ক্রোয়েশিয়া।
শেষ হলো দেশটির অন্যতম বড় তারকা মদ্রিচের বিশ্বকাপ-ক্যারিয়ার। অন্যদিকে মর্যাদার এই লড়াইয়ে হেরে গেলেও কাতার বিশ্বকাপে চমকের পর চমক উপহার দিয়ে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে সেমিফাইনাল খেলা মরক্কো বিশ্বজুড়ে অগণিত ফুটবলপ্রেমীর মন জিতে আসর শেষ করল ।
সেমি-ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কোনোরকম প্রতিরোধ গড়তে না পারা ক্রোয়েশিয়া এদিন ম্যাচ শুরু হতেই এগিয়ে যায়। সপ্তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের ফ্রি কিকে ফাঁকায় বল পেয়ে ইভান পেরিসিচ হেডে সেটি বাড়ান ছয় গজ বক্সের সামনে, আর ডাইভিং হেডে পোস্ট ঘেঁষা গোলে ক্রোয়াটদের ১-০ তে এগিয়ে দেন ডিফেন্ডার ইয়োস্কো গাভারদিওল।
আসর জুড়ে অবিশ্বাস্য সব পারফরমেন্স উপহার দেওয়া মরক্কো পাল্টা জবাব দিতে দুই মিনিটও দেরি করেনি। নবম মিনিটে ডান দিকের সাইডলাইন থেকে হাকিম জিয়াশের ফ্রি কিক তেমন ভালো ছিল না, তবে বক্সের মুখে ডিফেন্ডার লভরো মাইয়ে সেটি হেড করে ফেরাতে গিয়ে উল্টো বল পাঠিয়ে দেন গোল মুখে। সেখানেই দারুণ এক হেডে ১-১ এ সমতা আনেন আশরাফ দারি। জাতীয় দলের হয়ে এই ডিফেন্ডারের এটাই প্রথম গোল।
প্রতিপক্ষের চাপের মুখে ২৮তম মিনিটে জিয়াশের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় ভালো একটি আক্রমণ করেন আশরাফ হাকিমি। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ছয় গজ বক্সে বল বাড়ান পিএসজি ডিফেন্ডার; কিন্তু একটু বেশি এগিয়ে ছিলেন ইউসেফ এন-নাসরি। প্রায় টানা ১৫ মিনিট আক্রমণে আধিপত্য করে মরক্কো। এই সময়ে আরও কয়েকটি সুযোগও তৈরি করে তারা; কিন্তু মেলেনি গোল। এরপরই ৪২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে মিসলাভ অরসিচের দারুণ নৈপুণ্যে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়াটরা।
ডি-বক্সের মুখে মরক্কো বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে সতীর্থের পা ঘুরে বক্সের ডান দিকে পেয়ে যান অরসিচ। প্রথম ছোঁয়ায় নেন কোনাকুনি শট, বল দূরের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লেখানো মরক্কো পরে ছাড়িয়ে যায় তাদের অঞ্চলের ইতিহাস। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে উঠে আসে সেমিফাইনালে। সেখানে ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যামম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে ২-০’ গোলের হারে স্বপ্নভঙ্গ হয় দ্য এ্যাটলাসদের। মরক্কো প্রথম বিশ্বকাপ খেলে সেই ১৯৭০ সালে।
শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে এটি ছিল তাদের ষষ্ঠবারের অংশগ্রহণ। গতবার (২০১৮) গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়া মরক্কো এবার একের পর এক জায়ান্টদের বিদায় করে সেরা চারে উঠে আসে। ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ে মিশন শুরুর পরের ম্যাচেই তারা ২-০’ গোলে হারিয়েছে র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয়সেরা দল সোনালি প্রজন্মের বেলজিয়ামকে। এরপর ২-১ এ কানাডা বধ। দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে এফ-গ্রুপে টেবিলের শীর্ষে থেকে উঠে আসে শেষ ষোলোতে।
সেখানে ১২০ মিনিট গোলশূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে বিদায় করে রেগ্রাগুইয়ের দল। ৩-০’র জয়ে দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে নায়ক বনে যান গোলক্ষক ইয়াসিন বুনু। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালকে তারা হারায় ১-০ ব্যবধানে। ৪২ মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন ইউসেফ এন-নাসরি। ২-০ ব্যবধানে হেরে যাওয়া সেমিফাইনালেও পরাশক্তি ফ্রান্সের সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিয়েছে মরক্কো। আসরজুড়ে দারুণ নৈপুণ্যে বিশ্ববাসীর নজর কাড়েন আশরাফ হাকিমি, ইয়াসিন বুনু, ইউসেফ নাসরিরা।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়