দেশে চলমান লোড শেডিং, পোলট্রি খাদ্যের উচ্চমূল্য এবং জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে মহাবিপর্যয় নেমেছে দেশের পোলট্রি খাতে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় টিকতে না পেরে এরই মধ্যে খামার গুটিয়েছেন বহু উদ্যোক্তা। গত ছয় মাসে পোলট্রি খামার কমে গেছে ১০ হাজারের বেশি। ফলে উৎপাদন কমে তৈরি হচ্ছে সরবরাহ ঘাটতি, যার প্রভাবে এরই মধ্যে বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম।
দাম বেড়ে বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা এবং সোনালি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। মুরগি ও ডিমের দাম লাগামহীন হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় বড় বিপদ ধেয়ে আসছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পোলট্রি উদ্যোক্তারা বলছেন, পোলট্রি খাদ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিতে এমনিতেই খামারিরা দিশাহারা। এরই মধ্যে দৈনিক আট থেকে ১০ ঘণ্টার লোড শেডিংয়ের কারণে পোলট্রি বাচ্চা, মাংস ও ডিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ডিম থেকে বাচ্চা তৈরিতে ইনকিউবেটরসহ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত কক্ষে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। চলমান লোড শেডিংয়ের কারণে ব্রয়লারের বাচ্চা উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখলেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে খামারিরা মুরগির বাচ্চা কিনতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ খামারে বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ দরকার। আট থেকে ১০ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের প্রভাব মোকাবেলায় ছোট খামারিরা জেনারেটর ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেকের মুরগি মারা যাচ্ছে। খরচ বহন করতে না পেরে অনেক খামারিই উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছেন, যে কারণে সরবরাহে সংকট তৈরি হয়েছে।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পোলট্রি খামার মালিক সমিতির সভাপতি এম এ মতিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যাওয়ায় এমনিতেই খামারিরা ক্ষতির মুখে ছিলেন, এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে লোড শেডিং। ব্যয় সামাল দিতে না পারায় উল্লেখযোগ্য হারে কমছে খামারের সংখ্যা। গত চার বছরে শুধু আমাদের উপজেলায়ই প্রায় এক হাজার ৯০০ খামার কমে গেছে। ’
তিনি বলেন, অতিরিক্ত লোড শেডিংয়ের কারণে ছোট খামারিরা বাচ্চা তুলে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। কারণ বাচ্চাদের ২৪ ঘণ্টাই বৈদ্যুতিক তাপের মধ্যে রাখতে হয়।
পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মহসিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘লোড শেডিংয়ের প্রভাব ও খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে গত ছয় মাসে ১০ হাজারের বেশি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে দেশে খামারের সংখ্যা কমে এখন ৭৮ থেকে ৭৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতির মুখে পড়ে আরো বেশ কিছু খামার বন্ধের পথে আছে। ’
খন্দকার মহসিন বলেন, এখন মূলত পোলট্রি খাদ্যের উচ্চমূল্য ও অতিরিক্ত লোড শেডিং সমস্যার কারণেই উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছেন খামারিরা। কারণ উচ্চমূল্যে ডিজেল কিনে জেনারেটর চালিয়ে ব্যয় সামাল দেওয়া ছোট-মাঝারি খামারিদের পক্ষে সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে পোলট্রি খাতের সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন বড় পরিসরের খামারিরা। তাঁরা যেসব সুবিধা পাচ্ছেন, সেগুলো ছোট খামারিদেরও দিতে হবে। ছোট খামারগুলোতে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি স্থাপনের ক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়