চলতি বছরের জুনে ১ লাখ কোটি টাকা আমানতের মাইলফলক অর্জন করে অগ্রণী ব্যাংক। দেশের তৃতীয় ব্যাংক হিসেবে অভিজাত এ ক্লাবে প্রবেশ করে ব্যাংকটি। যদিও পাহাড়সম এ আমানত অগ্রণী ব্যাংকের জন্য কল্যাণ বয়ে আনেনি। উল্টো আমানতের সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে বিপদ বেড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির।
যেকোনো ব্যাংকের আয়ের প্রধান খাত বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে পাওয়া সুদ। যদিও আমানতের চাপে অগ্রণী ব্যাংকের সুদ খাত এখন লোকসানে। ২০১৯ সালেও সুদ বাবদ ৬৩৫ কোটি টাকা আয় করেছিল ব্যাংকটি। কিন্তু আমানতের উচ্চসুদের বোঝা টানতে গিয়ে গত বছর এ বাবদ ১৯ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) সুদ খাতে ব্যাংকটির লোকসানের পরিমাণ ৫০৩ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। লাখ কোটি টাকার আমানত ধরে রাখতে গিয়ে বছর শেষে ব্যাংকটির সুদ খাতের লোকসান হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অগ্রণী ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে অগ্রণী ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৪ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। আমানতের উচ্চপ্রবৃদ্ধির কারণে ব্যাংকটির ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) এখন ৫২ শতাংশে নেমেছে। সুদ খাতে বড় লোকসান দেয়ায় জুন পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফাও কমেছে ৪০ শতাংশ। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক বছরে অগ্রণী ব্যাংকের আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪১ দশমিক ৯১ শতাংশ। এর বিপরীতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরেও এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৬১ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল। এ হিসেবে গত দুই বছরে বেসরকারি খাতের গড় ঋণ প্রবৃদ্ধির চেয়ে অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল অনেক বেশি। ঋণ ও আমানতের প্রবৃদ্ধির মধ্যকার এ বড় অসামঞ্জস্যের কারণেই বিপাকে পড়েছে অগ্রণী ব্যাংক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অগ্রণী ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। এজন্য গত দুই বছরে উচ্চসুদ দিয়ে হলেও আমানত সংগ্রহ করেছে। রেমিট্যান্সে নির্ধারিতের অতিরিক্ত ১ শতাংশ প্রণোদনা দিয়েও আমানত টানার চেষ্টা করা হয়েছে। ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য দেশের বড় করপোরেটগুলোকে ডেকে আনা হয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলোয় গিয়ে ঋণ পায়নি এমন অনেক বড় গ্রাহককেও হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। বড় অংকের খেলাপি ও পুনঃতফসিলকৃত ঋণও অধিগ্রহণ করা হয়েছে এ সময়ে। সব মিলিয়ে অগ্রণী ব্যাংকে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার খেসারত বহুদিন ধরে দিতে হবে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়