আফগানিস্তানের বিপক্ষে লক্ষ্য ২৯২ রানের, তাড়া করতে গিয়ে একশ রানের আগেই অস্ট্রেলিয়ার উইকেট পড়ে গেলো সাতটি! এই স্কোরের পর কয়জনে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বাজি ধরবে? যারা অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে থাকবে, তাদের হয়তো বলেও ফেলতে পারেন, পাগল নাকি! এমন মন্তব্য করাই তো স্বাভাবিক। ঘুণাক্ষরেও কেউ ভাববে না অস্ট্রেলিয়ার জয়ের কথা। যখন আফগানিস্তানের আরেকটি রূপকথার গল্প পড়ার অপেক্ষায় ক্রিকেট ভক্তরা, তখন থেকে লেখা শুরু হলো অবিশ্বাস্য এক প্রত্যাবর্তনের কাহিনী। শেষটা হলো গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের জাদুকরী ছোঁয়ায়।
অথচ সপ্তাহখানেক আগে গলফ কার্ট থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলা হয়নি। ফিরলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। কনকাশন প্রটোকলে থাকা এই ডানহাতি ব্যাটার মাঠে ফেরার দিনে লিখলেন অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। খাদের কিনারায় কোনোভাবে দাঁড়িয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে জেতালেন অনন্যসাধারণ এক ইনিংস খেলে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান এবার টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বল খেলে করলেন ডাবল সেঞ্চুরি। তাতে ৩ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেলো পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
মুম্বাইয়ে আফগানিস্তান করেছিল ২৯১ রান। জিততে হলে এই মাঠে রানা তাড়া করার রেকর্ড গড়তে হতো অস্ট্রেলিয়াকে। নাভিন উল হক ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের গতির সঙ্গে রশিদ খানের স্পিনে চোখে সর্ষে ফুল দেখছিল অজিরা। ২০ ওভারের মধ্যে সব স্বীকৃত সব ব্যাটারদের বিদায়, কেবল টিকে আছেন ম্যাক্সওয়েল।
নবম ওভারে পরপর ডেভিড ওয়ার্নার ও জশ ইংলিসের বিদায়ে ক্রিজে নামেন ম্যাক্সওয়েল। আজমতের হ্যাটট্রিক বলে কোনোভাবে বেঁচে যান তিনি। আফগানরা এলবিডব্লিউর রিভিউয়ের আবেদন করেছিল। তবে রিপ্লেতে দেখা যায় বল আউটসাইড এজ হয়ে আফগান কিপারের বেশ সামনে পড়ে। বল তার গ্লাভসে ধরা পড়লে আজমতের হ্যাটট্রিক হয়ে যেতো।
পাওয়ার প্লেতে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৪ উইকেটে ৫২ রান। ম্যাক্সওয়েল ১৯তম ওভারের মধ্যে আরও তিন ব্যাটারকে ফিরে যেতে দেখলেন। ৯১ রানের মধ্যে নেই সাত উইকেট!
ক্রিজে নামলেন প্যাট কামিন্স। একপ্রান্ত আগলে রেখে উইকেট ধরে রাখলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। আর অন্য দিক থেকে মুজিব উর রহমান, নুর আহমেদ ও মোহাম্মদ নবীর ওপর চড়াও হন ম্যাক্সওয়েল। যদিও ২২তম ওভারে নুর আহমেদের বলে শর্ট ফাইন লেগে কোনোরকমে মুজিবের হাত ফসকে তিনি জীবন পান ৩৩ রানে। তারপর থেকে অতিমানব ম্যাক্সওয়েল। ৩৩তম ওভারে ৭৬ বলে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন তিনি। ক্র্যাম্পের কারণে একটা সময় ফুটওয়ার্কেও সমস্যা হচ্ছিল তার। ওভাবেই ব্যাট করে গেলেন, ঠাঁই দাঁড়িয়ে। সপাটে বল উড়ালেন, কখনও গড়িয়ে পাঠালেন বাউন্ডারির বাইরে। আফগান বোলাররা যেন উত্তর খুঁজে পায়নি।
অষ্টম উইকেটে দুজনের জুটি একশতে পৌঁছায় ৮৯ বলে। ৩৫তম ওভারেই স্কোর দুইশ। ম্যাক্সওয়েল আরও খ্যাপাটে ডেথ ওভারে। ১০৪ বলে ১৭ চার ও ৫ ছয়ে ১৫০ করেন তিনি। তাদের জুটি ১৫০ এ পৌঁছায় ১৩৮ বলে।
শেষ দিকে তো অস্ট্রেলিয়ার জয় আর ম্যাক্সওয়েলের ডাবল সেঞ্চুরির লক্ষ্য সমানতালে চলছিল। ঠিক তখনই আরেকবার আগুন ঝরালেন ব্যাট হাতে। ৪৭তম ওভারে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে মুজিবকে ছক্কা মারলেন, পরের বলে চার। পঞ্চম বলে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে আরেকটি ছয় মেরে দলকেও জেতালেন, হয়ে গেলো ডাবল সেঞ্চুরিও। মাত্র ১২৮ বলে ২১ চার ও ১০ ছয়ে দুইশ করে ছাড়িয়ে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে করা শেন ওয়াটসনের ১৮৫ রানকে। কামিন্সের সঙ্গে তার ২০২ রানের জুটিও ভেঙেছে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। কামিন্স অপরাজিত ছিলেন ১২ রানে, খেলেছিলেন ৬৮ বল! তার অভাবনীয় সমর্থনেই ম্যাক্সওয়েল কঠিন পথ পাড়ি দিলো সহজেই। ওয়াংখেড়ে রেকর্ড রান তাড়া করলো তারা ১৯ বল হাতে রেখে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়