বছর ঘুরে চলে এসেছে আয়কর রিটার্ন দেওয়ার সময়। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দিতে হবে, যদি এর মধ্যে সময়সীমা না বাড়ানো হয়। কথা হচ্ছে, সব আয়ের ওপর কি কর দিতে হয়? কিছু কিছু আয় আছে, যা করমুক্ত, অর্থাৎ তার ওপর কর দিতে হয় না। চলুন, জেনে নেওয়া যাক সেসব আয় সম্পর্কে।
করদাতার করমুক্ত ও কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয় থাকলে তা রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে। ব্যক্তিকরদাতার করমুক্ত আয়ের কয়েকটি খাত নিচে উল্লেখ করা হলো:
(১) সরকারি পেনশন তহবিল থেকে করদাতা কর্তৃক গৃহীত বা করদাতার বকেয়া পেনশন;
(২) সরকারি আনুতোষিক তহবিল থেকে করদাতা কর্তৃক আনুতোষিক হিসেবে গৃহীত অনধিক ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয়;
(৩) কোনো স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল, অনুমোদিত বার্ধক্য তহবিল, পেনশন তহবিল ও অনুমোদিত আনুতোষিক তহবিল হতে সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণকৃত আয়, যা ওই তহবিল থেকে করারোপিত হয়েছে;
(৪) ভবিষ্য তহবিল থেকে আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ সনের ১৯ নং আইন) প্রযোজ্য এরূপ কোনো ভবিষ্য তহবিলের উদ্ভূত বা উপচিত অথবা ভবিষ্য তহবিল থেকে কোনো আয়;
(৫) সরকারি সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও তাদের নিয়ন্ত্রিত ইউনিট বা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কর্মচারী স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের সময় এ উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো পরিকল্প অনুসারে গৃহীত যেকোনো পরিমাণ অর্থ;
(৬) পেনশনারস সেভিংস সার্টিফিকেট থেকে সুদ হিসেবে গৃহীত কোনো অর্থ বা গৃহীত অর্থের সমষ্টি, যে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষ শেষে ওই সার্টিফিকেটের বিনিয়োগকৃত অর্থের মোট পুঞ্জীভূত অর্জিত মূল্য, প্রকৃত মূল্য, আক্ষরিক মূল্য, ক্রয়মূল্য অনধিক ৫ লাখ টাকা হয়;
(৭) কোনো নিয়োগকারী কর্তৃক কোনো কর্মচারীর ব্যয় পুনর্ভরণ যদি—(ক) ওই ব্যয় সম্পূর্ণভাবে ও আবশ্যকতা অনুসারে কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সূত্রে ব্যয়িত করা হয়; এবং(খ) নিয়োগকারীর জন্য ওই কর্মচারীর মাধ্যমে এরূপ ব্যয় নির্বাহ সর্বাধিক সুবিধাজনক ছিল;
(৮) কোনো অংশীদারি ফার্মের অংশীদার হিসেবে কোনো করদাতা কর্তৃক মূলধনি আয়ের অংশ হিসেবে প্রাপ্ত আয়ের অংশ, যার ওপর ওই ফার্ম কর পরিশোধ করেছে;
(৯) হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের সদস্য হিসেবে একজন করদাতা যে পরিমাণ অর্থ প্রাপ্ত হন, যার ওপর ওই পরিবার কর পরিশোধ করেছে;
(১০) বাংলাদেশি কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তিকরদাতা কর্তৃক বিদেশে উপার্জিত কোনো আয়, যা তিনি বৈদেশিক রেমিট্যান্স-সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন অনুসারে বাংলাদেশে এনেছেন;
(১১) কোনো করদাতা কর্তৃক ওয়েজ আর্নারস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড, ইউরো প্রিমিয়াম বন্ড, ইউরো ইনভেস্টমেন্ট বন্ড, পাউন্ড স্টারলিং ইনভেস্টমেন্ট বন্ড বা পাউন্ড স্টারলিং প্রিমিয়াম বন্ড থেকে গৃহীত আয়;
(১২) রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তির আয় যা কেবল ওই পার্বত্য জেলায় পরিচালিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত;
(১৩) কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তির ‘কৃষি হতে আয়’ খাতের অন্তর্ভুক্ত অনধিক ২ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো আয়, যদি ওই ব্যক্তি—(ক) পেশায় একজন কৃষক হন;(খ) এর সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে নিম্ন বর্ণিত আয় ব্যতীত কোনো আয় না থাকে, যথা—(অ) জমি চাষাবাদ থেকে উদ্ভূত আয়;(আ) সুদ বা মুনাফা বাবদ অনধিক ২০ হাজার টাকা আয়;
(১৪) সফটওয়্যার তৈরিসহ তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট কয়েকটি খাতের ব্যবসায় আয়। খাতগুলো হচ্ছে—(ক) সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, (খ) সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন কাস্টমাইজেশন, (গ) নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এটিটিএ), (ঘ) ডিজিটাল অ্যানিমেশন ডেভেলপমেন্ট, (ঙ) ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, (চ) ওয়েবসাইট সার্ভিস, (ছ) ওয়েব লিস্টিং, (জ) আইটি প্রসেস আউটসোর্সিং; (ঝ) ওয়েবসাইট হোস্টিং, (ঞ) ডিজিটাল গ্রাফিকস ডিজাইন, (ট) ডিজিটাল ডেটা এন্ট্রি ও প্রসেসিং, (ঠ) ডিজিটাল ডেটা অ্যানালিটিকস, (ড) গ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস (জিআইএস), (ঢ) আইটি সহায়তা ও সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্স সার্ভিস, (ণ) সফটওয়্যার টেস্ট ল্যাব সার্ভিস, (ত) কল সেন্টার সার্ভিস, (থ) ওভারসিজ মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশন, (দ) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সার্ভিস, (ধ) ডকুমেন্ট কনভারশন, ইমেজিং ও ডিজিটাল আর্কাইভিং, (ন) রোবোটিকস প্রসেস আউটসোর্সিং, (প) সাইবার সিকিউরিটি সার্ভিস, (ফ) ক্লাউড সার্ভিস, (ব) সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, (ভ) ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, (ম) ই-বুক পাবলিকেশন, (য) মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস ও (র) আইটি ফ্রিল্যান্সিং।
(১৫) জুলাই ১, ২০২০ থেকে ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখের মধ্যে হস্তশিল্প রপ্তানি থেকে উদ্ভূত কোনো আয়;
(১৬) যেকোনো পণ্য উৎপাদনে জড়িত ক্ষুদ্র বা মাঝারি শিল্প থেকে উদ্ভূত আয়, যার—(ক) শিল্পটি নারীর মালিকানাধীন হলে বার্ষিক টার্নওভার অনধিক ৭০ লাখ টাকা;(খ) অন্যান্য ক্ষেত্রে বার্ষিক টার্নওভার অনধিক ৫০ লাখ টাকা;
(১৭) নিম্নবর্ণিত শর্ত সাপেক্ষে ব্যাংক, বিমা বা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত ব্যক্তি কর্তৃক জিরো কুপন বন্ড থেকে উদ্ভূত কোনো আয়, যথা—(ক) বাংলাদেশ ব্যাংক বা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করে কোনো ব্যাংক, বিমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উক্ত জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করা হয়েছে;(খ) বাংলাদেশ ব্যাংক বা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করে কোনো ব্যাংক, বিমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করা হয়েছে;
(১৮) ‘চাকরি হতে আয়’ হিসেবে পরিগণিত আয়ের ১/৩ বা ৪ দশমিক ৫ লাখ টাকা, যেটি কম;
(১৯) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে গৃহীত সম্মানী বা ভাতা প্রকৃতির কোনো অর্থ বা সরকার থেকে গৃহীত কোনো কল্যাণ ভাতা;
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়