মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রমের কারণে দীর্ঘ সময় রাজধানীর বিভিন্ন প্রধান সড়কে চলাচল স্বাভাবিক ছিল না। সম্প্রতি এসব উন্নয়ন কাজের বেশিরভাগই সম্পন্ন হওয়ায় সড়কগুলো সংস্কার ও বিভিন্ন জায়গায় প্রশস্ত করা হয়েছে। তবে নতুন সংস্কার কাজের পরও সড়কগুলো মসৃণ হয়নি। বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা বলছেন, এসব সড়কে চলাচলে দুর্ভোগ হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন, দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর রোড, মিরপুর ১০ থেকে আগারগাঁও অংশ, বনানী থেকে মহাখালী রোড, তেজগাঁও রোড, কাওরানবাজার থেকে হাতিরঝিল, নতুন বাজার, আবুল হোটেল থেকে টিভি সেন্টার, দৈনিক বাংলা থেকে প্রেস ক্লাব, কাকরাইল মসজিদ থেকে নাইটিংগেল মোড়, কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়কসহ অধিকাংশ সড়ক অমসৃণ এবং কিছু কিছু অংশ এখনও বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
এসব সড়কের কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। বিশেষ করে ম্যানহোলের মুখগুলো সড়ক থেকে বেশ কয়েক ইঞ্চি নিচে থাকে। এছাড়াও কিছু সড়কে দীর্ঘদিন কার্পেটিং না করায় নুড়ি পাথর উঠে যাচ্ছে। আর কিছু সড়ক এখনও সংস্কার না হওয়ায় একেবারেই ভাঙাচোরা বেহাল অবস্থা। মেট্রোরেলের নিচে সংস্কার করা সড়কে নেই জেব্রাক্রসিংসহ অনান্য রোড মার্কিংয়ের চিহ্ন।
অভিযোগ জানিয়ে আগারগাঁওয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় থাকা বাইক চালক সজন দাস বলেন, ‘মেট্রোরেলের নিচের রাস্তা যখন ভাঙাচোরা ছিল, তখন ছিল এক হিসাব। ওইটা মাথায় রেখে চালাতাম। এখন রাস্তা ঠিক হয়েছে, চওড়া হয়েছে। এখন তো গাড়িতে গতি থাকে। এই অবস্থায় যদি রাস্তা উঁচুনিচু থাকে তাহলে চালানোটা রিস্ক। রাস্তার এক পাশ সমান, আরেকপাশ পুরোপুরি ঢালু। রাস্তার দুই অংশের আবার লেভেল ঠিক না। কম করে হলেও এক ইঞ্চি পার্থক্য আছে রাস্তার দুই অংশে। তখন দেখা যায় বাইকের চাকা স্লিপে কেটে বেশি দূরে সরে যায়। পেছন থেকে গাড়ি আসলে তখন তো এক্সিডেন্ট ঘটার শঙ্কা থাকে।’
মিরপুর রোডের শিশুমেলার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজিচালক রিপন বলেন, ‘এইদিকের রাস্তার বেশিরভাগ জায়গায় ওপরের ফিনিশিং নষ্ট হয়ে গেছে বলে আমার মনে হয়। গাড়ি চালাতে গেলে ঝাঁকি লাগে।’
এদিকে মহাখালীর বাস টার্মিনাল থেকে তেজগাঁও সড়কের অবস্থা বেহাল জানিয়ে প্রাইভেটকার চালক মো. সাইদুল বলেন, ‘এই সড়কে এমনিতেই গাড়ির চাপ থাকে সব সময়। বাস টার্মিনালের সামনে বড় বড় বাস দাঁড়িয়ে থাকে। এগুলা পাড় হয়ে যখন দ্রুত সিগন্যাল পাড় হতে যাবেন, সামনেই দেখবেন টিলার মতো রাস্তা উঁচু। উঁচু টিলার ওপর রাস্তা করছে, নাকি মাটি ফেঁপে উঁচা হয়ে গেছে জানি না।’
সড়কে উঁচু-নিচু গর্ত ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে মিরপুর-১০ গোল চত্বরে অপেক্ষমান আরেক বাইকচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মিরপুর-১৪ থেকে ১ নম্বর পর্যন্ত যে রাস্তাটা গেছে এইটা হলো মিরপুরের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা, কোনও খাদ নাই। এছাড়া মিরপুর-১২ থেকে মেট্রোরেলের নিচ দিয়ে আগারগাঁও পর্যন্ত যে রাস্তাটা গেছে সেটার যেখানে যেখানে জোড়াতালি দেওয়া দরকার সেগুলা ঠিক করা হয়েছে। এর বাইরে উঁচুনিচু অংশগুলো সমান করার কাজ কিছুই হয় নাই। ড্রেনের স্ল্যাবগুলো রাস্তার থেকে উঁচু আবার কোথাও ম্যানহোলের ঢাকনা রাস্তার চেয়ে নিচু। আবার কোথাও কোথাও খাদ। বিশেষ করে রাতে ফাঁকা রাস্তায় দ্রুত গাড়ি চালিয়ে আসার সময় হুট করে দেখি সামনে বড়, তখন ব্রেক চাপলেও বিপদ। উল্টে পড়তে হবে। আবার ওই গর্তে গাড়ি পড়লে শরীরে বড় ঝাঁকি লাগে। বাইকেরও ক্ষতি।’
রাস্তা নিয়ে বাস চালকদেরও রয়েছে অভিযোগ। কয়েকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, চালাতে সমস্যা না হলেও রাস্তার কারণে বাসের ক্ষতি হয়। এছাড়া অমসৃণ সড়কের কারণে অনান্য গাড়িচালকরাও এদিক সেদিক করে চালালে বাস চালকদের সমস্যা হয়।
শিকড় বাসের চালক মিজান বলেন, ‘এসব রাস্তায় আহামরি কোনও সমস্যা হয় না। তবে রাস্তা সমান থাকলে সব গাড়িরই একটা গতি থাকে। না হলে সামনের গাড়িলো এদিক সেদিক করে চালায়। কয়েকদিন আগে এক বাইকাকে রাস্তার উঁচু ভাঁজে স্লিপ কেটে পড়ে যেতে দেখেছি।’
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়