ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের জনজীবন। রোদ ও ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘাটতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অটোমেটিক রাইস মিলগুলোতে কমেছে চালের উৎপাদন। পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতীয় বাজেটে উন্নয়নখাতের বরাদ্দ ৮৭ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎখাতে বাজেট বাড়ানো কথা বলছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
জানা গেছে, শহরে সারা দিনে প্রায় ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। আর গ্রামে থাকছে না ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। বিশেষ করে রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘুমাতে পারছে না মানুষ। এতে স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। শিল্প উৎপাদন কমেছে। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। কমছে কর্মঘণ্টাও।
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি- স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন।
এ কারণে ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এটি জাতীয় সমস্যা। লোডশেডিংয়ের কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিল্প-কলকারখানা ও কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। বিদ্যুৎ-সংকটে অটোমেটিক রাইস মিলে চালের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দেশের বড় চালকলগুলোর অবস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তিন চার দিন ধরে উৎপাদন কম-বেশি ৪০ শতাংশ ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে উৎপাদন বিপর্যয়ের আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
মিনার অটোমেটিক রাইস মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মো. মাসুদ বলেন, প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় চাল উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন কমে অর্ধেকে নেমেছে। এছাড়া ঘন ঘন বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় মিলের মূল্যবান যন্ত্রপাতিরও ক্ষতি হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে চালের মানও খারাপ হচ্ছে। বাড়ছে উৎপাদন খরচও। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হবে।
সদর উপজেলার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন, সারা দিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই। এক সপ্তাহ ধরে শুধু রাতেই পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হচ্ছে। গরমের কারণে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না।
নাচোল উপজেলা ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শহরের চেয়ে গ্রামে আরও বেশি সমস্যা। গ্রামে কারেন্ট গেলেই মনে হয় আর আসার খবর নাই। এত গরম হচ্ছে তার মধ্যে দিন ও রাতের বেশির ভাগ সময় লোডশেডিং হচ্ছে।
শহরের পিটিআই মাস্টারপাড়ার গৃহিণী ফারিহা খান বলেন, বিদ্যুৎ যায় আর আসে। এক ঘণ্টা থাকলে আবার দেড় থেকে দুই ঘণ্টা থাকছে না। এদিকে আবার রোদ-গরম। খুব অশান্তি অনুভব করছি। বাচ্চার ঠিকমতো পড়াশোনাও হচ্ছে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার ছানোয়ার হোসেন বলেন, জেলায় প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৫৫-৭০ মেগাওয়াট। সেখানে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫-৪৫ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ–সরবরাহের ঘাটতি থাকায় জেলায় দিনে ও রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।
নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আলিউল আজিম জানান, এ বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৩৬ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ১৮-২০ মেগাওয়াট, অর্থাৎ চাহিদার বিপরীতে অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য লোডশেডিং।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়