বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচিত সহসাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন সাইমন সাদিক। গতকাল হঠাৎ সমিতির সভাপতি বরাবর চিঠি দিয়ে পদত্যাগ করেছেন ‘পোড়ামন’ অভিনেতা। সাইমন জানান, সাম্প্রতিক সময়ের কিছু অনিয়ম নিয়ে সংগঠনটি চুপ থাকায় বিষয়টি মানতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘সাফটা চুক্তিতে বিদেশি ভাষার সিনেমা আমদানি করে দেশীয় চলচ্চিত্রকে হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে।
বিতর্কিত এই পরিস্থিতিতে সমিতির কার্যকরী পরিষদের নিষ্ক্রিয়তা আমার কাছে সমর্থনযোগ্য মনে হয়নি। তাই পদত্যাগ করেছি।’
গত ১৯ জানুয়ারি মুক্তি পায় সাইমন সাদিক অভিনীত ‘শেষ বাজি’। একই দিনে মুক্তি পেয়েছে পরীমনি ও ডি এ তায়েবের ‘কাগজের বউ’।
দেশি এ দুই ছবির সঙ্গে মুক্তি পেয়েছে আমদানি করা মোশাররফ করিম অভিনীত পশ্চিমবঙ্গের ‘হুব্বা’। বিষয়টি মানতে পারেননি সাইমন। তিনি বলেন, ‘নিয়ম না মেনে দেশি দুই ছবির সঙ্গে একই দিনে বিদেশি আরেকটি ছবি মুক্তি পাওয়ায় আমাদের চলচ্চিত্রের ক্ষতি হয়েছে। আমদানি করা ছবিটি দেশের বেশির ভাগ হল পাওয়ায় দেশি ছবি দুটি হল সংকটে পড়েছে।
হতাশার বিষয়, এটা নিয়ে আমাদের সমিতি নীরব। অবাক হই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সব ক্ষেত্রে যখন স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছি, তখন চলচ্চিত্রশিল্প ক্রমাগত পরনির্ভরশীল হচ্ছে।’ তবে সাইমনের পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘আমি কয়েক দিন ঢাকায় ছিলাম না। শুটিংয়ের জন্য আউটডোর যেতে হয়েছিল।
আজ [গতকাল] বিকেলে শুনলাম সাইমন পদত্যাগ চেয়েছে।’ সাইমনের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে কাঞ্চন বলেন, ‘এটা কেমন কথা? আমাদের কমিটির মেয়াদই বা কত দিন আছে! সঠিক সময়ে নির্বাচন হলে এই কমিটি এত দিনে বিলুপ্ত হতো। জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমাদের নির্বাচন পেছাতে হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতেই সমিতির নির্বাচন। তার আগেই কমিটি বিলুপ্ত হবে। বড়জোর এক-দুই সপ্তাহ সময় আছে। এরই মধ্যে সাইমনের এমন সিদ্ধান্ত কি সংগঠনকে অবমূল্যায়ন করা হলো না?’
সাইমনের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়ে ইলিয়াস কাঞ্চন আরো বলেন, ‘কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পর সবচেয়ে গুরুত্বপর্ণ পদ সহসাধারণ সম্পাদক। সাইমন নিজে কেন অন্যান্য সংগঠনকে নিয়ে প্রতিবাদ করেনি? ১৯ সংগঠন মিলে চলচ্চিত্রের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুধু শিল্পী সমিতিকে দোষারোপ করছে কেন সাইমন? বাকি সংগঠনগুলো নিয়েও কথা বলুক। আগেও যখন ছবি আমদানি হয়েছে তখন সে চুপ ছিল, আর এখন নিজের ছবির সময় প্রতিবাদী—এটা তো ভালো দেখায় না।’
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, “সাইমনের অভিযোগ সঠিক নয়। ‘হুব্বা’ মুক্তিতে আমাদের বাধা দেওয়ার কিছু নেই। ছবিটি এসেছে সাফটা চুক্তির মাধ্যমে, আমদানি নীতিতে নয়। আর সাফটা চুক্তি হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রযোজক অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে। তার পরও যখন শুনেছি দেশি দুই ছবির সঙ্গে ‘হুব্বা’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে, আমরা ১৯ সংগঠন জরুরি বৈঠক ডেকেছিলাম। কাঞ্চন ভাই ‘হুব্বা’ মুক্তিতে বাধা দিয়েছিলেন। সেটা মানেননি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার আব্দুল আজিজ। অনেকটা পেশিশক্তির জোরে ছবিটি মুক্তি দিয়েছেন। এটা নিয়ে প্রযোজক সমিতি কিন্তু ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সমিতির সাবেক সভাপতি ও ১৯ সংগঠনের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম খসরু এরই মধ্যে আব্দুল আজিজের প্রযোজক সমিতির সদস্য পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন সর্বসম্মতিক্রমে। তাহলে সাইমন হঠাৎ পদত্যাগ করতে চাইছে কেন? এটা অন্য কারো ইশারায় নয়তো!”
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়