আফ্রিকা মহাদেশের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে দুজন হলেন মিসরের মোহাম্মদ সালাহ ও সেনেগালের সাদিও মানে। আফ্রিকার সেরা হওয়ার লড়াইয়ে দুজনের দেখা হবে ৭ ফেব্রুয়ারি ফাইনালে। আগের ৩২ আসর থেকে সর্বাধিক সাতবার শিরোপা জিতেছে মিসর। এবার সালাহদের সামনে অষ্টম শিরোপা জয়ের হাতছানি। এ আসরে মিসরের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার শিরোপা জিতেছে ক্যামেরুন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঘানা। তারা জিতেছে ৪ শিরোপা।
চলমান টুর্নামেন্ট আফ্রিকান নেশন্স কাপে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) স্বাগতিক ক্যামেরুনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সালাহর মিসর। নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ড্র হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকার পর্বে স্বাগতিকদের কাঁদিয়ে ৩-১ গোলে জয় তুলে নেয় মিসর। শুক্রবার ক্যামেরুনের মাঠে দ্বিতীয় সেমিতে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ ছিল মিসর। আফ্রিকার সেরা দুই দল শক্তিশালী চমৎকার ফুটবল উপহার দিয়েছে।
মিসরের সঙ্গে স্বাগতিক ক্যামেরুন সমানে সমানে লড়াই চালিয়েছে। তবে নিজেদের মাঠে বল দখল নিজেদের পক্ষেই বেশি রেখেছে ক্যামেরুন। মিসরের ৪৭ শতাংশ বল দখলের বিপরীতে ক্যামেরুন রেখেছে ৫৩ ভাগ। যেমন বল নিজেদের করে রেখেছে তেমনি আক্রমণেও এগিয়ে ছিল ক্যামেরুন। মিসরের বিপক্ষে স্বাগতিকরা মোট শট নিতে পেরেছে ৯টি। এর মধ্যে ৩টি ছিল লক্ষ্য বরাবর। স্বাগতিকদের ৯ শটের বিপরীতে সফরকারীরা নিতে পেরেছে ৭টি। তবে তারা লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে মাত্র ১টি।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধেও কোনো গোলের দেখা পায়নি। তবে মূল ম্যাচে গোল করার সুযোগ ক্যামেরুনই বেশি পেয়েছে। বেলজিয়ান ক্লাব গেন্টের সেন্টারব্যাক মাইকেল এনগাদুই গোল করার সুযোগ নষ্ট করেছেন দুটি। মিডফিল্ডার স্যামুয়েল গুয়েতও দ্বিতীয়ার্ধে দূরপাল্লার এক শট থেকে গোল করতে পারেননি। ১৮ মিনিটে মাইকেল এনগাদেউ-এনগাদুইয়ের হেড পোস্ট বারের কোনায় প্রতিহত হয়েছে। ভিনসেন্ট আবুবাকারের শটও একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। পেনাল্টি স্পটের কাছে ফাঁকায় বল পেলেও শট নিতে পারেননি মাইকেল।
এরপর নিজেদের ভুলেই গোল হজম করে বসার দুয়ারে চলে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। ডিফেন্ডারের দুর্বল এক ব্যাকপাসে সালাহ বল পেয়ে গিয়েছিলেন ফাঁকায়। তবে আয়াক্স গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা সে যাত্রায় রক্ষা করেন ক্যামেরুনিয়ানদের। তারপর দুঃসংবাদ নেমে আসে মিসর শিবিরে। ৯০ মিনিটে কোচ কিরোজ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে ডাগআউট ছাড়েন। কিছু পরে রেফারির সিদ্ধান্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে সহকারী কোচ গোমাও হলুদ কার্ড দেখেন। এর আগে নকআউটে আরও একটা হলুদ কার্ড দেখেছিলেন তিনি।
দুই দলের গোলের দেখা মেলেনি অতিরিক্ত সময়েও। যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে খানিকটা রক্ষণাত্মকই হয়ে পড়েছিল দুই দল। রক্ষণাত্মক হয়ে যাওয়ার পরও দুটি সুযোগ এসেছিল মিসরের পক্ষে। শততম মিনিটে বক্সের কোণা থেকে মোহামেদ সালাহর ট্রেডমার্ক শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় একটুর জন্য। ১১৭ মিনিটে রামাদান সোভির ক্রস খুঁজে পায়নি কাউকে। শেষ পর্যন্ত জয় নির্ধারণ করার জন্য ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকার পর্বে। টাইব্রেকার পর্বে নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন মিসরের গাবাস্কি। পেনাল্টি শুটআউটের শুরুটা ভালো করেছিল ক্যামেরুন। আবু বাকার গাবাস্কিকে বোকা বানিয়ে লিড এনে দেয় স্বাগতিকদের। তারপর মিসরের জিজুও গোল করে দলকে সমতায় ফেরান।
প্রথম শটে গোল করতে পারলেও স্বাগতিকদের ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায় পরবর্তী দুই শটে। ক্যামেরুনের হ্যারল্ড মুকুদি ও জেমন লিয়া সিলিকির শট আটকে দিয়ে মিসরকে ফাইনালে তোলার মহানায়ক হয়ে ওঠেন গাবাস্কি। তারপরও আশা বেঁচে ছিল ক্যামেরুনের। কিন্তু চতুর্থ শট নিতে এসে সব আশায় জল ঢেলে দিয়ে আকাশে উড়িয়ে মারেন ক্লিন্টন এন’জিয়ি। সেখানেই থেমে যায় স্বাগতিকদের শিরোপার স্বপ্ন। ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে নেয় মোহাম্মদ সালাহর মিসর।
এর আগে প্রথম সেমিতে বুরকিনা ফাসোকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে রেখেছে সাদিয়া মানের সেনেগাল। কাকতালীয়ভাবে মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিয়া মানে দুজনই একই ক্লাবে খেলেন। ফাইনালে দুই সতীর্থ লড়বে নিজের দেশের হয়ে। তাদের কেউই দেশের হয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো শিরোপা নিতে পারেননি। আফকনের এবারের আসরে সেই দুঃখ মিটবে যে কোনো একজনের। আফ্রিকার সেরা হওয়ার তালিকায় এর আগে মিসর সাতবার চ্যাম্পিয়ন হলেও কোনো স্কোয়াডেই ছিলেন না মোহাম্মদ সালাহ।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়