ম্যানচেস্টার সিটিকে শনিবার সেমিফাইনালে ৩-২ গোলে হারিয়ে দশ বছর পর এফএ কাপের ফাইনালে উঠল লিভারপুল। এর আগে ২০১২ সালে সর্বশেষ ফাইনালে খেলেছিল লিভারপুল।
ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা আজ রবিবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ক্রিস্টাল প্যালেস ও চেলসির মধ্যে বিজয়ী দলের বিপক্ষে ১৪ মে ওয়েম্বলিতে ফাইনালে মোকাবেলা করবে। ক্লপের অধীনে ক্লাব ফুটবলের সম্ভাব্য অন্য সব শিরোপা জেতা লিভারপুল এফএ কাপের ফাইনাল খেলবে এই প্রথম। এর আগে এই মৌসুমেই প্রথমবার লিগ কাপ জিতেছে ক্লপের দল, আছে প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপার লড়াইয়েও।
এফএ কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং লিগ শিরোপা লিভারপুল জিতলে রচনা করবে অবিস্মরণীয় এক ইতিহাস। এক মৌসুমে চার শিরোপা জিতে কোয়াড্রপল জয়ের যে কীর্তি এর আগে কোনো ইংলিশ ক্লাব করে দেখাতে পারেনি, তা করার হাতছানি সাদিও মানেদের সামনে। ইংলিশ ফুটবলে লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচ মানে উত্তেজনায় ভরপুর এক ম্যাচ। যা না দেখলে ফুটবলের সুন্দর্য উপভোগ থেকে বঞ্চিত হন সমর্থকরা।
গতকাল লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে এফএ কাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলা লিভারপুলের সামনে কোণঠাসা ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। গোলরক্ষকের ভুলের খেসারতে প্রথমার্ধে তিন গোলে পিছিয়ে পড়ে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। বিরতির প্রাণপণ চেষ্টা করেও সফল হয়নি তারা।
প্রথমার্ধেই তিন গোল করে শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে এক পা দিয়ে ফেলে অ্যানফিল্ডের দলটি। জোড়া গোল করেন সাদিও মানে, অপরটি করেন ইব্রাহিমা কোনাতে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু আর শেষে ব্যবধান কমান যথাক্রমে জ্যাক গ্রিলিশ ও বের্নার্দো সিলভা। চলতি মৌসুমে সিটি ছুটছিল ট্রেবল জয়ের লক্ষ্যে। সেই আশায় গতকাল জল ঢেলে দিল লিভারপুল।
এক সপ্তাহ আগে প্রিমিয়ার লিগে রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে লিভারপুলের সঙ্গে ২-২ ড্র করেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। শনিবার ওয়েম্বলিতে ১৭ মিনিটের মধ্যেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় লিভারপুল। নবম মিনিটেই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে গার্দিওলার শিষ্যরা । অ্যান্ডি রবার্টসনের কর্নারে হেড করে ইব্রাহিম কোনাতে লাল-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেন ওয়েম্বলির গ্যালারিতে। উড়ে আসা বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে সিটির খেলোয়াড়েরা মার খেয়ে যান সাড়ে ছয় ফুটের কোনাতের উচ্চতার কাছে। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলে কর্নার থেকে লিভারপুলের এটা ১৯ তম গোল, প্রিমিয়ার লিগের যে কোনো দলের চেয়ে বেশি। এই ১৯ গোলের সর্বশেষ তিনটাই আবার কোনাতের, তার সর্বশেষ তিন ম্যাচে! দিনকে দিন কর্নার থেকে আসা বলে গোল করার বিশেষজ্ঞই বুঝি হয়ে উঠছেন ফরাসি সেন্টারব্যাক।
পরের গোলটার জন্য দায়ী সিটির গোলরক্ষক জ্যাক স্টিফেন। জন স্টোনস প্রায় মাঝ মাঠ থেকে ব্যাক পাস করেছিলেন একা দাঁড়িয়ে থাকা স্টিফেনকে। বল পায়ে নিয়ে কাকে পাস দেবেন এটা যখন ভাবছেন, তখনই দেখলেন দূর থেকে সাদিও মানে দৌড়ে আসছেন। এত সময় পেয়েছেন, চাইলে তখনো কারও দিকে বল বাড়িয়ে ঝামেলামুক্ত হতে পারতেন। কিন্তু সেটা তো করতে পারেনইনি, উল্টো বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান, আর ছুটে আসা মানেও সেই বল কেড়ে নিয়ে পাঠিয়ে দিলেন জালে। লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে গত সপ্তাহে এ রকম একটা ভুল করতে যাচ্ছিলেন সিটির এক নম্বর গোলরক্ষক এদেরসন। সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও গতকাল স্টিফেন বাঁচতে পারেননি। ২০১৪ সালের পর এই প্রথম ওয়েম্বলিতে এফএ কাপের কোনো ম্যাচে মাত্র ১৭ মিনিটে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল কোনো দল।
সিটির ভোগান্তি অবশ্য সেখানেই শেষ হয়নি। বিরতির ঠিক আগে আগে মোহাম্মদ সালাহর সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে থিয়াগো আলকান্তারা বল বাড়ান সাদিও মানের জন্য। ডান পায়ের ভলিতে মানে যে গোলটি করেন তা অনেক দিন সমর্থকদের চোে ভাসবে। ১৯৯৬ সালে রবি ফাওলারের পর এই প্রথম লিভারপুলের কোনো খেলোয়াড় এফএ কাপের সেমিফাইনালে জোড়া গোল করলেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সিটির বিপক্ষে ৯ গোল করলেন সাদিও মানে। ২০১৪ সালে তিনি প্রিমিয়ার লিগে যাওয়ার পর আর কোনো খেলোয়াড় সিটিজেনদের বিপক্ষে তার চেয়ে বেশি গোল করেননি।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়