অবশেষে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা ও ধোঁয়াশা কেটেছে। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে নেয়া বহুল প্রশংসিত এ প্রকল্পের মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালককে একটি চিঠি দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আনিসুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক নির্দেশনা অনুযায়ী বিস্কুটসহ শুকনা খাবার দিয়ে স্কুল ফিডিং প্রকল্প প্রণয়ন করতে হবে। সেজন্য বর্তমান প্রকল্পের মেয়াদ ছয় মাস বৃদ্ধির ব্যবস্থা করার কথা বলা হয় চিঠিতে।
তবে এক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় না বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া নতুন প্রকল্প প্রস্তাব এক মাসের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
জানা যায়, শিক্ষার্থী ভর্তি ও শ্রেণীকক্ষে উপস্থিতির হার বাড়ানো এবং ঝরে পড়া রোধ—প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে এমন বেশকিছু লক্ষ্য অর্জনে ২০১০ সালে দেশে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়। এরপর দফায় দফায় সংশোধনী এনে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ায় সরকার। পূর্ববর্তী ঘোষণা অনুযায়ী গত ডিসেম্বরের মধ্যেই শিশুদের খাবার প্রদানের জন্য নতুন আরেকটি প্রকল্প প্রণয়ন করার কথা। যদিও নতুন প্রকল্প প্রণয়ন না করা এবং আগের প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়ানোয় স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের বিষয়টি বেশ অনিশ্চয়তায় পড়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, স্কুল ফিডিং প্রকল্পটি চর, হাওর ও পার্বত্য জেলার মতো সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলের শিশুদের জন্য আশীর্বাদ। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকানো, ভর্তি ও উপস্থিতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে এ কর্মসূচি অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। দুপুরের এ খাবার শিশুদের পুষ্টির বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। পাশাপাশি নতুন প্রকল্প প্রণয়নের কাজটিও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
বিস্কুট বিতরণের সফলতা থেকে সারা দেশের প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার দিতে প্রণয়ন করা হয় ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতিমালা-২০১৯’। নীতিমালা অনুযায়ী ‘প্রাইমারি স্কুল মিল প্রকল্পটি গত ১ জুন একনেকে উত্থাপন করা হয়। শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার খিচুড়ি দেয়ার প্রস্তাব করায় প্রধানমন্ত্রী ডিপিপি সংশোধন করে কার্যকর ও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এর আগে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদেশে সফর রাখায় একনেক থেকে প্রকল্পটি ফেরত পাঠানো হয়।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার কিছু দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুলের শিশুদের গুঁড়ো দুধ দেয়া শুরু করে। ১৯৯৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্কুলের জন্য খাদ্য কর্মসূচি চালু করা হয়। এ কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীদের চাল, ডাল ও নগদ অর্থ দেয়া হতো। পরে ২০০০ সালের পর থেকে এসবের বদলে ভিটামিনসমৃদ্ধ বিস্কুট দেয়া হতে থাকে। ২০০২ সালে যশোরে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর জন্য জরুরি সাহায্য হিসেবে বৃহৎ পরিসরে স্কুলে খাওয়ানো কর্মসূচি চালু করা হয়। ২০১০ সালে ডব্লিউএফপির সহায়তায় প্রোগ্রামটি জাতীয় পর্যায়ে শুরু হয়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়