সয়াবিন তেল ভ্যাট প্রত্যাহারের সুফল এখনও মেলেনি

সয়াবিন তেল ব্যবসায়ীদের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের খবরে মুহূর্তেই বাজারে দাম বেড়ে গিয়েছিল। তবে ভ্যাট প্রত্যাহার ঘোষণায় বাজারে সে রকম প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। ফলে সয়াবিন তেলে সরকারের ২০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের সুফল এখন পর্যন্ত ভোক্তারা পাননি। মাঝে কয়েকদিন বোতলজাত তেলের গায়ে উল্লেখ থাকা মূল্যের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি করা হলেও এখন গায়ের দামেই বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সংকট এখনও কাটেনি। হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে পাওয়া গেলেও ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করছেন কেজি হিসেবে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন ১৮০ এবং পাম তেল ১৬৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও বাজারে দাম কমে আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে এবং ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
 
মনিপুরি পাড়া থেকে গতকাল শনিবার কারওয়ান বাজারে সদাই করতে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী সোহাগ হোসেন। সমকালকে তিনি বলেন, খবরে দেখলাম ভ্যাট কমলো, তেলের দাম কমলো। কিন্তু বাস্তবে তো দেখছি না। তবে সান্ত্বতনা হচ্ছে, কয়েকদিন আগে পাঁচ লিটারের বোতলে গায়ের রেটের চেয়েও বেশি দরে ৮৫০ টাকায় কিনেছি। আজ (গতকাল) কিনলাম গায়ের রেটে, ৭৯৫ টাকায়। তাহলে ভ্যাট কমিয়ে কী লাভ হলো?'

সর্বশেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারি খোলা সয়াবিনের লিটার ১৪৩, পাম তেল ১৩৩, বোতলজাত এক লিটার ১৬৮ এবং পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৭৯৫ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এরপর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আবারও প্রতি লিটার তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবে বাজারে হু হু করে বেড়ে যায় দাম। এক লাফে খোলা সয়াবিনের কেজি ১৮০ এবং পাম তেলের দাম ১৬৫ টাকায় পৌঁছে। আর এক লিটারের বোতলের গায়ের দাম ১৬৮ টাকা হলেও তা ১৮০ এবং ৭৯৫ টাকার পাঁচ লিটারের বোতল ৮৫০ টাকায় বিক্রি করেন .ব্যবসায়ীরা। শুধু বেশি দামই নেননি বিক্রেতারা, এক পর্যায়ে বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় তেল।
এতে তৈরি হয় এক ধরনের কৃত্রিম সংকট। তবে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, গত ৭ মার্চ পর্যন্ত শীর্ষ ছয়টি কোম্পানির কাছে এক লাখ ৯৫ হাজার ৬৩৬ টন তেল মজুত ছিল। এর মধ্যে পরিশোধিত ভোজ্যতেল মজুত ছিল ১৯ হাজার ৭৩৭ টন এবং অপরিশোধিত ভোজ্যতেল মজুত রয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার ৮৯৯ টন। আর এলসি খোলা হয়েছে মোট এক লাখ ৮৩ হাজার ৮০০ টনের। এরপরও এক ধরনের সংকট দেখা গেছে বাজারে।

সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের পর বেশি দামে পাইকারদের কাছ থেকে যে খোলা সয়াবিন কেনা হয়েছে সেগুলোই এখন কিছুটা বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন করে কম দামের তেল এখনও সরবরাহ করেনি কোম্পানিগুলো।

মগবাজারের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী মো. হাবিব বলেন, আগে কেনা বেশি দরের খোলা সয়াবিন রয়ে গেছে। ফলে একটু বেশি দরেই বেচতে হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে পাকা রসিদের দাম অনুযায়ী বিক্রি করা হবে।

ভোজ্যতেলের আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। ভ্যাটের আওতায় যেসব তেল ইতোমধ্যে আমদানি করা হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে কীভাবে ভ্যাট সমন্বয় করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। এ কারণে বাজারে পুরোপুরি প্রভাব পড়েনি।

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসাইন বাবলু সমকালকে বলেন, ভ্যাট যেহেতু প্রত্যাহার হচ্ছে, অবশ্যই দাম কমবে। আশা করি দু-একদিনের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করবে। তখন মিল মালিকরাও দাম কমাবে। পাকা রসিদের বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পাকা রসিদ ছাড়াই সয়াবিন তেল বেচাকেনা হচ্ছে। কিন্তু মিল মালিকরা এখনও তা দেওয়া শুরু করেনি। মিল মালিকরা দিলে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়েও পাকা রসিদ কার্যকর হয়ে যাবে। এ ছাড়া তেলের কিছুটা সংকট এখনও রয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে। দামের ক্ষেত্রেও কিছুটা প্রভাব পড়বে।

পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা সমকালকে বলেন, শুধু তেল নয়, রমজানের আগে চিনি, ছোলা ও পেঁয়াজসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যগুলোর কোনটার মিলগেট, পাইকারি এবং খুচরায় কত হবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত সরকারের। বড় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে দরদাম বেঁধে দিলে বাজার দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে ইতোমধ্যে পাইকারি পর্যায়ে তেলের দাম কমতে শুরু করছে। একটু ধৈর্য ধরেন খুচরা পর্যায়েও কমে যাবে।
এই বিভাগের আরও খবর
রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

যুগান্তর
এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে: ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান

এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে: ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান

প্রথমআলো
ব্যাংকের ওপর আস্থা কমায় টাকা না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে মানুষ

ব্যাংকের ওপর আস্থা কমায় টাকা না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে মানুষ

কালের কণ্ঠ
বিদ্যুৎ নিয়ে আদানির সাথে হওয়া চুক্তি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

বিদ্যুৎ নিয়ে আদানির সাথে হওয়া চুক্তি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

নয়া দিগন্ত
প্রাইম ব্যাংক ও সেবা ডট এক্সওয়াইজেডের মধ্যে চুক্তি সই

প্রাইম ব্যাংক ও সেবা ডট এক্সওয়াইজেডের মধ্যে চুক্তি সই

বাংলা ট্রিবিউন
ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু

ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু

বাংলা ট্রিবিউন
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া