দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চা শ্রমিকরা। প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরোধের পর মহাসড়ক ছেড়ে বাগানে ফিরে গেছেন শ্রমিকরা। এসময় মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করলেও অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন লস্করপুর ভ্যালির সভাপতি রবিন্দ্র গৌড়। বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি। এসময় তিনি দাবি মেনে নেয়ার জন্য দুদিনের আল্টিমেটাম দেন। বলেন, আগামী ২৩শে আগস্ট শ্রম মন্ত্রণালয়ে মিটিং রয়েছেন। সেই মিটিংয়ে আমাদের দাবি না মানলে ফের আমরা মহাসড়ক অবরোধ করবো।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকায় জড়ো হন তেলিয়াপাড়া, সুরমা, নোয়াপাড়া, জগদীশপুর, লস্করপুর ভ্যালিসহ ২৩টি বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক। এসময় তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
মহাসড়কের উভয় পাশে আটকা পড়ে হাজার হাজার যানবাহন। প্রায় ৪০ কিলোমিটারজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। যানজটে আটকা পড়ে তীব্র গরমে অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। বেলা আড়াইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ চলছিল।
লস্করপুর ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ বাড়াইক বলেন, আমাদের লস্করপুর ভ্যালির ২৩টি চা-বাগানের বাগান পঞ্চায়েত নিয়ে আমরা বসেছিলাম। তারা সবাই ১৪৫ টাকা মজুরিতে ধর্মঘট প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানান। মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকেরা ১৪৫ টাকা মজুরি মানছেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলে দিতে চাই, যদি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে থাকে তাহলে আমরাও স্বাধীন হয়ে বাঁচতে চাই। আমাদের কেন মানসিকভাবে নির্যাতন করছেন?’
তিনি আরও বলেন, 'করোনাকালে যখন সবকিছু বন্ধ ছিল, তখনো আমাদের শ্রমিকরা করোনার ভয় কাটিয়ে কাজ করে গেছেন। আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের ২৩টি চা বাগানে কাজ বন্ধ থাকবে। দাবি আদায়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা আমরা প্রত্যাহার করলাম। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, সারাদেশে ধর্মঘট চলবে।
এদিকে একই দাবিতে সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে চা শ্রমিকরা। বেলা ১১টা থেকে সিলেট ভ্যালির চা-শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। এতে উভয়পাশে হাজারো যানবাহন আটকা পড়ে। বেলা ১টার দিকে আন্দোলনস্থলে হাজির হন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান। মজুরি বৃদ্ধির দাবি আদায়ে আলোচনার জন্য একদিনের সময় চান তিনি। শফিকুর রহমানের আশ্বাসে সিলেট বিমানবন্দর সড়ক থেকে সরে আসে শ্রমিকরা। তবে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
উল্লেখ্য, শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরে ২০শে আগস্ট বিকেলে এক বৈঠক থেকে চা-শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ১৪৫ টাকার প্রস্তাবকে চা-শ্রমিক সংঘ প্রত্যাখ্যান করেছে। ২১শে আগস্ট গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক রাজদেও কৈরী ও যুগ্ম-আহবায়ক শ্যামল অলমিক বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এই সময়ে দৈনিক ১৪৫ টাকা মজুরির প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৯ই আগস্ট থেকে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে দেশের ১৬৭ টি চা-বাগানের লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মবিরতি চালিয়ে আসছিলেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির বাজারে একজন চা-শ্রমিক সর্বোচ্চ দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি পান।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়